ঢাকা ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কচুয়ায় পরিত্যক্ত ভবনে প্রতিমা ও বিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা

কচুয়া উপজেলার পাথৈর ইউনিয়নের রায় বাহাদুর চন্দ্র সেন জমিদার বাড়ির পরিত্যক্ত ভবনে রাতের অন্ধকারে প্রতিমা স্থাপন ও বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা করছে দুষ্কৃতিকারীরা।

Model Hospital

এ ঘটনায় পাথৈর ইউনিয়ন সহকারি কর্মকর্তা ইমাম হোসেন বাদী হয়ে কচুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, ২নং পাথৈর ইউনিয়নের ভূমি অফিস সংলগ্ন প্রায় সাড়ে ৭ একর সরকারের ভিপি সম্পত্তিতে অবস্থিত জমিদার বাড়ির পরিত্যক্ত ৩টি ভবন রয়েছে। দীর্ঘদিন রায়বাহাদুর শরৎ চন্দ্র সেন চৌধুরীরের বাড়িটি পাথৈর ইউনিয়নের ভূমি অফিস হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। জড়াজীর্ণ ঝুকিপূর্ন হওয়ায় পাশ^বর্তী ভবনে বর্তমানে ভূমি অফিসের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

১৯ মার্চ রবিবার রাতের অন্ধকারে কোন এক সময় ওই ভবনে বিভিন্ন ধরনে প্রতিমা স্থাপন করে দুর্বৃত্তরা। একই সাথে ওই স্থানে পাশের পাথৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের আবাসিক ছাত্রাবাসের একটি সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ২০ মার্চ সোমবার অফিসে এসে প্রতিমাগুলো দেখতে পেয়ে তাৎক্ষনিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মহোদয়কে অবগত করি।

বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হলে কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইবনে আল জায়েদ হোসেন,সাচার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. কবির হোসেন, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তুষ পোদ্দার, সাচার জগন্নাথ ধাম মন্দিরের সভাপতি বটু কৃষ্ণ বসু ও ইউপি সদস্য কাউছার আহমেদসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ঘটনাস্থলে পৌছে প্রতিমাগুলো অরক্ষিত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে সুরক্ষিত অবস্থায় পাশ^বর্তী সাচার দূর্গা মন্দিরে হস্তান্তর করেন।

পাথৈর গ্রামের অধিবাসী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, সোলেমান মিয়া ও আমিন মিয়া জানান, উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন সরকারি সম্পত্তিতে ছাত্রাবাস ও পাঠাগারের সাইনবোর্ড দিয়ে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। পরিত্যক্ত ভবনে প্রতিমা স্থাপন করে সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা করছে।

ভূমি অফিস সূত্রে জানাগেছে, সরকারের এই সম্পত্তি দখলের জন্য স্থানীয় অধিবাসী বিষ্ণুপদ আচার্য দেবত্য সম্পত্তি দাবি করে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালে ১২৮৩/১৮ একটি মামলা দায়ের করে। এছাড়া বায়না সূত্রে মালিকানা দাবী করে নুরুল ইসলাম ৭১/১৯৮৫ মামলা দায়ের করেন। মামলা দু’টি বিজ্ঞ আদালতে চলমান রয়েছে।

স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন জানান, আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুষ্কৃতিকারীরা হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যকার সম্প্রীতি বিনষ্ট করার পাঁয়তারা করছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।

জমিদার বাড়িতে পাথৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস ও পাঠাগারের সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছালেহা বেগম জানান, বিদ্যালয়ের নামে কে বা কাহার সাইনবোর্ড সাঁটিয়েছে আমার জানা নেই।

উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইবনে আল জায়েদ হোসেন জানান,সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থ পরিদর্শন করেছি এবং ওই স্থান থেকে প্রতিমাগুলো সরিয়ে সাচার দূর্গা মন্দিরে স্থানান্তর করা হয়েছে। ওই ইউনিয়নের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো.ইমাম হোসেন বাদী হয়ে এ ঘটনায় কচুয়া থানায় একটি লিখিত ডায়েরি দায়ের করেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ‘আপত্তিকর’ অবস্থায় ছাত্রীসহ প্রধান শিক্ষক আটক

কচুয়ায় পরিত্যক্ত ভবনে প্রতিমা ও বিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা

আপডেট সময় : ০৭:০৮:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৩

কচুয়া উপজেলার পাথৈর ইউনিয়নের রায় বাহাদুর চন্দ্র সেন জমিদার বাড়ির পরিত্যক্ত ভবনে রাতের অন্ধকারে প্রতিমা স্থাপন ও বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা করছে দুষ্কৃতিকারীরা।

Model Hospital

এ ঘটনায় পাথৈর ইউনিয়ন সহকারি কর্মকর্তা ইমাম হোসেন বাদী হয়ে কচুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, ২নং পাথৈর ইউনিয়নের ভূমি অফিস সংলগ্ন প্রায় সাড়ে ৭ একর সরকারের ভিপি সম্পত্তিতে অবস্থিত জমিদার বাড়ির পরিত্যক্ত ৩টি ভবন রয়েছে। দীর্ঘদিন রায়বাহাদুর শরৎ চন্দ্র সেন চৌধুরীরের বাড়িটি পাথৈর ইউনিয়নের ভূমি অফিস হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। জড়াজীর্ণ ঝুকিপূর্ন হওয়ায় পাশ^বর্তী ভবনে বর্তমানে ভূমি অফিসের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

১৯ মার্চ রবিবার রাতের অন্ধকারে কোন এক সময় ওই ভবনে বিভিন্ন ধরনে প্রতিমা স্থাপন করে দুর্বৃত্তরা। একই সাথে ওই স্থানে পাশের পাথৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের আবাসিক ছাত্রাবাসের একটি সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ২০ মার্চ সোমবার অফিসে এসে প্রতিমাগুলো দেখতে পেয়ে তাৎক্ষনিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মহোদয়কে অবগত করি।

বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হলে কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইবনে আল জায়েদ হোসেন,সাচার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. কবির হোসেন, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তুষ পোদ্দার, সাচার জগন্নাথ ধাম মন্দিরের সভাপতি বটু কৃষ্ণ বসু ও ইউপি সদস্য কাউছার আহমেদসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ঘটনাস্থলে পৌছে প্রতিমাগুলো অরক্ষিত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে সুরক্ষিত অবস্থায় পাশ^বর্তী সাচার দূর্গা মন্দিরে হস্তান্তর করেন।

পাথৈর গ্রামের অধিবাসী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, সোলেমান মিয়া ও আমিন মিয়া জানান, উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন সরকারি সম্পত্তিতে ছাত্রাবাস ও পাঠাগারের সাইনবোর্ড দিয়ে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। পরিত্যক্ত ভবনে প্রতিমা স্থাপন করে সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা করছে।

ভূমি অফিস সূত্রে জানাগেছে, সরকারের এই সম্পত্তি দখলের জন্য স্থানীয় অধিবাসী বিষ্ণুপদ আচার্য দেবত্য সম্পত্তি দাবি করে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালে ১২৮৩/১৮ একটি মামলা দায়ের করে। এছাড়া বায়না সূত্রে মালিকানা দাবী করে নুরুল ইসলাম ৭১/১৯৮৫ মামলা দায়ের করেন। মামলা দু’টি বিজ্ঞ আদালতে চলমান রয়েছে।

স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন জানান, আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুষ্কৃতিকারীরা হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যকার সম্প্রীতি বিনষ্ট করার পাঁয়তারা করছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।

জমিদার বাড়িতে পাথৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস ও পাঠাগারের সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছালেহা বেগম জানান, বিদ্যালয়ের নামে কে বা কাহার সাইনবোর্ড সাঁটিয়েছে আমার জানা নেই।

উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইবনে আল জায়েদ হোসেন জানান,সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থ পরিদর্শন করেছি এবং ওই স্থান থেকে প্রতিমাগুলো সরিয়ে সাচার দূর্গা মন্দিরে স্থানান্তর করা হয়েছে। ওই ইউনিয়নের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো.ইমাম হোসেন বাদী হয়ে এ ঘটনায় কচুয়া থানায় একটি লিখিত ডায়েরি দায়ের করেন।