বিশেষ প্রতিনিধি : চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে ব্যবসায়ীদের দুটি ট্রলারে দিনে দুপুরে ডাকাতি করে অর্ধকোটি টাকা লুটে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে গুরুত্বর আহত হয় অন্তত ৩ জন। আহতদের মধ্যে আক্কাস শেখ (৩৫) ও উজ্জল মাঝি (২৫)কে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা সকলে মতলব উত্তর উপজেলার আমিরাবাদ ও গৌরাঙ্গ বাজারের ব্যবসায়ী।
রবিবার (২৩ জানুয়ারী) বেলা ১১টার দিকে চাঁদপুর সদরের মেঘনা নদীর সফরমালী লঞ্চঘাট এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে। ডাকাতিকালে ব্যবসায়ী আক্কাস কেষ (৩৫), উজ্জল মাঝি (২৫) ও হাকিম গাজী (৪৮) আহত হয়।
ট্রলারে থাকা আহত ব্যবসায়ী হাকিম আলী গাজী জানায়, মেঘনা নদীর সফরমালী লঞ্চঘাটের কাছে আসলে স্প্রীডবোট নিয়ে ৮/৯জন মুখোশধারী কাটা রাইফেল, শর্টগান, রামদা ও রড নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং আমাদের কাছে থাকা টাকা-পয়সা লুটে নেয়। সাথে আমাদের মোবাইলগুলোও নিয়ে যায়। পরে তারা মেঘনা নদীর উত্তর দিকে চলে যায়। ওদের গায়ে লাইফ জ্যাকেট ছিল।
ট্রলারের মাঝি উজ্জল শেখ (২৫) জানায়, আমার ট্রলারে ডাতাতরা স্পীডবেট দিয়ে উঠেই মারধর শুরু করে। কয়েকজন ব্যবসায়ী ট্রলারে সাথে আসে নাই। তারা আমার কাছে চাঁদপুরের পার্টিদেরকে পৌঁছে দেয়ার জন্য টাকা দেয়। সেই টাকার পরিমান ১৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। সব টাকাই ডাকাতরা নিয়ে গেছে।
আহত পাইকারী মুদি ব্যবসায়ী আক্কাস শেখ জানায়, আমার কাছে ৯ লক্ষ টাকা ছিল। টাকা দিতে দেরী করায় রড দিয়ে আমার হাত ভেঙ্গে ফেলে এবং টাকা ছিনিয়ে নেয়।
তেলের ডিলার ব্যাপারী ট্রেডার্সের মালিক আতাউর রহমান সবুজ জানায়, তার টাকা ছিল ৩ লক্ষ ৫০ হাজার, তেলের ডিলার নাইমা ট্রেডার্সের মালিক মোহাম্মদ হোসেন জানায়, তার টাকা ছিল ৩ লক্ষ ১১ হাজার, মরিচের পাইকার খোকন মেম্বার জানায়, তার টাকা ৩ লক্ষ১০ হাজার, গৌরাঙ্গ বাজারের মুদি ব্যবসায়ী কামাল মল্লিক জানায় তার টাকা ৩ লক্ষ ১৫ হাজার, রহম আলী গাজী জানায় তার ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা যা ডাকাতরা নিয়ে গেছে।
চাঁদপুর নৌ-পুলিশ সুপার (এসপি) কামরুজ্জামান জানায়, আমি খবর পেয়ে সাথে সাথে চাঁদপুর সদর ও মোহনপুর নৌ-পুলিশের ওসিকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে দিয়েছি। পরপর নৌ-পুলিশের এডিশনাল এসপিকেও পাঠিয়েছি। ব্যবসায়ীদের মিসিং মোবাইলের নম্বর আমার কাছে চলে আসছে, আমি সেগুলি নিয়ে ডাকাতদের ধরার বিষয়ে যা যা করণীয় সবই করছি। আশা করি ডাকাতদের ধরতে সক্ষম হবো।
ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে আসা চাঁদপুর নৌ-পুলিশের এডিশনাল এসপি বেলায়েত হোসেন জানায়, ডাতাতদের ধরার জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাজই আমরা শুরু করে দিয়েছি। তবে এই ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয়দের যোগসাযোস থাকতে পারে বলে আমরা ধারনা করছি। তবে এতো টাকা নিয়ে নৌ-পথে মোকামে গেলে আমাদের সহযোগীতা নিলে আপনাদের জন্য সহজ হবে।