ঢাকা ০২:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাইমচরে ফ্রি ফায়ারে আসক্ত কিশোরের আত্মহত্যা

মোঃ সাজ্জাদ হোসেন রনি : হাইমচরে পাবজি ফ্রি ফায়ারে আসক্ত ৮ম শ্রেনীর ছাত্র ১৫ বছর বয়সি এক কিশোর আত্মহত্যা করেছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে চরভৈরবী ইউনিয়নের দক্ষিন পাড়াবগুলা গ্রামের নিজ বাড়ির নিকটে একটি বাগানে গাছের সাথে ওড়না পেছিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা ঘটনাটি ঘটে। মৃত কিশোর ঐ গ্রামের দেলোয়ার গাজির ছেলে জনি গাজি (১৫)।
সরজমিনে গিয়ে জানাজায়, চরভৈরবী ইউনিয়নের দক্ষিন পাড়াবগুলা গ্রামের দেলোয়ার গাজি জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনের মত গতকাল বুধবার মাছ ধরতে যান নদীতে। স্ত্রীসহ তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে থাকেন ঘরে । তারা প্রতিদিনের মত সবাই রাতে ঘুমিয়ে থাকেন। মেঝো ছেলে জনি সকালে ভোরে ফজর নামাজ পড়তে স্থানীয় মসজিদে যান। নামাজ শেষে বাড়িতে এসে কিছুক্ষন পরই ঘর থেকে চলে যায়। চলে যাওয়ার এক থেকে দেড় ঘন্টা পর পাশ্ববর্তাী বাড়ির এক মহিলা ডাক চিৎকার শুনে বাগানে গিয়ে দেখেন কিশোর জনি গলায় ওড়না পেছিয়ে ফাঁস দিয়ে গাছের সাথে ঝুলে আছেন। তাৎক্ষনিক লোকজন হাইমচর থানায় জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে মৃত কিশোরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে হাইমচর থানা পুলিশ কিশোরের লাস ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরন করেন।
স্থানীয় কয়েকজন মহিলার কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, ছেলেটি মোবাইলে আসক্ত ছিল। ফ্রিফায়ার গেম্স খেলতে খেলতে তার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তারা জানতে পেরেছেন মবোইলে গেম্স খেলার নেশায় ছেলেটি ঠিকমত স্কুলে যেত না। তাই তার বাবা তাকে গেম্স না খেলার জন্য নিষেধ করেন। হয়তো রাগে ক্ষোভে সে আত্মহত্যা করেছে বলে তাদের ধারনা ।
কিশোরের পিতা দেলোয়ার গাজি জানান, প্রতিদিনের মত গতকালকেও আমি নদীতে মাছ ধরতে যাই। সকালে আমাকে ফোন করে বলে বাড়িতে আসতে। এখন এসে দেখি আমার ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। কেন আত্মহত্যা করলো কিকারনে করলো আমার কিছুই জানানেই।
কিশোরের মা’ জলেখা বেগম বলেন, আমার ছেলের সাথে কারো কোন শত্রুতা ছিলনা। সে মাঝে মধ্যে স্কুলে যেত। নদীতেও মাছ ধরতো। রাতে ঘুমানোর সময় আমাকে বললো মা’ আমাকে ফজরের নামাজের সময় উঠিয়ে দিয়েন। আমি নামাজ পড়বো। সে নিজে নিজে ভোরে নামাজ পড়তে যায়। নামাজ পড়ে এসে আবার বাহিরে যায়। বাহিরে গিয়ে বাবা আর ঘরে আসে না। লোকজনের চিৎকার শুনে বাগানে গিয়ে দেখি বাবা আমার গাছের সাথে ঝুলে আছে। তিনি বলেন, আমার ছেলের অনেক রাগ ছিল। কোন কিছু বললেই রেগে যেত। কথা একেবারেই কম বলতো। মাথায়ও সমস্যা থাকার করনে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
হাইমচর থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন জানান, গলায় ফাঁস দিয়ে কিশোরের আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাস উদ্ধার করে চাঁদপুর মর্গে পাঠিয়েছি। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা যাচ্ছে বাবা’ মা’র শাসনের ফলে রাগান্বিত হয়ে ছেলেটি আত্মহত্যা করে।
ট্যাগস :

চাঁদপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আলোচনা সভা

হাইমচরে ফ্রি ফায়ারে আসক্ত কিশোরের আত্মহত্যা

আপডেট সময় : ০৪:১৪:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ মে ২০২২
মোঃ সাজ্জাদ হোসেন রনি : হাইমচরে পাবজি ফ্রি ফায়ারে আসক্ত ৮ম শ্রেনীর ছাত্র ১৫ বছর বয়সি এক কিশোর আত্মহত্যা করেছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে চরভৈরবী ইউনিয়নের দক্ষিন পাড়াবগুলা গ্রামের নিজ বাড়ির নিকটে একটি বাগানে গাছের সাথে ওড়না পেছিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা ঘটনাটি ঘটে। মৃত কিশোর ঐ গ্রামের দেলোয়ার গাজির ছেলে জনি গাজি (১৫)।
সরজমিনে গিয়ে জানাজায়, চরভৈরবী ইউনিয়নের দক্ষিন পাড়াবগুলা গ্রামের দেলোয়ার গাজি জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনের মত গতকাল বুধবার মাছ ধরতে যান নদীতে। স্ত্রীসহ তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে থাকেন ঘরে । তারা প্রতিদিনের মত সবাই রাতে ঘুমিয়ে থাকেন। মেঝো ছেলে জনি সকালে ভোরে ফজর নামাজ পড়তে স্থানীয় মসজিদে যান। নামাজ শেষে বাড়িতে এসে কিছুক্ষন পরই ঘর থেকে চলে যায়। চলে যাওয়ার এক থেকে দেড় ঘন্টা পর পাশ্ববর্তাী বাড়ির এক মহিলা ডাক চিৎকার শুনে বাগানে গিয়ে দেখেন কিশোর জনি গলায় ওড়না পেছিয়ে ফাঁস দিয়ে গাছের সাথে ঝুলে আছেন। তাৎক্ষনিক লোকজন হাইমচর থানায় জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে মৃত কিশোরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে হাইমচর থানা পুলিশ কিশোরের লাস ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরন করেন।
স্থানীয় কয়েকজন মহিলার কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, ছেলেটি মোবাইলে আসক্ত ছিল। ফ্রিফায়ার গেম্স খেলতে খেলতে তার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তারা জানতে পেরেছেন মবোইলে গেম্স খেলার নেশায় ছেলেটি ঠিকমত স্কুলে যেত না। তাই তার বাবা তাকে গেম্স না খেলার জন্য নিষেধ করেন। হয়তো রাগে ক্ষোভে সে আত্মহত্যা করেছে বলে তাদের ধারনা ।
কিশোরের পিতা দেলোয়ার গাজি জানান, প্রতিদিনের মত গতকালকেও আমি নদীতে মাছ ধরতে যাই। সকালে আমাকে ফোন করে বলে বাড়িতে আসতে। এখন এসে দেখি আমার ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। কেন আত্মহত্যা করলো কিকারনে করলো আমার কিছুই জানানেই।
কিশোরের মা’ জলেখা বেগম বলেন, আমার ছেলের সাথে কারো কোন শত্রুতা ছিলনা। সে মাঝে মধ্যে স্কুলে যেত। নদীতেও মাছ ধরতো। রাতে ঘুমানোর সময় আমাকে বললো মা’ আমাকে ফজরের নামাজের সময় উঠিয়ে দিয়েন। আমি নামাজ পড়বো। সে নিজে নিজে ভোরে নামাজ পড়তে যায়। নামাজ পড়ে এসে আবার বাহিরে যায়। বাহিরে গিয়ে বাবা আর ঘরে আসে না। লোকজনের চিৎকার শুনে বাগানে গিয়ে দেখি বাবা আমার গাছের সাথে ঝুলে আছে। তিনি বলেন, আমার ছেলের অনেক রাগ ছিল। কোন কিছু বললেই রেগে যেত। কথা একেবারেই কম বলতো। মাথায়ও সমস্যা থাকার করনে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
হাইমচর থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন জানান, গলায় ফাঁস দিয়ে কিশোরের আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাস উদ্ধার করে চাঁদপুর মর্গে পাঠিয়েছি। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা যাচ্ছে বাবা’ মা’র শাসনের ফলে রাগান্বিত হয়ে ছেলেটি আত্মহত্যা করে।