ঢাকা ০৯:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মতলবে জনপ্রিয় বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক কেন খুন হলেন জানালেন সন্তানেরা

মনিরুল ইসলাম মনির : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সলিমুল্লাহ লাভলু (৫০) ১ নভেম্বর দিনগত রাতে খুন হয়েছেন। বুধবার (০২ নভেম্বর) সকালে ফতেহপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মান্দাতলী গ্রামের ইটের রাস্তার পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লাভলু মান্দারতলী গ্রামের আমির হোসেন মাস্টারের ছেলে। তিনি সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন। বুধবার সকাল ভোরে ভ্যান চালক জাহাঙ্গীর আলম মান্দারতলী গ্রামের ভিতর দিয়ে হেরিংবোন্ড রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় লাশ দেখে ডাক চিৎকার দেন।

Model Hospital

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন জানান, লাশ দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। পরে এসে সুরুতহাল রিপোর্ট তৈরি ও মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে পুরো সত্যতা জানা যাবে।

মৃত্যুর পর নিহতের স্ত্রী শাহজাদী আক্তার নিন্নি’সহ আত্মীয় স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এমন নির্মম মত্যুর কারণে নিহতের মেয়ে একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া লুবনা আক্তার ও ৯ম শ্রেণির ছাত্র লাবিব এতিম হয়ে গেল। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানায় নিহতের পরিবার।

তার মৃত্যুর খবর পেয়ে বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দ ও এলাকার হাজার হাজার জনগণ দেখতে আসেন। তিনি ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিগত দিন যাবৎ। তার অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে।

এদিকে নিহতের ছেলে লাবিব জানায়, ঘটনার আগের দিন মঙ্গলবার বিকালে স্কুল ছুটি হওয়ার পরে ওই গ্রামের শিপন তার পায়ে মোটর সাইকেল তুলে দেয়। এ নিয়ে তার সাথে তর্ক হয়। পরে লাভলু বিষয়টি জানার পর শিপনকে জিজ্ঞেস করলে বেশ তর্ক হয়। পরে শিপন (২১) ও তার দুই বন্ধু রাকিব (২২), তুহিন (২০) লাভলুর বাড়িতে এসে আজকেই খেলা দেখাবে বলে হুমকি দেয়। তাই এই ঘটনায় হুমকিদাতাদের সন্দেহ করেন নিহতের পরিবারবর্গ। তবে ঘটনার পর থেকে হুমকিদা ব্যক্তিরা পলাতম রয়েছে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, তার স’মিলে মিস্ত্রি না থাকায় গত কয়েকদিন ধরে তার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানে রাত্রিযাপন করেছেন। ঘটনার রাতেও তিনি ওখানে ঘুমিয়েছেন বলে ধারনা ছিল স্ত্রী সন্তানের। কিন্তু ভোর হতেই খবর পাওয়া গেল মৃত্যু সংবাদ।

ঘটনার পরে খবর পেয়ে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মইনুল হোসেন (অপরাধ ও তদন্ত), সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ (কচুয়া সার্কেল), মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সানোয়ার হোসেন ও সিআইডি, পিবিআই সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) মইনুল ইসলাম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ও সিআইডির টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মানবকন্ঠের মতলব দক্ষিণ প্রতিনিধি মোজাম্মেল প্রধান হাসিব

মতলবে জনপ্রিয় বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক কেন খুন হলেন জানালেন সন্তানেরা

আপডেট সময় : ০২:০৬:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২

মনিরুল ইসলাম মনির : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সলিমুল্লাহ লাভলু (৫০) ১ নভেম্বর দিনগত রাতে খুন হয়েছেন। বুধবার (০২ নভেম্বর) সকালে ফতেহপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মান্দাতলী গ্রামের ইটের রাস্তার পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লাভলু মান্দারতলী গ্রামের আমির হোসেন মাস্টারের ছেলে। তিনি সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন। বুধবার সকাল ভোরে ভ্যান চালক জাহাঙ্গীর আলম মান্দারতলী গ্রামের ভিতর দিয়ে হেরিংবোন্ড রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় লাশ দেখে ডাক চিৎকার দেন।

Model Hospital

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন জানান, লাশ দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। পরে এসে সুরুতহাল রিপোর্ট তৈরি ও মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে পুরো সত্যতা জানা যাবে।

মৃত্যুর পর নিহতের স্ত্রী শাহজাদী আক্তার নিন্নি’সহ আত্মীয় স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এমন নির্মম মত্যুর কারণে নিহতের মেয়ে একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া লুবনা আক্তার ও ৯ম শ্রেণির ছাত্র লাবিব এতিম হয়ে গেল। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানায় নিহতের পরিবার।

তার মৃত্যুর খবর পেয়ে বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দ ও এলাকার হাজার হাজার জনগণ দেখতে আসেন। তিনি ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিগত দিন যাবৎ। তার অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে।

এদিকে নিহতের ছেলে লাবিব জানায়, ঘটনার আগের দিন মঙ্গলবার বিকালে স্কুল ছুটি হওয়ার পরে ওই গ্রামের শিপন তার পায়ে মোটর সাইকেল তুলে দেয়। এ নিয়ে তার সাথে তর্ক হয়। পরে লাভলু বিষয়টি জানার পর শিপনকে জিজ্ঞেস করলে বেশ তর্ক হয়। পরে শিপন (২১) ও তার দুই বন্ধু রাকিব (২২), তুহিন (২০) লাভলুর বাড়িতে এসে আজকেই খেলা দেখাবে বলে হুমকি দেয়। তাই এই ঘটনায় হুমকিদাতাদের সন্দেহ করেন নিহতের পরিবারবর্গ। তবে ঘটনার পর থেকে হুমকিদা ব্যক্তিরা পলাতম রয়েছে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, তার স’মিলে মিস্ত্রি না থাকায় গত কয়েকদিন ধরে তার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানে রাত্রিযাপন করেছেন। ঘটনার রাতেও তিনি ওখানে ঘুমিয়েছেন বলে ধারনা ছিল স্ত্রী সন্তানের। কিন্তু ভোর হতেই খবর পাওয়া গেল মৃত্যু সংবাদ।

ঘটনার পরে খবর পেয়ে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মইনুল হোসেন (অপরাধ ও তদন্ত), সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ (কচুয়া সার্কেল), মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সানোয়ার হোসেন ও সিআইডি, পিবিআই সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) মইনুল ইসলাম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ও সিআইডির টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।