চাঁদপুরের তিনটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পড়ে আছে চারটি অ্যাম্বুলেন্স। চালক না থাকায় কয়েক বছর ধরে জরুরি সেবা পেতে বিড়ম্বনায় পড়ছেন রোগীরা।

জেলার হাজীগঞ্জ, কচুয়া ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে এ ৪টি অ্যাম্বুলেন্স। যার একেকটার দাম প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও নেই চালক। এতে করে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও গুরুতর রোগীরা জরুরি সেবা পেতে পড়ছেন বিড়ম্বনায়। নির্ভর করতে হচ্ছে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সের ওপর।
জেলা সদর হাসপাতালের পরই সবচেয়ে বেশি রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে ছুটে যান হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ জন রোগীকে অন্যত্র রেফার করতে হচ্ছে। সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালক থাকলে দ্রুত সেবা ও খরচে সাশ্রয় পাবেন রোগীরা।
প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সের কয়েকজন ড্রাইভার জানায়, সরকারি ড্রাইভার নাই, আমরা দুই থেকে তিনজন আছি। আমরা ভাড়া ধরার জন্য এখানে থাকি। সড়ক দুর্ঘটনার রোগী গুলো আসলেই অ্যাম্বুলেন্সের ডাক পড়ে। তখন সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকে, ওটার যদি ড্রাইভার উপস্থিতি থাকে তা হলে সে নিয়ে যায়। তা না হলে রোগীগুলোকে আমাদের বহন করতে হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানায়, আমাদের ইমারজেন্সি হিসেব মতে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ জন রোগী অন্যত্র রেফার করতে হয়। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীগুলা অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভারের অভাবে সেবা পাচ্ছে না। অ্যাম্বুলেন্স আছে আমাদের, কিন্তু ড্রাইভার না থাকাতে রোগীদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আহমেদ তানভীর হাসান বলেন, হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভারের সংকট রয়েছে। এই ব্যাপারে বারংবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছি। আশা করি নুতন করে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দেবে।
জেলার তিনটি হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স চালকের সংকট নিরসনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানোর কথা জানান চাঁদপুরের সিভিল সার্জেন ডা. মোহাম্মদ নুর আলম দীন।
তিনি বলেন, চাঁদপুরে তিনটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স আছে, কিন্তু চালক নাই। এখন নতুন করে চালক আসলে নিয়োগ নেয়া হচ্ছে না। ঊর্ধ্বতন কতৃপর্ক্ষকে জানিয়েছি, অন্য কোনো উপজেলায় অ্যাম্বুলেন্স নেই, চালক আছে। যদি ওই ধরনের তিনজন চালক পাওয়া যায়, তাহলে এই সমস্যা সমাধান হচ্ছে। তবে রেগুলার বেসিসে ড্রাইভার আনার জন্য একটি প্রস্তাবনা বিভাগীয় কার্যালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠিয়েছি।
হাজীগঞ্জে একটি, মতলব দক্ষিণে একটি ও কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। দ্রুত চালক নিয়োগ দেয়া না হলে অকেজো ও যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।