বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চাঁদপুরে ১২ জনের শাহাদাত বরণকারীদের পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে জামায়াতে ইসলামী।
বুধবার (৬ নভেম্বর) সকালে রসুইঘর কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চাঁদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটি এম মাসুম। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অনেক ত্যাগ ও কোরবানির মাধ্যমে আমরা দ্বিতীয়বারের মতো বিজয় অর্জন করেছি। তাই এ দেশে স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও বাকশালীদের স্থান হবে না। কোন অপরাধী, জুলুমবাজ, টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের অপতৎপরতা সংগ্রামী ছাত্র-জনতা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। নতুন করে এদেশে স্বৈরাচারী, বিভাজন ও প্রতিহিংসার রাজনীতি কেউ শুরু করলে তাদেরও শেখ হাসিনার ভাগ্যবরণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা সাম্প্রতিক আন্দোলনে স্বজন হারিয়েছেন, আমরা স্বজন ফিরিয়ে দিতে পারব না; পারব না স্বামী হারানো বিধবাদের স্বামী ফিরিয়ে দিতে। তবে আমরা সব সময় পাশে থাকার চেষ্টা করব। ছাত্ররা রাজপথে তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন জাস্টিস তথা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু জাস্টিস প্রতিষ্ঠার অদ্বিতীয় মাধ্যম হচ্ছে কোরআন-সুন্নাহর যথাযথ অনুসরণ। এ জন্য বাস্তব জীবনে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।
এটি এম মাসুম বলেন, দেশে ইসলামী আদর্শ বাস্তবায়ন করা গেলে এ দেশে জাস্টিস প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে দলমত নির্বিশেষে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আগস্ট বিপ্লবের শহীদরা জাতীয় বীর। দেশ ও জাতির জন্য তাদের এই আত্মত্যাগের কথা কোনভাবেই মুছে ফেলা যাবে না। তাই রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের জন্য যথাযথ সম্মানের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে তাদের অবদান ও বীরত্বগাঁথা। দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার জন্য এর কোন বিকল্প নেই। তাদের পরিবারকেও করতে হবে যথাযথা মূল্যায়ন। সকল ক্ষেত্রেই তাদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাহলে তারা আগামী দিনে দেশ ও জাতির জন্য যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবে।
চাঁদপুর জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহিম পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী অ্যাড. মাসুদুর ইসলাম বুলবুলের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামীর কুমিল্লা অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভুইয়া, চাঁদপুর জেলা আমীর’ (নির্বাচিত) মাওলানা বিল্লাল হোসাইন মিয়াজী।
আরও বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড মো. শাহজাহান মিয়া, অধ্যাপক আবুল হোসাইন, শহর আমীর অ্যাড শাহজাহান খান, সদর আমীর নাছির উদ্দিন, ইসলামী ছাত্র শিবিরের শহর সভাপতি ওমর ফারুক, জেলা সভাপতি মোহারম আলী।
প্রধান অতিথি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং পঙ্গুত্ববরণকারী আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। পরে তিনি ১২ জন শাহাদাত বরণকারীদের পরিবারের প্রত্যেকের হাতে নগদ দুই লক্ষ টাকা করে মোট ২৪ লক্ষ টাকা নগদ অর্থ তুলে দেন।