ঢাকা ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মতলব দক্ষিণে সুদের টাকা না পাওয়ায় বসতঘরে তালা দিল সুদ ব্যবসায়ী রোকেয়া

স্টাফ রিপোর্টার : মতলব দক্ষিণে সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এক অসহায় জেলের বসতঘরে তালা দিয়েছে রোকেয়া বেগম রকি নামের এক প্রভাবশালী সুদ ব্যবসায়ী। এসময় ঘরে থাকা স্বর্ণলাংকার, একটি গরু ও দুইটি মাছ ধরার নৌকা নিয়ে গেছে ওই সুদ ব্যবসায়ী।

Model Hospital

গত ৪ ফেব্রুয়ারী উপজেলার নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।

সরজমিনে জানা যায়, উপজেলার নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের খিদিরপুর গ্রামের নিমাই চন্দ্র দাসের ছেলে শ্যামল চন্দ্র দাস একই উপজেলার ৩নং খাদেরগাঁও ইউনিয়নের মাছুয়াখাল গ্রামের জমাদার বাড়ির মৃত কাশেম আল জমাদারের মেয়ে রোকেয়া বেগম রকির কাছ থেকে গত ৬ বছর আগে ২লক্ষ ৫০ হাজার টাকা সুদে নেন। অসহায় জেলে শ্যামল চন্দ্র দাস  ৫ টাকা সুদ হারে বছরে এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা সুদ দিতেন রোকেয়া বেগম রকিকে। ৬ বছরে রোকেয়া বেগম রকি শ্যামলের কাছ থেকে মূল টাকাসহ প্রায় ১০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন।

বর্তমানে সুদের ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পাবেন বলে গত ৪ ফেব্রুয়ারী রোকেয়া বেগম রকি সুদের টাকা আনতে গিয়ে টাকা না পেয়ে শ্যামলের বিয়ের উপযুক্ত মেয়ে ও তার স্ত্রীকে বসতঘর থেকে জোরপূর্বক বের করে ঘরে তালা জুলিয়ে দেয়। এসময় রকি ঘরে থাকা স্বর্ণলাংকার, একটি গরু, দু’টি মাছ ধরার নৌকা নিয়ে যায় বলে জানান শ্যামলের স্ত্রী পার্বতী দাস।

বর্তমানে ঘরে তালা থাকায় এবং রকির ভয়ে ঘরে প্রবেশ করতে পারছেন না ওই অসহায় জেলে পরিবার। এ অবস্থায় শীতকে অপেক্ষা করে ঘরের বারান্দায় রাত্রিযাপন করছেন শ্যামল ও তার স্ত্রী-সন্তান।

এছাড়াও ওই গ্রামের রবি মাঝির কাছে বছরে ৬০ হাজার টাকা লাভে এক লক্ষ টাকা এবং মৃতুরঞ্জয় দাসের ছেলে জয়গুরু দাসের কাছে বছরে ত্রিশ হাজার টাকা লাভে ৫০ হাজার টাকা গত ১০/১২ বছর যাবত সুদে দিয়েছেন রোকেয়া বেগম রকি।

এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, রোকেয়া বেগম রকি মিষ্টি কথা বলে অসহায় হিন্দুদের কাছে সুদে টাকা লাগায়। টাকা দিতে দেরি হলে জোরপূর্বক বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি ধমকি দিয়ে টাকা আদায় করে থাকেন। রোকেয়া বেগম রকি দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ এ সুদের ব্যবসা দাপটের সাথে পরিচালনা করে আসছেন।

এ বিষয়ে জেলে শ্যামল চন্দ্র দাসের স্ত্রী পার্বতী দাস জানান, আমার স্বামী মাছ ধরতে নদীতে ছিল। রকি বেগম সুদের টাকা নিতে আসে। টাকা না পেয়ে আমাকে ও আমার মেয়েকে ঘর থেকে বের করে জোরপূর্বক ঘরে তালা দিয়ে দেয়। এসময় ঘরে থাকা স্বর্ণলাংকার ও একটি গরু, দুইটি মাছ ধরার নৌকা জোর করে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে রোকেয়া বেগম রকি বলেন, শ্যামল আমার কাছ থেকে ধারে টাকা নিয়েছে। আমার পাওনা টাকা না দেওয়ায় আমি তার গরু ও নৌকা নিয়ে এসেছি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শিগগির চালু হচ্ছে বাংলাদেশ,পাকিস্তান সরাসরি ফ্লাইট

মতলব দক্ষিণে সুদের টাকা না পাওয়ায় বসতঘরে তালা দিল সুদ ব্যবসায়ী রোকেয়া

আপডেট সময় : ১১:৪৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার : মতলব দক্ষিণে সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এক অসহায় জেলের বসতঘরে তালা দিয়েছে রোকেয়া বেগম রকি নামের এক প্রভাবশালী সুদ ব্যবসায়ী। এসময় ঘরে থাকা স্বর্ণলাংকার, একটি গরু ও দুইটি মাছ ধরার নৌকা নিয়ে গেছে ওই সুদ ব্যবসায়ী।

Model Hospital

গত ৪ ফেব্রুয়ারী উপজেলার নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।

সরজমিনে জানা যায়, উপজেলার নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের খিদিরপুর গ্রামের নিমাই চন্দ্র দাসের ছেলে শ্যামল চন্দ্র দাস একই উপজেলার ৩নং খাদেরগাঁও ইউনিয়নের মাছুয়াখাল গ্রামের জমাদার বাড়ির মৃত কাশেম আল জমাদারের মেয়ে রোকেয়া বেগম রকির কাছ থেকে গত ৬ বছর আগে ২লক্ষ ৫০ হাজার টাকা সুদে নেন। অসহায় জেলে শ্যামল চন্দ্র দাস  ৫ টাকা সুদ হারে বছরে এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা সুদ দিতেন রোকেয়া বেগম রকিকে। ৬ বছরে রোকেয়া বেগম রকি শ্যামলের কাছ থেকে মূল টাকাসহ প্রায় ১০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন।

বর্তমানে সুদের ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পাবেন বলে গত ৪ ফেব্রুয়ারী রোকেয়া বেগম রকি সুদের টাকা আনতে গিয়ে টাকা না পেয়ে শ্যামলের বিয়ের উপযুক্ত মেয়ে ও তার স্ত্রীকে বসতঘর থেকে জোরপূর্বক বের করে ঘরে তালা জুলিয়ে দেয়। এসময় রকি ঘরে থাকা স্বর্ণলাংকার, একটি গরু, দু’টি মাছ ধরার নৌকা নিয়ে যায় বলে জানান শ্যামলের স্ত্রী পার্বতী দাস।

বর্তমানে ঘরে তালা থাকায় এবং রকির ভয়ে ঘরে প্রবেশ করতে পারছেন না ওই অসহায় জেলে পরিবার। এ অবস্থায় শীতকে অপেক্ষা করে ঘরের বারান্দায় রাত্রিযাপন করছেন শ্যামল ও তার স্ত্রী-সন্তান।

এছাড়াও ওই গ্রামের রবি মাঝির কাছে বছরে ৬০ হাজার টাকা লাভে এক লক্ষ টাকা এবং মৃতুরঞ্জয় দাসের ছেলে জয়গুরু দাসের কাছে বছরে ত্রিশ হাজার টাকা লাভে ৫০ হাজার টাকা গত ১০/১২ বছর যাবত সুদে দিয়েছেন রোকেয়া বেগম রকি।

এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, রোকেয়া বেগম রকি মিষ্টি কথা বলে অসহায় হিন্দুদের কাছে সুদে টাকা লাগায়। টাকা দিতে দেরি হলে জোরপূর্বক বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি ধমকি দিয়ে টাকা আদায় করে থাকেন। রোকেয়া বেগম রকি দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ এ সুদের ব্যবসা দাপটের সাথে পরিচালনা করে আসছেন।

এ বিষয়ে জেলে শ্যামল চন্দ্র দাসের স্ত্রী পার্বতী দাস জানান, আমার স্বামী মাছ ধরতে নদীতে ছিল। রকি বেগম সুদের টাকা নিতে আসে। টাকা না পেয়ে আমাকে ও আমার মেয়েকে ঘর থেকে বের করে জোরপূর্বক ঘরে তালা দিয়ে দেয়। এসময় ঘরে থাকা স্বর্ণলাংকার ও একটি গরু, দুইটি মাছ ধরার নৌকা জোর করে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে রোকেয়া বেগম রকি বলেন, শ্যামল আমার কাছ থেকে ধারে টাকা নিয়েছে। আমার পাওনা টাকা না দেওয়ায় আমি তার গরু ও নৌকা নিয়ে এসেছি।