নিজস্ব প্রতিনিধি : চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য ও শহীদ জাবেদ মুক্ত স্কাউট গ্রুপের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিক উল্লাহ (৭০) এর হত্যার সাথে জড়িত যুবক ১০ম শ্রেনীর ছাত্র অমিত দাস (১৬) ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে আত্যহত্যা করে মারা গেছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ জানান, আত্মহত্যা করা যুবকের লাশের ডিএনএ করার পর আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে এ যুবকই কি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিক উল্লাহকে হত্যা করেছে কিনা। তবে কি কারণে যুবক অমিত দাস রফিক উল্লাহকে হত্যা করেছে এ বিষয়ে পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। এ বিষয়ে পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করার জন্য আরো তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। রফিক উল্লাহ হত্যার বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় নিহতের ভাতিজা তন্ময় বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে। অপরদিকে আত্মহত্যা করা যুবকের প্রথমে পরিচয় না পাওয়ায় চাঁদপুর রেলওয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং-৬, তারিখ: ২৫-০৯-২০২২।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক উল্লাহকে হত্যা করার সাথে জড়িত যুবক অমিত এর পিতার নাম গৌতম দাস। সে শহরের পুরানবাজার দাস পাড়ার গনেশ দাসের বাড়িতে বসবাস করতো। অমিত চাঁদপুর শহরের গনি মডেল আদর্শ বহুমূখি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনীতে অধ্যায়রত ছিল।
পুলিশ জানান, অমিতের সাথে রফিক উল্লাহর অনেকদিন যাবত সখ্যতা ছিল। সে প্রায় সময় মুক্তিযোদ্ধা রফিক উল্লাহ্র বাসায় আসা যাওয়া করতো। ঘটনা একদিন পূর্বেও সে তার বাসায় এসেছে এবং ঘটনার দিনও সে এ বাসায় এসেছে বলে ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়। ঘটনার কিছুক্ষন পর সে এ বাসা থেকে দৌড়ে পালিয়ে যেতেও ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে।
চাঁদপুর মডেল থানার (ওসি তদন্তকারী) সুজন কান্তি বড়ুয়া জানান, ভিডিও ফুটেজ, আত্মহত্যাকারী যুবকের জুতা,প্যান্ট, শরীরে পরিহিত কালো গেঞ্জি, তার পিতা-মাতার চিহ্নিত করা ও নিহত রফিক উল্লাহ্র মোবাইল থেকে পাওয়া কললিস্ট অনুযায়ি মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে অনেকটা নিশ্চিত হয়েছি এ হত্যাকান্ডটি অমিত জড়িত।
তিনি আরো জানান, এখন তার লাশের ডিএনএ করার পর আমরা শতভাগ নিশ্চিত হতে পারবো এ লাশটি মুক্তিযোদ্ধা রফিক উল্লাহকে হত্যাকারী অমিতের লাশ।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দূল রশিদ জানান, আত্মহত্যা করা অমিত যে হত্যাকারী তা’ সুনিশ্চিত। ডিএনএ টেস্ট করলে পরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে। ভিডিও ফুটেজ দেখে দৈহিক অবস্থা দেখে চিহ্নিত করা সঠিক হয়েছে। আমাদের ধারণা সে হত্যা করার পর নতুনবাজার এলাকা থেকে পালিয়ে আল-আমিন হাসপাতাল এলাকা দিয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে ট্রেনের নীচে আত্মহত্যা করেছে। সে প্রায় ওই বাসায় যেত। ঘটনার দিন সে বাসায় ছিল। তাকে বাসার কেয়ার টেকার মিরাজ দেখেছে। মিরাজও তার জুতা, প্যান্ট ও গেঞ্জি দেখে চিহ্নিত করেছে।
উল্লেখ, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য ও শহীদ জাবেদ মুক্ত স্কাউট গ্রুপের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিক উল্লাহ শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের নতুন বাজার সফিনা আবাসিক হোটেলের তৃতীয় তলায় ছুরিকাঘাতে হত্যার শিকার হন। রফিক উল্লাহ ওই এলাকার বাসিন্দা মরহুম আলহাজ¦ মো. হেদায়েত উল্যাহর ছেলে। তিনি অবিবাহিত ছিলেন।