১৯৭২ সালের তৎকালীন সরকারের কাছ থেকে পাওয়া জাপানি মডেলের সাইকেলটি আজো ব্যবহার করছেন টিউবওয়েল মিস্ত্রী জাহাঙ্গীর হোসেন। বাবার মৃত্যুর পর এই সাইকেল দিয়ে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের টিউবওয়েল মেরামত করতো। বাবার স্মৃতি টুকু ধরে রাখতে প্রতিনিয়ত তিনি আজো এই সাইকেলটি ব্যবহার করছেন।
সাইকেল চালিয়ে বিভিন্ন এলাকায় টিউবওয়েল মেরামত করে যে টাকা উপার্জন হয় তাতে চলে তার সংসার। সংসারে স্ত্রী, ১ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে তার। বলছি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার পালাখাল গ্রামের প্রধানীয়া বাড়ির মৃত আব্দুর রবের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেনের কথা।
জানা যায়, জাহাঙ্গীর আলমের বাবা ছিলেন দক্ষ টিউবওয়েল মিস্ত্রী। তখনকার সময়ে তৎকালীন সরকারি চাকরি করার সুবাদে সরকার তাকে জাপানি মডেলের একটি সাইকেল উপহার দেন। পরে কয়েক বছর ব্যবহারের পর তার মৃত্যুতে ছেলে জাহাঙ্গীর আলম দীর্ঘ অনেক বছর ধরে এ সাইকেলটি ব্যবহার করছেন। সাইকেলের টায়ার, টিউব ও স্কু পরিবর্তন ছাড়া তেমন কিছু কাজ করতে হয়নি তার।
এখনো সাইকেলের রিং গুলো মরিচা পড়েনি। একমাত্র বাহন হিসেবে তিনি প্রতিনিয়িত এভাবে গ্রামান্তরে ছুটে চলেন জীবিকার তাগিদে। সংসারের উপার্জনক্রম একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে এই বাহনটি নিয়ে ছুটে চলেন তিনি। বয়স ৬০ পেরিয়ে গেলেও এখনো সাইকেল চালিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়ান সে। একজন ভালো মিস্ত্রি হওয়ায় এলাকায় তার সুনাম রয়েছে। তার ব্যবহৃত সাইকেলটি বর্তমানে বয়স হয়েছে ৫২ বছর।
টিউবওয়লে মিস্ত্রি জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাবার মৃত্যুর পর আমি এই সাইকেলটি ব্যবহার করতেছি। সাইকেলটি আজো কোনো ধরনের নষ্ট বা অকোজা হয়নি। বাবার স্মৃতি ধরে আজো এখনো বেচেঁ আছি। এই সাইকেলটি দিয়ে আমি মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিউবওয়েল মেরামতের কাজ করি। এতে যে টাকা আয়, তাতেই চলে আমার সংসার।
স্থানীয় সেঙ্গুয়া গ্রামের অধিবাসী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি ছোট বেলা থেকে দেখছি, জাহাঙ্গীর হোসেন এভাবে সাইকের চালিয়ে মানুষের বাড়ি গিয়ে টিউবওয়েল মেরামত করে আসছে। তিনি একজন সহজ-সরল ও সৎ মানুষ। বর্তমান যুগে এমন মানুষ কম দেখা যায়। এদিকে টিউবওয়েল মিস্ত্রি জাহাঙ্গীর হোসেনকে সরকারি-বেসরকারি ভাবে স্থায়ী স্বচ্ছল করতে কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন তার পরিবার।