ঢাকা ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাঁদপুরের বালিয়ায় ২শ’ টাকায় মিলছে জেলে চাল, পরিমাণেও দেয়া হচ্ছে কম

নিজস্ব প্রতিনিধি : চাঁদপুর প্রতিনিধি।। জাটকা ইলিশ রক্ষায় সরকার বিকল্প খাদ্য সহায়তা হিসেবে নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে বিনামূল্যে চাউল বিতরণ করছে। নিষেধাজ্ঞার সময় জাটকা নিধন না করার শর্তে প্রত্যেক জেলেকে ২মাসে ৪০ কেজি করে মোট ৮০ কেজি চাল দেয়ার কথা।

Model Hospital

কিন্তু চাঁদপুরে সদর উপজেলার ৯নং বালিয়া ইউনিয়নে চাল কম দেয়ার পাশাপাশি প্রত্যেক জেলেদের কাছ থেকে ২শ’ টাকা করে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে জেলেদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

৫ মার্চ শুক্রবার সকালে সরেজিনে বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে চাল বিতরণকালে জেলেদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়।

নাম প্রকাশে অনিশ্চুক ১ ও ২ নং ওয়ার্ডের অসংখ্য জেলে অভিযোগ করে বলেন, প্রত্যেক জেলেকে ৪০ কেজি করে দুই মাসের ৮০ কেজি চাল একসাথে দেয়ার কথা। কিন্তু দেয়া হয়েছে ৭০ থেকে ৭২ কেজি করে। আর প্রতিটি বস্তা বোঙা দিয়ে ফুটো করে চাল কমিয়ে ফেলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অযুহাতে আগ্রিম ২শ’ টাকা করে নেয়া হয়েছে।

ক্ষুব্ধ জেলেরা আরো বলেন, দুই মাস নদীতে মাছ না ধরার শর্তে সরকার তাদের খাদ্য সহায়তা হিসেবে বিনামূল্যে চাল দিচ্ছে। আর বাকি সবকিছুই তাদের কিনে খেতে হয়। অথচ এর পরেও চাল কম দেয়া এবং বিনিয়মে টাকা নেয়াটা জুলুমের মধ্যেই পরে।

টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাহিদ হোসেন খান বলেন, সবার কাছ থেকে টাকা নেইনি। কিছু কিছু জেলের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। তবে কারো থেকে ২শ’ টাকা, আবার কারো থেকে ১শ’ টাকা করে নেয়া হয়েছে। চাউল উঠানোর পরিবহন খরচ পোষাতেই এই টাকা নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল্যা পাটোয়ারি চাউল কম দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ৭৮১ জন নিবন্ধিত জেলের জন্যে ৬৩ টন চাউল বরাদ্দ পেয়েছি। কিন্তু গোডাউন থেকে সঠিক পরিমাণে চাউল পাওয়া যায় না। আর লেবারকে টাকা না দিলে তারা মাল লোড করে না। তাছাড়া প্রতিটি বস্তার ওজন প্রায় ১কেজি। এসব কারনে কিছু চাল কম হয়। সরকারি ভাবে পরিবহন বাবদ যে খরচ দেয়া হয় তাও অনেক কম।

জেলেদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি যে অনেক জেলের কাছ থেকে মেম্বাররা ২শ’ টাকা করে নিয়েছে। এটি কোন মতেই ঠিক হয়নি। আমি পরিস্কারভাবে মেম্বারদের বলে দিয়েছি, যাতে তাদের টাকা ফিরিয়ে দেয়া হয়। শুধু ফিরিয়ে দিলেই হবে না, তাদের টাকা বুঝে পাওয়ার স্বাক্ষর এনে আমাকে দেখাতে হবে।
কোন মেম্বারের অনিয়মের দায় আমি নেব না।

উল্লেখ্য : এবছর জাটকা রক্ষা কর্মসূচি সফল করননে টাস্কফোর্সের সভায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, জেলেদের চাল কম দেওয়া যাবে না। কোথাও চাল কম দেওয়ার অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সমবেদনা জানান জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ

চাঁদপুরের বালিয়ায় ২শ’ টাকায় মিলছে জেলে চাল, পরিমাণেও দেয়া হচ্ছে কম

আপডেট সময় : ০১:৪৮:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ মার্চ ২০২২

নিজস্ব প্রতিনিধি : চাঁদপুর প্রতিনিধি।। জাটকা ইলিশ রক্ষায় সরকার বিকল্প খাদ্য সহায়তা হিসেবে নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে বিনামূল্যে চাউল বিতরণ করছে। নিষেধাজ্ঞার সময় জাটকা নিধন না করার শর্তে প্রত্যেক জেলেকে ২মাসে ৪০ কেজি করে মোট ৮০ কেজি চাল দেয়ার কথা।

Model Hospital

কিন্তু চাঁদপুরে সদর উপজেলার ৯নং বালিয়া ইউনিয়নে চাল কম দেয়ার পাশাপাশি প্রত্যেক জেলেদের কাছ থেকে ২শ’ টাকা করে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে জেলেদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

৫ মার্চ শুক্রবার সকালে সরেজিনে বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে চাল বিতরণকালে জেলেদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়।

নাম প্রকাশে অনিশ্চুক ১ ও ২ নং ওয়ার্ডের অসংখ্য জেলে অভিযোগ করে বলেন, প্রত্যেক জেলেকে ৪০ কেজি করে দুই মাসের ৮০ কেজি চাল একসাথে দেয়ার কথা। কিন্তু দেয়া হয়েছে ৭০ থেকে ৭২ কেজি করে। আর প্রতিটি বস্তা বোঙা দিয়ে ফুটো করে চাল কমিয়ে ফেলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অযুহাতে আগ্রিম ২শ’ টাকা করে নেয়া হয়েছে।

ক্ষুব্ধ জেলেরা আরো বলেন, দুই মাস নদীতে মাছ না ধরার শর্তে সরকার তাদের খাদ্য সহায়তা হিসেবে বিনামূল্যে চাল দিচ্ছে। আর বাকি সবকিছুই তাদের কিনে খেতে হয়। অথচ এর পরেও চাল কম দেয়া এবং বিনিয়মে টাকা নেয়াটা জুলুমের মধ্যেই পরে।

টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাহিদ হোসেন খান বলেন, সবার কাছ থেকে টাকা নেইনি। কিছু কিছু জেলের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। তবে কারো থেকে ২শ’ টাকা, আবার কারো থেকে ১শ’ টাকা করে নেয়া হয়েছে। চাউল উঠানোর পরিবহন খরচ পোষাতেই এই টাকা নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল্যা পাটোয়ারি চাউল কম দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ৭৮১ জন নিবন্ধিত জেলের জন্যে ৬৩ টন চাউল বরাদ্দ পেয়েছি। কিন্তু গোডাউন থেকে সঠিক পরিমাণে চাউল পাওয়া যায় না। আর লেবারকে টাকা না দিলে তারা মাল লোড করে না। তাছাড়া প্রতিটি বস্তার ওজন প্রায় ১কেজি। এসব কারনে কিছু চাল কম হয়। সরকারি ভাবে পরিবহন বাবদ যে খরচ দেয়া হয় তাও অনেক কম।

জেলেদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি যে অনেক জেলের কাছ থেকে মেম্বাররা ২শ’ টাকা করে নিয়েছে। এটি কোন মতেই ঠিক হয়নি। আমি পরিস্কারভাবে মেম্বারদের বলে দিয়েছি, যাতে তাদের টাকা ফিরিয়ে দেয়া হয়। শুধু ফিরিয়ে দিলেই হবে না, তাদের টাকা বুঝে পাওয়ার স্বাক্ষর এনে আমাকে দেখাতে হবে।
কোন মেম্বারের অনিয়মের দায় আমি নেব না।

উল্লেখ্য : এবছর জাটকা রক্ষা কর্মসূচি সফল করননে টাস্কফোর্সের সভায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, জেলেদের চাল কম দেওয়া যাবে না। কোথাও চাল কম দেওয়ার অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।