ঢাকা ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

মনিরুল ইসলাম মনির : ইলিশের মৌসুমকে সামনে রেখে মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনায় মাছ ধরার নৌকার কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতিমধ্যে ছোট বড় প্রায় শতাধিক নৌকা তৈরি করা হয়েছে। এসব নৌকায় ইঞ্জিন বসানোসহ রংয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। বছরের অন্য মাসগুলো যেমনই কাটুক, দুই মাস পদ্মা মেঘনা নদীতে দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এ সময়ের অপেক্ষায় তারা অধির আগ্রহে বসে থাকেন। কারণ আড়তদাররা তাদের মৌসুমি ব্যবসার জন্য নৌকা তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঠ কিনে মজুদ করতে থাকে। আর তখনই বেড়ে যায় কারিগরদের কদর। তারাও প্রস্তুত থাকে নৌকা তৈরির যন্ত্রপাতি নিয়ে। যেমন- হাতুড়ি, বাটাল, করাত ইত্যাদি।

Model Hospital

জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল, এখলাছপুর, মোহনপুর, কলাকান্দা, ফরাজীকান্দি ও জহিরাবাদ ইউনিয়নে অসংখ্য মানুষ মেঘনায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। আর নদীতে মাছ ধরার অন্যতম উপকরণ হচ্ছে নৌকা বা ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। প্রতিবছর ইলিশ মৌসুম সামনে রেখে এসব ইউনিয়নের নদী পাড়ে নৌকা তৈরি বা মেরামতের হিড়িক পড়ে যায়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি, জোরেশোরে চলছে নৌকা তৈরির কাজ। তাই বাজারে কাঠের দাম একটু বেশি হলেও কারিগররা নৌকা তৈরিতে মনোযোগ দিয়েছেন।

সরেজমিন ঘুরে ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের কাচারীকান্দি এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নৌকা তৈরি ও মেরামতের দৃশ্য দেখা গেছে। কাঠমিস্ত্রীদের পাশাপাশি নৌকার মালিকরা নৌকা তৈরির উপকরণ সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

রোকন মাঝি বলেন, মৎস্য আহরণ করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করি। নদী তীরবর্তী মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে নৌকা জড়িত। এ জন্য ইলিশের মৌসুম আসার আগে-ভাগে নৌকা তৈরি ও পুরাতন নৌকা মেরামত করে থাকি। একটি নৌকা তৈরি করতে খরচ হয় আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ টাকা। আর বড় ট্রলার হলে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা খরচ পড়ে। নৌকার কারিগর (কাঠমিস্ত্রী) ধনরাজ জানান, ছোট-বড় নৌকা তৈরিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে গর্জন, মেহেগুনী, আকাশি, কাঁঠাল, কড়ই রেন্টি গাছের কাঠ বেশি ব্যবহার হয়। তবে এ নৌকাগুলো লোহা কাঠ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, উপজেলায় অর্ধ শতাধিক কাঠমিস্ত্রী রয়েছে। কম আর বেশি সকলে এখন নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। তাদের পাশাপাশি আরও অন্তত কয়েকশ হেলপার এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। প্রতিবছর এ সময়ে নৌকা তৈরির হিড়িক পড়ে যায়। একটি নৌকা তৈরি করতে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগে। নৌকার আকার ও প্রকার ভেদে মজুরি নেওয়া হয়। তবে একটি নৌকা তৈরি করতে কমপক্ষে ৩০-৫০ হাজার টাকা মজুরি আসে।

মতলব উত্তর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম জানান, জেলেরা মেঘনায় মাছ শিকার করে প্রকৃত সুবিধা পায়না। তারা মহাজনের দাদন ও বিভিন্ন লোন নিয়ে থাকে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদগঞ্জে সালাতুল ইস্তেসকার নামাজ আদায়

নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

আপডেট সময় : ০৫:২৮:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ ২০২২

মনিরুল ইসলাম মনির : ইলিশের মৌসুমকে সামনে রেখে মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনায় মাছ ধরার নৌকার কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতিমধ্যে ছোট বড় প্রায় শতাধিক নৌকা তৈরি করা হয়েছে। এসব নৌকায় ইঞ্জিন বসানোসহ রংয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। বছরের অন্য মাসগুলো যেমনই কাটুক, দুই মাস পদ্মা মেঘনা নদীতে দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এ সময়ের অপেক্ষায় তারা অধির আগ্রহে বসে থাকেন। কারণ আড়তদাররা তাদের মৌসুমি ব্যবসার জন্য নৌকা তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঠ কিনে মজুদ করতে থাকে। আর তখনই বেড়ে যায় কারিগরদের কদর। তারাও প্রস্তুত থাকে নৌকা তৈরির যন্ত্রপাতি নিয়ে। যেমন- হাতুড়ি, বাটাল, করাত ইত্যাদি।

Model Hospital

জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল, এখলাছপুর, মোহনপুর, কলাকান্দা, ফরাজীকান্দি ও জহিরাবাদ ইউনিয়নে অসংখ্য মানুষ মেঘনায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। আর নদীতে মাছ ধরার অন্যতম উপকরণ হচ্ছে নৌকা বা ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। প্রতিবছর ইলিশ মৌসুম সামনে রেখে এসব ইউনিয়নের নদী পাড়ে নৌকা তৈরি বা মেরামতের হিড়িক পড়ে যায়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি, জোরেশোরে চলছে নৌকা তৈরির কাজ। তাই বাজারে কাঠের দাম একটু বেশি হলেও কারিগররা নৌকা তৈরিতে মনোযোগ দিয়েছেন।

সরেজমিন ঘুরে ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের কাচারীকান্দি এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নৌকা তৈরি ও মেরামতের দৃশ্য দেখা গেছে। কাঠমিস্ত্রীদের পাশাপাশি নৌকার মালিকরা নৌকা তৈরির উপকরণ সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

রোকন মাঝি বলেন, মৎস্য আহরণ করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করি। নদী তীরবর্তী মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে নৌকা জড়িত। এ জন্য ইলিশের মৌসুম আসার আগে-ভাগে নৌকা তৈরি ও পুরাতন নৌকা মেরামত করে থাকি। একটি নৌকা তৈরি করতে খরচ হয় আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ টাকা। আর বড় ট্রলার হলে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা খরচ পড়ে। নৌকার কারিগর (কাঠমিস্ত্রী) ধনরাজ জানান, ছোট-বড় নৌকা তৈরিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে গর্জন, মেহেগুনী, আকাশি, কাঁঠাল, কড়ই রেন্টি গাছের কাঠ বেশি ব্যবহার হয়। তবে এ নৌকাগুলো লোহা কাঠ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, উপজেলায় অর্ধ শতাধিক কাঠমিস্ত্রী রয়েছে। কম আর বেশি সকলে এখন নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। তাদের পাশাপাশি আরও অন্তত কয়েকশ হেলপার এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। প্রতিবছর এ সময়ে নৌকা তৈরির হিড়িক পড়ে যায়। একটি নৌকা তৈরি করতে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগে। নৌকার আকার ও প্রকার ভেদে মজুরি নেওয়া হয়। তবে একটি নৌকা তৈরি করতে কমপক্ষে ৩০-৫০ হাজার টাকা মজুরি আসে।

মতলব উত্তর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম জানান, জেলেরা মেঘনায় মাছ শিকার করে প্রকৃত সুবিধা পায়না। তারা মহাজনের দাদন ও বিভিন্ন লোন নিয়ে থাকে।