ঢাকা ১০:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফরিদগঞ্জে টাকার জন্য চাচাতো ভাইকে কুপিয়ে হত্যা

এস এম ইকবাল : ফরিদ উদ্দিন ভুঁইয়ার (২৫) এর মানিভ্যাগে ১ হাজার টাকার ১০টি চকচকে নতুন নোট দেখে লোভে পড়ে যায় একই বাড়ির বড় চাচাতো ভাই-বন্ধু সালাউদ্দিন ভুইয়া (৩৯)। টাকার লোভস দেখিয়ে পাশ্ববর্তী বাড়ির যুবক আব্দুর রহমান (২২)কে সাথে নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৫ এপ্রিল শুক্রবার সকালে ফরিদ ভূঁইয়ার ঘরে ঢুকে দা দিয়ে কুপিয়ে খুন করে।

Model Hospital

হত্যাকারীরা হলো নিহত ফরিদ ভূঁইয়ার নিজ বাড়ির মৃত চাচা গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে খুনি সালাউদ্দিন ভূঁইয়া এবং একই এলাকার উত্তর বাড়ির দেলুর ছেলে খুনি আব্দুর রহমান।
নিহত ফরিদ ভূঁইয়া সাবেক এমপি ড. শামছুল হক ভূঁইয়ার ভাতিজা।

চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ উপজেলার আলোচিত ফরিদ ভূঁইয়া হত্যার ঘটনার এমনই নির্মম স্বীকরোক্তি দিয়েছেন পুলিশের হাতে আটক দু’আসামি।

১৮ এপ্রিল সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো.মিলন মাহমুদ বিপিএম-বার। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল শুক্রবার রাতে উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম কাওনিয়া ভুঁইয়া বাড়িতে নিজ বসত ঘর থেকে ফরিদ উদ্দিনের গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার উল্লেখ করেন, ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়া হত্যার ঘটনায় তার বোন জামাই দুলাল চৌধুরী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ২৩, তারিখ ১৬/০৪/২০২২। ধারা ৩০২/২০১/৩৪।

মামলা রুজু হওয়ার পর পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় এবং হাজিগঞ্জ সার্কেল সোহেল মাহমুদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদ হোসেন ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই মো.রুবেল ফরাজী ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং আসামিদের গ্রেফতারে তৎপরতা চালান।

প্রথমে ঘটনার সাথে জড়িত আসামি আব্দুর রহমানকে ঢাকা গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রহমান ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং মূল আসামি সালাউদ্দিনের নাম ঠিকানা বলে দেন। তার দেয়া সাক্ষ্যে অনুযায়ী মূল আসামী সালাউদ্দিনকে ফরিদগঞ্জের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

আটক আসামিরা ঘটনা স্বীকার করে জানান, মৃত ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়া ও আসামি সালাউদ্দিন ভূঁইয়া একই সাথে চলাফেরা করত। সালাউদ্দিন ভূঁইয়া পেশায় একজন ড্রাইভার। তার দু-স্ত্রীর মধ্যে প্রথম স্ত্রী চট্টগ্রাম এবং দ্বাতীয় স্ত্রী বাড়িতে থাকেন। সালাউদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে মৃত ফরিদ উদ্দিনের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করতো সালাউদ্দিন।

ঘটনার আগে ১৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে ফরিদ ভূঁইয়া ও সালাউদ্দিন ভূঁইয়া বাড়ির পাশের দোকানে আইপিএল খেলা দেখছিল। এসময় সালাউদ্দিন ফরিদ উদ্দিনের মানিভ্যাগে ১ হাজার টাকার ১০ টি নতুন নোট দেখতে পায়। এ নতুন টাকা এবং পূর্ব শত্রুতার জেরে পার্শ্ববর্তী আব্দুর রহমানকে নিয়ে ফরিদকে হত্যার পরিকল্পনা করে সালাউদ্দিন।

ঘটনার দিন সকালে খুনি সালাউাদ্দন ও আব্দুর রহমান ফরিদের ঘরে ঢুকে ফরিদের ঘরে থাকা বঠি দা দিয়ে ফরিদকে এলো পাতাড়ি কুপিয়ে খুন করে।

খুনিরা জানায়, ফরিদ দরজা খুলতেই তারা ফরিদের ঘাড়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো দা দিয়ে কোপ দেয়। ফরিদ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা মৃতদেহ গুম করার জন্য তার শয়ন কক্ষে তোসকের ভিতরে প্যাঁচিয়ে রাখে। এরপর আসামীরা ফরিদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং ১০ হাজার টাকার নতুন নোট নিয়ে চলে যায়। বাইরে এসে সালাউদ্দিন তার সহযোগী আব্দুর রহমানকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকায় চলে যেতে বলে ঘটনার বিবরণে জানা গেছে ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদগঞ্জে সালাতুল ইস্তেসকার নামাজ আদায়

ফরিদগঞ্জে টাকার জন্য চাচাতো ভাইকে কুপিয়ে হত্যা

আপডেট সময় : ১১:০৭:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২

এস এম ইকবাল : ফরিদ উদ্দিন ভুঁইয়ার (২৫) এর মানিভ্যাগে ১ হাজার টাকার ১০টি চকচকে নতুন নোট দেখে লোভে পড়ে যায় একই বাড়ির বড় চাচাতো ভাই-বন্ধু সালাউদ্দিন ভুইয়া (৩৯)। টাকার লোভস দেখিয়ে পাশ্ববর্তী বাড়ির যুবক আব্দুর রহমান (২২)কে সাথে নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৫ এপ্রিল শুক্রবার সকালে ফরিদ ভূঁইয়ার ঘরে ঢুকে দা দিয়ে কুপিয়ে খুন করে।

Model Hospital

হত্যাকারীরা হলো নিহত ফরিদ ভূঁইয়ার নিজ বাড়ির মৃত চাচা গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে খুনি সালাউদ্দিন ভূঁইয়া এবং একই এলাকার উত্তর বাড়ির দেলুর ছেলে খুনি আব্দুর রহমান।
নিহত ফরিদ ভূঁইয়া সাবেক এমপি ড. শামছুল হক ভূঁইয়ার ভাতিজা।

চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ উপজেলার আলোচিত ফরিদ ভূঁইয়া হত্যার ঘটনার এমনই নির্মম স্বীকরোক্তি দিয়েছেন পুলিশের হাতে আটক দু’আসামি।

১৮ এপ্রিল সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো.মিলন মাহমুদ বিপিএম-বার। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল শুক্রবার রাতে উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম কাওনিয়া ভুঁইয়া বাড়িতে নিজ বসত ঘর থেকে ফরিদ উদ্দিনের গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার উল্লেখ করেন, ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়া হত্যার ঘটনায় তার বোন জামাই দুলাল চৌধুরী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ২৩, তারিখ ১৬/০৪/২০২২। ধারা ৩০২/২০১/৩৪।

মামলা রুজু হওয়ার পর পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় এবং হাজিগঞ্জ সার্কেল সোহেল মাহমুদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদ হোসেন ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই মো.রুবেল ফরাজী ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং আসামিদের গ্রেফতারে তৎপরতা চালান।

প্রথমে ঘটনার সাথে জড়িত আসামি আব্দুর রহমানকে ঢাকা গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রহমান ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং মূল আসামি সালাউদ্দিনের নাম ঠিকানা বলে দেন। তার দেয়া সাক্ষ্যে অনুযায়ী মূল আসামী সালাউদ্দিনকে ফরিদগঞ্জের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

আটক আসামিরা ঘটনা স্বীকার করে জানান, মৃত ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়া ও আসামি সালাউদ্দিন ভূঁইয়া একই সাথে চলাফেরা করত। সালাউদ্দিন ভূঁইয়া পেশায় একজন ড্রাইভার। তার দু-স্ত্রীর মধ্যে প্রথম স্ত্রী চট্টগ্রাম এবং দ্বাতীয় স্ত্রী বাড়িতে থাকেন। সালাউদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে মৃত ফরিদ উদ্দিনের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করতো সালাউদ্দিন।

ঘটনার আগে ১৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে ফরিদ ভূঁইয়া ও সালাউদ্দিন ভূঁইয়া বাড়ির পাশের দোকানে আইপিএল খেলা দেখছিল। এসময় সালাউদ্দিন ফরিদ উদ্দিনের মানিভ্যাগে ১ হাজার টাকার ১০ টি নতুন নোট দেখতে পায়। এ নতুন টাকা এবং পূর্ব শত্রুতার জেরে পার্শ্ববর্তী আব্দুর রহমানকে নিয়ে ফরিদকে হত্যার পরিকল্পনা করে সালাউদ্দিন।

ঘটনার দিন সকালে খুনি সালাউাদ্দন ও আব্দুর রহমান ফরিদের ঘরে ঢুকে ফরিদের ঘরে থাকা বঠি দা দিয়ে ফরিদকে এলো পাতাড়ি কুপিয়ে খুন করে।

খুনিরা জানায়, ফরিদ দরজা খুলতেই তারা ফরিদের ঘাড়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো দা দিয়ে কোপ দেয়। ফরিদ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা মৃতদেহ গুম করার জন্য তার শয়ন কক্ষে তোসকের ভিতরে প্যাঁচিয়ে রাখে। এরপর আসামীরা ফরিদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং ১০ হাজার টাকার নতুন নোট নিয়ে চলে যায়। বাইরে এসে সালাউদ্দিন তার সহযোগী আব্দুর রহমানকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকায় চলে যেতে বলে ঘটনার বিবরণে জানা গেছে ।