ঢাকা ১২:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন

হাজীগঞ্জে অটো চালক হ ত্যা র আসামীদের বসতঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে গ্রামবাসী

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ধান রোপনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রভাবশালীদের পিটুনিতে সেলিম কবিরাজ (৪৫) নামে এক অটো চালকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার জেরে অভিযুক্তদের বসতঘর ও দোকানপাট অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের গৌরশ্বের কবিরাজ বাড়ীর আবুল কালাম কবিরাজের ছেলে অটো চালক সেলিমকে ২৫/৩০ জন মিলে পিটিয়ে হত্যা করে।

সেই রাতেই একই বাড়ীর প্রধান অভিযুক্ত আব্দুর রবের ছেলে আকবরের বসতঘর ও দোকানপাট অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা গভীর রাতে কে বা কারা ঘটিয়েছে তা নিশ্চিত নয় বলে জানান গ্রামবাসী।

১ লা ফেব্রুয়ারী শনিবার ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এবং হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

Model Hospital
আসামী আকবরের দোকানঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে গ্রামবাসী

এদিকে নিহত অটো চালক সেলিমের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়ীতে নেয়া হলে স্বজন ও এলাকার সাধারণ মানুষ এক নজর দেখতে ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়।

পরে শনিবার বাদ আছর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।

সেলিম পেশায় অটো চালক এবং ১ ছেলে ও ৩ কন্যা সন্তানের জনক।

স্থানীয় বাসিন্দা ইমান হোসেন ও সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন জানান, অটো চালক সেলিমের সাথে আজিজ কাজী ও জাহাঙ্গীর কবিরাজের সাথে গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে স্থানীয় মাঠে ধান রোপন নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওই ঘটনা স্থানীয়রা ওইদিন রাতেই সমাধান করে দেয়। কিন্তু আজিজ কাজী ও জাহাঙ্গীর কবিরাজ স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী হওয়ার কারণে তাদের পক্ষ নেয় স্থানীয় আরো বেশকিছু লোক।

তারা পরিকল্পনা করে জুমআর নামাজের পূর্বে মসজিদের পাশে লাঠিসোটা এনে রাখে। জুমার নামাজ আদায় করে সেলিম হোসেন তার ছেলে সহ মসজিদ থেকে বের হলে পূর্বে ওৎ পেতে থাকা দোকানদার আকবর কাজী, চান মিয়া তার ভাই নুরু, আজিজ দেশী অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালাতে শুরু করে। এসময় দোকানদার আকবর কাজির লাঠির আঘাতে সেলিম হোসেনের মৃত্যু হয়।

আসামী আকবরের বসতঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে গ্রামবাসী

নিহত সেলিমের স্ত্রী বিলকিস বেগম ও মেয়ে শারমিন জানান, পরিকল্পনা করে স্থানীয় বাসিন্দা আলিউজ্জামানের ছেলে চানমিয়া, আজিজ, তারা মিয়া ও নুরু মিয়া, আব্দুর রবের ছেলে আকবর, আনিস, আনিছের ছেলে জাহাঙ্গীর, রোশেদ, মেহেদী, মোতালেব কাজীর ছেলে রিয়াদ, খালেকের ছেলে নাছিরসহ প্রায় ৩০ জন হামলা করে সেলিমকে হত্যা করে।
অটো চালক সেলিমের ছেলে সবুজ হোসেন জানান, ঘটনাস্থল থেকে তার বাবাকে প্রথমে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পর পরই অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যায়।

এ বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন ও স্থানীয় বাসিন্দা ইমান হোসেন জানান, অটো চালক সেলিমের সাথে আজিজ কাজী ও জাহাঙ্গীর কবিরাজের সাথে গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে স্থানীয় মাঠে ধান রোপন নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এ থেকে পরিকল্পনা করে জুমআর নামাজের পরেই সেলিমের ওপর হামলা চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। নিহত ব্যাক্তির ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ আইনী প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পরে রাতেই নাকি অভিযুক্ত একজনের বসতঘর অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, সেখানেও আমরা তদন্ত করে দেখবো।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

৩ জনকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলা বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের

জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন

হাজীগঞ্জে অটো চালক হ ত্যা র আসামীদের বসতঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে গ্রামবাসী

আপডেট সময় : ০৭:০১:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ধান রোপনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রভাবশালীদের পিটুনিতে সেলিম কবিরাজ (৪৫) নামে এক অটো চালকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার জেরে অভিযুক্তদের বসতঘর ও দোকানপাট অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের গৌরশ্বের কবিরাজ বাড়ীর আবুল কালাম কবিরাজের ছেলে অটো চালক সেলিমকে ২৫/৩০ জন মিলে পিটিয়ে হত্যা করে।

সেই রাতেই একই বাড়ীর প্রধান অভিযুক্ত আব্দুর রবের ছেলে আকবরের বসতঘর ও দোকানপাট অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা গভীর রাতে কে বা কারা ঘটিয়েছে তা নিশ্চিত নয় বলে জানান গ্রামবাসী।

১ লা ফেব্রুয়ারী শনিবার ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এবং হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

Model Hospital
আসামী আকবরের দোকানঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে গ্রামবাসী

এদিকে নিহত অটো চালক সেলিমের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়ীতে নেয়া হলে স্বজন ও এলাকার সাধারণ মানুষ এক নজর দেখতে ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়।

পরে শনিবার বাদ আছর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।

সেলিম পেশায় অটো চালক এবং ১ ছেলে ও ৩ কন্যা সন্তানের জনক।

স্থানীয় বাসিন্দা ইমান হোসেন ও সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন জানান, অটো চালক সেলিমের সাথে আজিজ কাজী ও জাহাঙ্গীর কবিরাজের সাথে গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে স্থানীয় মাঠে ধান রোপন নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওই ঘটনা স্থানীয়রা ওইদিন রাতেই সমাধান করে দেয়। কিন্তু আজিজ কাজী ও জাহাঙ্গীর কবিরাজ স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী হওয়ার কারণে তাদের পক্ষ নেয় স্থানীয় আরো বেশকিছু লোক।

তারা পরিকল্পনা করে জুমআর নামাজের পূর্বে মসজিদের পাশে লাঠিসোটা এনে রাখে। জুমার নামাজ আদায় করে সেলিম হোসেন তার ছেলে সহ মসজিদ থেকে বের হলে পূর্বে ওৎ পেতে থাকা দোকানদার আকবর কাজী, চান মিয়া তার ভাই নুরু, আজিজ দেশী অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালাতে শুরু করে। এসময় দোকানদার আকবর কাজির লাঠির আঘাতে সেলিম হোসেনের মৃত্যু হয়।

আসামী আকবরের বসতঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে গ্রামবাসী

নিহত সেলিমের স্ত্রী বিলকিস বেগম ও মেয়ে শারমিন জানান, পরিকল্পনা করে স্থানীয় বাসিন্দা আলিউজ্জামানের ছেলে চানমিয়া, আজিজ, তারা মিয়া ও নুরু মিয়া, আব্দুর রবের ছেলে আকবর, আনিস, আনিছের ছেলে জাহাঙ্গীর, রোশেদ, মেহেদী, মোতালেব কাজীর ছেলে রিয়াদ, খালেকের ছেলে নাছিরসহ প্রায় ৩০ জন হামলা করে সেলিমকে হত্যা করে।
অটো চালক সেলিমের ছেলে সবুজ হোসেন জানান, ঘটনাস্থল থেকে তার বাবাকে প্রথমে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পর পরই অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যায়।

এ বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন ও স্থানীয় বাসিন্দা ইমান হোসেন জানান, অটো চালক সেলিমের সাথে আজিজ কাজী ও জাহাঙ্গীর কবিরাজের সাথে গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে স্থানীয় মাঠে ধান রোপন নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এ থেকে পরিকল্পনা করে জুমআর নামাজের পরেই সেলিমের ওপর হামলা চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। নিহত ব্যাক্তির ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ আইনী প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পরে রাতেই নাকি অভিযুক্ত একজনের বসতঘর অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, সেখানেও আমরা তদন্ত করে দেখবো।