মোঃ রাছেল : কচুয়ায় উপজেলার সাচার ইউনিয়নের রাগদৈল গ্রামের আকন্দ বাড়ির মোঃ মকবুল হোসেন (৪৮) নামের একজন বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।শনিবার সকালে তিনি বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।
নিহতের স্ত্রীর ভগ্নীপতি সিয়াম হোসেন জানান, ৩মাস পূর্বে সড়ক দূর্ঘটনায় মকবুলের হাত ভেঙ্গে যায়। তারপর আমরা তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্লাস্টার করিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসি। সপ্তাহ খানিক পরেই মকবুল নিজেই হাতের প্লাস্টার খুলে ফেলে। এতে তার হাতের ব্যথা বাড়তে থাকে। পরে বিভিন্ন এন্টিবায়োটিক ও ব্যথা নাশক ঔষধ খেয়ে ব্যথা কমলে আমরা আবার ঢাকার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করি। ডাক্তার এক্সে-রে করে দেখতে পায় তার হাতের রগ অন্য রগের সাথে জোড়া লেগে যায় এবং অপারেশন ছাড়া এই হাত জোড়া লাগানো যাবে না। অন্যদিকে মকবুলের ডায়াবেটিস বেশি হওয়ায় তার অপারেশন ও করা সম্ভব হচ্ছেনা।
একদিকে অভাবের সংসার, অন্যদিকে অপারেশনের টাকা জোগার করা তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে। গত দুইদিন যাবৎ সে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। শনিবার সকাল থেকে তার কোন খোঁজ-খবর পাওয়া যায়নি। সকাল ১১টার দিকে বাড়ির পাশের জমিতে পড়ে থাকতে দেখা যায় এবং তারপাশে একটি কীটনাশক ঔষদের বোতল পাওয়া যায়। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে নেওয়ারপথে তিনি মারা যান।
নিহত মকবুলে স্ত্রী শায়েরা বেগম জানান, আমার স্বামী স্থানীয় একটি মাদ্রাসার বাবুর্চী চাকরি করত। সড়ক দূর্ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন। একদিকে অপারেশনের টাকা জোগার অন্যদিকে অভাবের সংসার। দুইদিন ধরে চিন্তিত দেখা গেছে তাকে। অভারের কারনে শনিবার সকালে আমার স্বামী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। বড় মেয়েকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে, এক ছেলে নবম শ্রেনীর ছাত্র, ছোট ছেলে এখনো স্কুলে ভর্তি হয়নি। দূর্ঘটনার পরেই পরিবারের কেউ দায়িত্বশীল না থাকায় ভগ্নীপতি সিয়াম আমাদের পরিবারের সবসময় খোঁজ খবর রাখতেন।
এব্যাপারে কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন জানান,খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ আসলে প্রয়োজনীয় আইননানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।