ঢাকা ০৭:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ছাড়াই সিজার সম্পন্ন

চাঁদপুরে গাইনী চিকিৎসক ডাঃ তাবেন্দা আক্তারের অবহেলায় নবজাতক মৃত্যুর অভিযোগ

চাঁদপুর শহরের আল-মানার হাসপাতালে গাইনী চিকিৎসক ডাঃ তাবেন্দা আক্তারের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার কারণে সিজারে জন্ম নেয়া দুই দিন বয়সী নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে চিকিৎসক তার দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন।

Model Hospital

শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে শহরের মিশন রোডস্থ হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলায় ২০৫ নম্বর কক্ষে ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়।

তবে ওই নবজাতকের মা সুমি আক্তার (২৭) এখনো সুস্থ আছেন। তিনি জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বিশকাটালি গ্রামের কাজী বাড়ীর মিজানুর রহমানের স্ত্রী। মিজান ময়মনসিংহে দিন মজুরের কাজ করেন। সুমি আক্তারের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

মৃত নবজাতকের ফুফু লুৎফুর নাহার বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত নেয়ার জন্য ২১ মার্চ এই হাসপাতালে সুমি আক্তার ভর্তি হয়। আল্ট্রাসনোগ্রাম অনুযায়ি তার সন্তান জন্মের তারিখ ছিল আগামী ২৬ এপ্রিল। কিন্তু আল্ট্রাসনোগ্রাফি চিকিৎসক সাহিদা সুলতানা দ্বিতীয় সিজার হিসেবে ১০ এপ্রিল তারিখ দেন। ওই তারিখ আসার পূর্বেই প্রয়োজনীয় সব ধরণের পরীক্ষা ছাড়াই গাইনী চিকিৎসক তাবেন্দা আক্তার সিজার করেন।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক পরিবারের লোকদের সাথে পরামর্শ করেননি। আমাদের আত্মীয়ের মধ্যেও চিকিৎসক আছেন। তিনি কেন অতিঝুকিঁপূর্ণ হওয়া রোগীর সিজার করলেন। আমি নিজে আসার পূর্বেই সিজার সম্পন্ন হয়। তারা তাড়াহুড়া করে কেন ১ মাস পূর্বে অপরিপক্ক নজাতকের সিজার করলেন। তখনই আমি বলেছি অপরিপক্ক বাচ্চা বাঁচানো যায় না। এই ধরণের চিকিৎসকের বিচার হওয়া উচিৎ।

অভিযুক্ত চিকিৎসক তাবেন্দা আক্তার বলেন, সিজারের পর কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। অপারেশন থিয়েটারে নবজাতকের মৃত্যু হয়নি। দুইদিন পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারাগেলে এখানে চিকিৎসকের কিছু করার নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জবাব দিবে।

আল-মানার হাসপাতাল এর পরিচালক অহিদুর রহমান বলেন, রোগীর অভিভাবকদের পক্ষ থেকে আমাদের বিষয়ে কোন অভিযোগ নেই। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে তার কাছে তারা যেতে পারেন। শিশুর অবস্থার অবনতি হলে আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেই। কিন্তু তারা না নিয়ে হাসপাতালে থেকে যায়। আমাদের সাথে রোগীর আত্মীয় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন হাসপাতালের পাওনা পরিশোধ করে রবিবার রোগীকে নিয়ে যাবেন।

এই ঘটনা জেনে চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইসমাইল হোসেন ও ফেরদৌস নুর হাসপাতালে আসেন। উভয় পুলিশ কর্মকর্তা রোগী ও হাসপাতাল পরিচালকদের সাথে কথা বলেন। পুলিশ জানায়, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।

উল্লেখ্য: অভিযুক্ত ডাক্তারের বিরুদ্ধে এর পূর্বেও রোগীর মৃত্যুর সাথে জড়িত থাকা ও চাঁদপুর সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ রয়েছে। ওই সময়ে তিনি সরকারি হাসপাতালে না গিয়ে বাণিজ্যিক ডায়গনস্টিক চেম্বারে রোগী দেখান।

ট্যাগস :

তীব্র গরমে চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাড. হুমায়ুন কবির সুমনের ঠান্ডা পানি ও স্যালাইন বিতরণ

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ছাড়াই সিজার সম্পন্ন

চাঁদপুরে গাইনী চিকিৎসক ডাঃ তাবেন্দা আক্তারের অবহেলায় নবজাতক মৃত্যুর অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৫:১৬:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪

চাঁদপুর শহরের আল-মানার হাসপাতালে গাইনী চিকিৎসক ডাঃ তাবেন্দা আক্তারের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার কারণে সিজারে জন্ম নেয়া দুই দিন বয়সী নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে চিকিৎসক তার দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন।

Model Hospital

শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে শহরের মিশন রোডস্থ হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলায় ২০৫ নম্বর কক্ষে ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়।

তবে ওই নবজাতকের মা সুমি আক্তার (২৭) এখনো সুস্থ আছেন। তিনি জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বিশকাটালি গ্রামের কাজী বাড়ীর মিজানুর রহমানের স্ত্রী। মিজান ময়মনসিংহে দিন মজুরের কাজ করেন। সুমি আক্তারের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

মৃত নবজাতকের ফুফু লুৎফুর নাহার বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত নেয়ার জন্য ২১ মার্চ এই হাসপাতালে সুমি আক্তার ভর্তি হয়। আল্ট্রাসনোগ্রাম অনুযায়ি তার সন্তান জন্মের তারিখ ছিল আগামী ২৬ এপ্রিল। কিন্তু আল্ট্রাসনোগ্রাফি চিকিৎসক সাহিদা সুলতানা দ্বিতীয় সিজার হিসেবে ১০ এপ্রিল তারিখ দেন। ওই তারিখ আসার পূর্বেই প্রয়োজনীয় সব ধরণের পরীক্ষা ছাড়াই গাইনী চিকিৎসক তাবেন্দা আক্তার সিজার করেন।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক পরিবারের লোকদের সাথে পরামর্শ করেননি। আমাদের আত্মীয়ের মধ্যেও চিকিৎসক আছেন। তিনি কেন অতিঝুকিঁপূর্ণ হওয়া রোগীর সিজার করলেন। আমি নিজে আসার পূর্বেই সিজার সম্পন্ন হয়। তারা তাড়াহুড়া করে কেন ১ মাস পূর্বে অপরিপক্ক নজাতকের সিজার করলেন। তখনই আমি বলেছি অপরিপক্ক বাচ্চা বাঁচানো যায় না। এই ধরণের চিকিৎসকের বিচার হওয়া উচিৎ।

অভিযুক্ত চিকিৎসক তাবেন্দা আক্তার বলেন, সিজারের পর কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। অপারেশন থিয়েটারে নবজাতকের মৃত্যু হয়নি। দুইদিন পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারাগেলে এখানে চিকিৎসকের কিছু করার নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জবাব দিবে।

আল-মানার হাসপাতাল এর পরিচালক অহিদুর রহমান বলেন, রোগীর অভিভাবকদের পক্ষ থেকে আমাদের বিষয়ে কোন অভিযোগ নেই। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে তার কাছে তারা যেতে পারেন। শিশুর অবস্থার অবনতি হলে আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেই। কিন্তু তারা না নিয়ে হাসপাতালে থেকে যায়। আমাদের সাথে রোগীর আত্মীয় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন হাসপাতালের পাওনা পরিশোধ করে রবিবার রোগীকে নিয়ে যাবেন।

এই ঘটনা জেনে চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইসমাইল হোসেন ও ফেরদৌস নুর হাসপাতালে আসেন। উভয় পুলিশ কর্মকর্তা রোগী ও হাসপাতাল পরিচালকদের সাথে কথা বলেন। পুলিশ জানায়, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।

উল্লেখ্য: অভিযুক্ত ডাক্তারের বিরুদ্ধে এর পূর্বেও রোগীর মৃত্যুর সাথে জড়িত থাকা ও চাঁদপুর সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ রয়েছে। ওই সময়ে তিনি সরকারি হাসপাতালে না গিয়ে বাণিজ্যিক ডায়গনস্টিক চেম্বারে রোগী দেখান।