ঢাকা ০৯:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিত্রাংয়ের প্রভাবে কচুয়ায় উপজেলাজুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন; ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

মোঃ রাছেল : ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে প্রভাবে সৃষ্ট বাতাস ও টানা বৃষ্টিতে কচুয়ায় ঘরবাড়ি, গাছপালা, ফসলি জমি ও শাকসবজির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

Model Hospital

মঙ্গলবার সকালে সাচার, পালাখাল, রহিমানগর, আশ্রাফপুর, দরবেশগঞ্জ, কড়ইয়া ও পৌরসভায় সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, উপজেলা জুড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে পাঁচশতাধিক টিনসেটের ঘরবাড়ি। তিনশত বছরের কালের সাক্ষী হিসেবে পরিচিত দরবেশগঞ্জ মধ্যবাজারের বিশাল আকৃতির তেঁতুল গাছ সহ আম,কাঁঠাল, পেঁপে, রেইনট্রি, একাশি, কড়ই, মেহগণি সহ বিভিন্ন জাতের অর্ধসহস্রাধিক গাছ উপড়ে পড়ে। ভেঙে পড়ে শতশত গাছের ঢালপালা।

এছাড়াও উপড়ে পড়েছে অন্তত তিনশত বাঁশঝাড়। ব্যাপক ভাবে বিনষ্ট হয়েছে- শীতকালীন আগাম শাকসবজি, মূলা, লালশাক, পুঁইশাক, কুমড়া, লাউ, সিম, মরিচ, ধনিয়া ইত্যাদির।

বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে ও ঢালপালা ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে যাওয়ায় সোমবার সন্ধ্যা থেকে অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল পুরো উপজেলা। বিদ্যুৎ বিহীন সারা রাত অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকায় মানুষ ভয়ে রাত জেগে কাটিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুৎতের লোকজনরা টানা ১০-১২ ঘন্টা কাজ করে পৌর এলাকাসহ অল্প কয়েকটি স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করতে সক্ষম হন মাত্র।

কড়ইয়া গ্রামের রাছেল জানান, সোমবার সকাল থেকেই বৃষ্টির সাথে বাতাসের কারনে ঘরবন্ধি হয়েছিলাম। সন্ধ্যা পর থেকেই রাত জুড়ে বিদ্যুৎ না থাকায় আবার ভারি বৃষ্টি বাতাস সারা রাত ভয়ে রাত জেগে কাটিয়েছি।

পল্লী বিদ্যুৎতের ডিজিএম মোঃ বেলায়েত হোসেন জানান, সিত্রাংয়ের প্রভাবে পুরো উপজেলায় জুড়ে গাছ ও গাছের ঢালপালা ভেঙে বিদ্যুৎতের তার ছিড়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। পুরো উপজেলা জুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে আরো দুই তিন দিন সময় লেগে যেতে পারে।

কয়েকটি স্থানে খালে বাঁধ থাকায় পানি নামতে না পারায় রোপা আমন ধানের মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কবলে পড়া এসব রোপা আমন বিনষ্ট হওয়ার পথে।

পৌর এলাকার কৃষক গৌতম সরকার জানান, ৩০ শতক জমিতে মূলা, লালশাক, ধনিয়া বীজ বানিয়েছি। বৃষ্টির পানিতে সব তলিয়ে গেছে। এতে আমার প্রায় পনের হাজার টাকা খরচ হয়েছে। নতুন করে আবার বীজ তলা তৈরি করতে হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোফায়েল হোসেন জানান, শীত কালীন সবজি বীজ তলা যে সকল কৃষক তৈরি করেছেন ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ওই সকল বীজ তলা ক্ষতিসাধিত হয়েছে। যে সকল স্থানে খালে বাঁধ দেওয়া আছে তা দ্রুত বাঁধ কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে রোপা আমন ধানের মাঠে জলাবদ্ধতা দূর করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মানবকন্ঠের মতলব দক্ষিণ প্রতিনিধি মোজাম্মেল প্রধান হাসিব

সিত্রাংয়ের প্রভাবে কচুয়ায় উপজেলাজুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন; ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

আপডেট সময় : ০১:২০:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০২২

মোঃ রাছেল : ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে প্রভাবে সৃষ্ট বাতাস ও টানা বৃষ্টিতে কচুয়ায় ঘরবাড়ি, গাছপালা, ফসলি জমি ও শাকসবজির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

Model Hospital

মঙ্গলবার সকালে সাচার, পালাখাল, রহিমানগর, আশ্রাফপুর, দরবেশগঞ্জ, কড়ইয়া ও পৌরসভায় সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, উপজেলা জুড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে পাঁচশতাধিক টিনসেটের ঘরবাড়ি। তিনশত বছরের কালের সাক্ষী হিসেবে পরিচিত দরবেশগঞ্জ মধ্যবাজারের বিশাল আকৃতির তেঁতুল গাছ সহ আম,কাঁঠাল, পেঁপে, রেইনট্রি, একাশি, কড়ই, মেহগণি সহ বিভিন্ন জাতের অর্ধসহস্রাধিক গাছ উপড়ে পড়ে। ভেঙে পড়ে শতশত গাছের ঢালপালা।

এছাড়াও উপড়ে পড়েছে অন্তত তিনশত বাঁশঝাড়। ব্যাপক ভাবে বিনষ্ট হয়েছে- শীতকালীন আগাম শাকসবজি, মূলা, লালশাক, পুঁইশাক, কুমড়া, লাউ, সিম, মরিচ, ধনিয়া ইত্যাদির।

বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে ও ঢালপালা ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে যাওয়ায় সোমবার সন্ধ্যা থেকে অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল পুরো উপজেলা। বিদ্যুৎ বিহীন সারা রাত অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকায় মানুষ ভয়ে রাত জেগে কাটিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুৎতের লোকজনরা টানা ১০-১২ ঘন্টা কাজ করে পৌর এলাকাসহ অল্প কয়েকটি স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করতে সক্ষম হন মাত্র।

কড়ইয়া গ্রামের রাছেল জানান, সোমবার সকাল থেকেই বৃষ্টির সাথে বাতাসের কারনে ঘরবন্ধি হয়েছিলাম। সন্ধ্যা পর থেকেই রাত জুড়ে বিদ্যুৎ না থাকায় আবার ভারি বৃষ্টি বাতাস সারা রাত ভয়ে রাত জেগে কাটিয়েছি।

পল্লী বিদ্যুৎতের ডিজিএম মোঃ বেলায়েত হোসেন জানান, সিত্রাংয়ের প্রভাবে পুরো উপজেলায় জুড়ে গাছ ও গাছের ঢালপালা ভেঙে বিদ্যুৎতের তার ছিড়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। পুরো উপজেলা জুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে আরো দুই তিন দিন সময় লেগে যেতে পারে।

কয়েকটি স্থানে খালে বাঁধ থাকায় পানি নামতে না পারায় রোপা আমন ধানের মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কবলে পড়া এসব রোপা আমন বিনষ্ট হওয়ার পথে।

পৌর এলাকার কৃষক গৌতম সরকার জানান, ৩০ শতক জমিতে মূলা, লালশাক, ধনিয়া বীজ বানিয়েছি। বৃষ্টির পানিতে সব তলিয়ে গেছে। এতে আমার প্রায় পনের হাজার টাকা খরচ হয়েছে। নতুন করে আবার বীজ তলা তৈরি করতে হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোফায়েল হোসেন জানান, শীত কালীন সবজি বীজ তলা যে সকল কৃষক তৈরি করেছেন ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ওই সকল বীজ তলা ক্ষতিসাধিত হয়েছে। যে সকল স্থানে খালে বাঁধ দেওয়া আছে তা দ্রুত বাঁধ কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে রোপা আমন ধানের মাঠে জলাবদ্ধতা দূর করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।