ঢাকা ১০:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

থেমে গেছে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হাজীগঞ্জের শিশু আজিজের কোলাহল

মাত্র চার বছর বয়সি ফুটফুটে শিশু মো. আব্দুল আজিজ। একসময় অন্য শিশুদের মতো সেও ছিল প্রাণোচঞ্চল, হাসিখুশি। খেলাধুলা আর হই-হুল্লোড়ে ঘর-বাড়ি মাতিয়ে রাখতো। কিন্তু এখন সে দুরারোগ্য মরনব্যাধি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। এখনো দুনিয়ার কিছুই বুঝার বয়স হয়নি তার। বেঁচে থাকা কিংবা মরে যাওয়ার স্বাদও বুঝে না শিশুটি। অথচ এ বয়সেই তাকে প্রতিনিয়ত সুস্থতার জন্য সংগ্রাম চালাতে হচ্ছে।

Model Hospital

শিশু আব্দুল আজিজ চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের সেন্দ্রা গ্রামের বড় আইডগা বাড়ির শ্রমিক মো. আবুল হোসেনের ছোট ছেলে। শিশুটি পরিবারের ছোট সন্তান। যে বয়সে পুরো পরিবারকে মাতিয়ে রাখার কথা, আর সে বয়সেই তার ছোট্ট কচি শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণব্যাধি ক্যান্সার। সুস্থতার জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু তার বাবা-মায়ের দারিদ্রতা চিকিৎসার জন্য অন্তরায় (বাঁধা) হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শিশুটির বাবা আবুল হোসেন জানান, ছয়মাস পূর্বে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে আব্দুল আজিজ। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয় এবং উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করিয়েও সুস্থ হয়নি শিশুটি। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে ঢাকা নেওয়া হয়। পরামর্শ অনুযায়ী ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে ডাক্তার দেখানো হয়। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আব্দুল আজিজের ব্লাড ক্যান্সার শনাক্ত হয়।

তিনি বলেন, ব্লাড ক্যান্সার শনাক্তের পর থেকে আমাদের সাধ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত অনেক টাকা খরচ করেছি। কিন্তু সুস্থ হয়নি আব্দুল আজিজ। তার চিকিৎসার জন্য কয়েক লাখ টাকার দরকার। কিন্তু কোথায় থেকে এত টাকা জোগাড় করব, তাই ভেবে উঠতে পারছি না। আমরা গরিব মানুষ। আমি কৃষি কাজ করে এবং বদলা দিয়ে (শ্রমিকের কাজ করে) সংসার চালাই। ছেলের চিকিৎসায় এতো টাকা জোগাড় করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

শিশুটির এক মামা জানান, থেমে গেছে আজিজের কোলাহল। নিস্তব্ধ হতে চলছে জীবন প্রদীপ। এতে নির্বাক হয়ে পড়েছেন বাবা-মা। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ছেলের বাঁচার আকুতি নিয়ে প্রতিনিয়ত কাঁদছেন শিশুটির মা। তিনি বলেন, সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে হয়তো বেঁচে যাবে, না হয় অকালে ঝরে পড়বে শিশুটির জীবন। চিকিৎসায় সহযোগিতা করতে চাইলে শিশুটির বাবার মোবাইল নম্বরে ০১৬৬০-১৭০৮৭৯ যোগাযোগ করতে পারেন।

এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ক্যান্সারে আক্রান্তদের সরকারিভাবে এককালীন ৫০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। শিশুটির পরিবার যদি প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন, তাহলে ওই অনুদানের জন্য ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও আমরা হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যক্রম ও রোগি কল্যাণ সমিতি থেকে সহযোগিতা প্রদানের চেষ্টা করবো।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে ১৫০ দিনে কোরআনে হাফেজ হলেন ফাহিম

থেমে গেছে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হাজীগঞ্জের শিশু আজিজের কোলাহল

আপডেট সময় : ০৮:১২:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

মাত্র চার বছর বয়সি ফুটফুটে শিশু মো. আব্দুল আজিজ। একসময় অন্য শিশুদের মতো সেও ছিল প্রাণোচঞ্চল, হাসিখুশি। খেলাধুলা আর হই-হুল্লোড়ে ঘর-বাড়ি মাতিয়ে রাখতো। কিন্তু এখন সে দুরারোগ্য মরনব্যাধি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। এখনো দুনিয়ার কিছুই বুঝার বয়স হয়নি তার। বেঁচে থাকা কিংবা মরে যাওয়ার স্বাদও বুঝে না শিশুটি। অথচ এ বয়সেই তাকে প্রতিনিয়ত সুস্থতার জন্য সংগ্রাম চালাতে হচ্ছে।

Model Hospital

শিশু আব্দুল আজিজ চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের সেন্দ্রা গ্রামের বড় আইডগা বাড়ির শ্রমিক মো. আবুল হোসেনের ছোট ছেলে। শিশুটি পরিবারের ছোট সন্তান। যে বয়সে পুরো পরিবারকে মাতিয়ে রাখার কথা, আর সে বয়সেই তার ছোট্ট কচি শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণব্যাধি ক্যান্সার। সুস্থতার জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু তার বাবা-মায়ের দারিদ্রতা চিকিৎসার জন্য অন্তরায় (বাঁধা) হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শিশুটির বাবা আবুল হোসেন জানান, ছয়মাস পূর্বে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে আব্দুল আজিজ। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয় এবং উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করিয়েও সুস্থ হয়নি শিশুটি। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে ঢাকা নেওয়া হয়। পরামর্শ অনুযায়ী ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে ডাক্তার দেখানো হয়। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আব্দুল আজিজের ব্লাড ক্যান্সার শনাক্ত হয়।

তিনি বলেন, ব্লাড ক্যান্সার শনাক্তের পর থেকে আমাদের সাধ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত অনেক টাকা খরচ করেছি। কিন্তু সুস্থ হয়নি আব্দুল আজিজ। তার চিকিৎসার জন্য কয়েক লাখ টাকার দরকার। কিন্তু কোথায় থেকে এত টাকা জোগাড় করব, তাই ভেবে উঠতে পারছি না। আমরা গরিব মানুষ। আমি কৃষি কাজ করে এবং বদলা দিয়ে (শ্রমিকের কাজ করে) সংসার চালাই। ছেলের চিকিৎসায় এতো টাকা জোগাড় করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

শিশুটির এক মামা জানান, থেমে গেছে আজিজের কোলাহল। নিস্তব্ধ হতে চলছে জীবন প্রদীপ। এতে নির্বাক হয়ে পড়েছেন বাবা-মা। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ছেলের বাঁচার আকুতি নিয়ে প্রতিনিয়ত কাঁদছেন শিশুটির মা। তিনি বলেন, সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে হয়তো বেঁচে যাবে, না হয় অকালে ঝরে পড়বে শিশুটির জীবন। চিকিৎসায় সহযোগিতা করতে চাইলে শিশুটির বাবার মোবাইল নম্বরে ০১৬৬০-১৭০৮৭৯ যোগাযোগ করতে পারেন।

এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ক্যান্সারে আক্রান্তদের সরকারিভাবে এককালীন ৫০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। শিশুটির পরিবার যদি প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন, তাহলে ওই অনুদানের জন্য ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও আমরা হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যক্রম ও রোগি কল্যাণ সমিতি থেকে সহযোগিতা প্রদানের চেষ্টা করবো।