ঢাকা ০৭:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানিতে ওদের জীবন-সংসার ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়না

সরকার পরিবর্তন হয়। পরিবর্তন হয় অনেক মানুষের, কিন্তু পরিবর্তন নেই ওদের ভাগ্যের। পানিতে জন্ম ওদের, পানিতে মৃত্যুও ওদের। জীবনও কাটে পানির ওপর। মতলব উত্তর মেঘনা নদীতে মাছ ধরে বংশানুক্রমে যুগ যুগ ধরে বেঁচে আছে ওরা। ওদেরও স্বপ্ন আছে, আমাদের মতো ঘর-বাড়িতে বসবাস করে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করা। কিন্তু ওদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে না কেউ।

Model Hospital

মতলবের মেঘনা-ধনাগোদা নদীতে বসবাস করছে এক শ্রেণীর জেলে সম্প্রদায়। জেলে হলেও এদের জীবনধারা অন্য জেলেদের মতো নয়। এদের জীবন কাটে মাটিতে নয় নৌকায়। জন্ম-মৃত্যু আর বসবাস নৌকাতেই। পরিবার-পরিজন নিয়েই নদীতেই ঘুরে মাছ দরে জীবন কাটে তাদের। পুরুষ-মহিলা এমনকি শিশু-কিশোরকেও একই কাজে জীবন কাটাতে হয়।

মতলব উত্তর উপজেলা সমাজসেবা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলায় ২২জন বেদে ভাতার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষাভাতা হিসেবে ৪জন শিক্ষার্থী ভাতা পাচ্ছে।

মতলবের মেঘনা নদীতে বসবাসকৃত এসব জেলে জানায়, তাদের পূর্ব পুরুষরাও যুগ যুগ ধরে নৌকাতেই বসবাস করেছেন। তাদের নৌকাতেই জন্ম, নৌকাতেই মৃত্যু। বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়া চাঁন বানু (৬৫) নামের এক বৃদ্ধা জানান, জন্মের পর থেকেই নৌকাতেই তাদের জীবনযাপন। বিভিন্ন নদীতে ঘুরে মাছ ধরে তা বাজারে বিক্রি করে অনেকটা মানবেতর জীবন কাটাতে হয় তাদের। তাদের কোনো ছেলেমেয়ে পায় না লেখাপড়ার সুযোগ। শিশু বয়স পার না হতেই মাছ ধরার কাজে লেগে যায় তারাও।

উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা নদীতে এমন পরিবার রয়েছে ২০০ টিরও বেশি। মাছ ধরা আর বাজারে নিয়ে বিক্রি করাই তাদের কাজ। নৌকাতেই কাটে তাদের দিন-রাত। জন্মের পর থেকেই তারা এখানে আছেন। তাদের আকাঙ্ক্ষা সমাজের আর দশজন মানুষের মতো ঘর-বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করার। তারাও স্বপ্ন দেখে তাদের সন্তান লেখাপড়া শিখে সমাজের বড় হবে। ভাগ্যের চাকা ঘুরবে তাদের। কিন্তু কখনোই তাদের এ স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ওদের সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। ওদের পরিবর্তনের জন্য আজও এগিয়ে আসেনি সরকার বা বেসরকারি সংস্থা। এখনও তাদের রোদ-ঝড়-বৃষ্টি আর মহাদুর্যোগও জীবন কাটে নৌকাতেই।

মতলব উত্তর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান তপু বলেন, বেদে সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে বর্তমান সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করেছে। তাদের ভাতা ও শিক্ষা ভাতার অন্তর্ভুক্ত করা এ সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বেদে সম্প্রদায়ের যুবদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা রয়েছে স্বাভলম্বী হওয়ার জন্য।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদগঞ্জে সালাতুল ইস্তেসকার নামাজ আদায়

পানিতে ওদের জীবন-সংসার ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়না

আপডেট সময় : ১০:০৯:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ মে ২০২৩

সরকার পরিবর্তন হয়। পরিবর্তন হয় অনেক মানুষের, কিন্তু পরিবর্তন নেই ওদের ভাগ্যের। পানিতে জন্ম ওদের, পানিতে মৃত্যুও ওদের। জীবনও কাটে পানির ওপর। মতলব উত্তর মেঘনা নদীতে মাছ ধরে বংশানুক্রমে যুগ যুগ ধরে বেঁচে আছে ওরা। ওদেরও স্বপ্ন আছে, আমাদের মতো ঘর-বাড়িতে বসবাস করে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করা। কিন্তু ওদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে না কেউ।

Model Hospital

মতলবের মেঘনা-ধনাগোদা নদীতে বসবাস করছে এক শ্রেণীর জেলে সম্প্রদায়। জেলে হলেও এদের জীবনধারা অন্য জেলেদের মতো নয়। এদের জীবন কাটে মাটিতে নয় নৌকায়। জন্ম-মৃত্যু আর বসবাস নৌকাতেই। পরিবার-পরিজন নিয়েই নদীতেই ঘুরে মাছ দরে জীবন কাটে তাদের। পুরুষ-মহিলা এমনকি শিশু-কিশোরকেও একই কাজে জীবন কাটাতে হয়।

মতলব উত্তর উপজেলা সমাজসেবা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলায় ২২জন বেদে ভাতার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষাভাতা হিসেবে ৪জন শিক্ষার্থী ভাতা পাচ্ছে।

মতলবের মেঘনা নদীতে বসবাসকৃত এসব জেলে জানায়, তাদের পূর্ব পুরুষরাও যুগ যুগ ধরে নৌকাতেই বসবাস করেছেন। তাদের নৌকাতেই জন্ম, নৌকাতেই মৃত্যু। বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়া চাঁন বানু (৬৫) নামের এক বৃদ্ধা জানান, জন্মের পর থেকেই নৌকাতেই তাদের জীবনযাপন। বিভিন্ন নদীতে ঘুরে মাছ ধরে তা বাজারে বিক্রি করে অনেকটা মানবেতর জীবন কাটাতে হয় তাদের। তাদের কোনো ছেলেমেয়ে পায় না লেখাপড়ার সুযোগ। শিশু বয়স পার না হতেই মাছ ধরার কাজে লেগে যায় তারাও।

উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা নদীতে এমন পরিবার রয়েছে ২০০ টিরও বেশি। মাছ ধরা আর বাজারে নিয়ে বিক্রি করাই তাদের কাজ। নৌকাতেই কাটে তাদের দিন-রাত। জন্মের পর থেকেই তারা এখানে আছেন। তাদের আকাঙ্ক্ষা সমাজের আর দশজন মানুষের মতো ঘর-বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করার। তারাও স্বপ্ন দেখে তাদের সন্তান লেখাপড়া শিখে সমাজের বড় হবে। ভাগ্যের চাকা ঘুরবে তাদের। কিন্তু কখনোই তাদের এ স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ওদের সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। ওদের পরিবর্তনের জন্য আজও এগিয়ে আসেনি সরকার বা বেসরকারি সংস্থা। এখনও তাদের রোদ-ঝড়-বৃষ্টি আর মহাদুর্যোগও জীবন কাটে নৌকাতেই।

মতলব উত্তর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান তপু বলেন, বেদে সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে বর্তমান সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করেছে। তাদের ভাতা ও শিক্ষা ভাতার অন্তর্ভুক্ত করা এ সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বেদে সম্প্রদায়ের যুবদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা রয়েছে স্বাভলম্বী হওয়ার জন্য।