ঢাকা ০২:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাঁদপুরে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ না হতেই নববধূর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা

মাসুদ হোসেন : চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নে বিয়ের এক সপ্তাহের মাথায় গলায় ফাঁস দিয়ে আছমা আক্তার নামে এক নববধূ আত্মহত্যা করেছেন।
বুধবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। তবে আত্মহত্যার পেছনের কারন নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। মৃত আছমা আক্তার (১৮) চাঁদপুর সদর উপজেলার ২নং আশিকাটি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সেনগাঁও গ্রামের গাজী বাড়ির আব্দুল আজিজের বড় মেয়ে।
নিহত আছমা আক্তারের বাবা আঃ আজিজ বলেন, গত শুক্রবার ৪ মার্চ পারিবারিকভাবে মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালের পর্ব এলাকার ছোবহান বেপারী সঙ্গে আছমা আক্তারের বিয়ে হয়। এরপরদিন শনিবার ছেলের বাড়ি আমরা গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়ে ও তার স্বামীকে আনি। পরবর্তীতে গত সোমবার আছমা আক্তারের স্বামী ছোবহান চলে যায় তার কর্মস্থলে। জানা যায়, ঢাকায় একটি কাপড়ের দোকানের কর্মচারীর চাকরি করতেন ছোবহান। কিন্তু কোন কিছু না জানার আগেই বিয়ের পাঁচ দিনের মাথায় সে বাবার বাড়িতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
তিনি আরো বলেন, আমি ও তার মা ঘটনার দিন দুপুর ২টার দিকে চাঁদপুরের মুন হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যাই। যাওয়ার সময় আছমার স্বামী ছোবহান বৃহস্পতিবার আমাদের বাড়িতে আসার কথা থাকায় তাকে চালের গুড়া করতে দেখতে পাই। নিহত আছমার আক্তারের মেঝো বোন মরিয়ম আক্তার জানায়, আমি আমার অসুস্থ দাদুকে ডাকতে যাই আমার ছোট কাকার ঘরে। পরে আসার সময় আপু যে ঘরে থাকতো সে ঘরে আপুকে ডাকতে গিয়ে কোন সাড়া শব্দ পাই না এবং ঘরের দরজা বন্ধ থাকায় একটি জানালা দিয়ে দেখি আপু ঘরের আড়ার সাথে ঝুলে আছে। আমার ডাক চিৎকারে ছোট চাচা হাবিব গাজীসহ প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে আপুকে নিচে নামায়। এবং বাবা মাকে জানান।
পরিবারের দেয়া তথ্য মতে, নিহত আছমা আক্তার এম এম নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। তার সম্মতি নিয়েই আমরা এ বিয়ের আয়োজন করি। এ কয়দিনে স্বামীর সাথেও ছিল ভালো সম্পর্ক। তবে সে কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। এদিকে এম এম নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি। তবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার স্কুল এসে জানতে পারবো আছমা আক্তার কত সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থল আসেন আশিকাটি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মহসিন মৃধা, ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বিল্লাল বেপারী, ডিএসবির সদস্যরা। সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মহসিন মৃধা জানান, আমি খবর শুনে ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু কোন সমস্যা আছে কিনা তা এখনো জানা যায়নি। খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ বলেন, আমি নববধূ আছমা আক্তারের আত্মহত্যার ঘটনাটি শুনেছি। ওখানে মডেল থানা পুলিশের এসআই শাহাজান গিয়েছে। লাশ উদ্ধার করে মডেল থানায় আনার পর সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে বৃহস্পতিবার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সমবেদনা জানান জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ

চাঁদপুরে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ না হতেই নববধূর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা

আপডেট সময় : ০৩:৫৪:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ মার্চ ২০২২
মাসুদ হোসেন : চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নে বিয়ের এক সপ্তাহের মাথায় গলায় ফাঁস দিয়ে আছমা আক্তার নামে এক নববধূ আত্মহত্যা করেছেন।
বুধবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। তবে আত্মহত্যার পেছনের কারন নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। মৃত আছমা আক্তার (১৮) চাঁদপুর সদর উপজেলার ২নং আশিকাটি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সেনগাঁও গ্রামের গাজী বাড়ির আব্দুল আজিজের বড় মেয়ে।
নিহত আছমা আক্তারের বাবা আঃ আজিজ বলেন, গত শুক্রবার ৪ মার্চ পারিবারিকভাবে মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালের পর্ব এলাকার ছোবহান বেপারী সঙ্গে আছমা আক্তারের বিয়ে হয়। এরপরদিন শনিবার ছেলের বাড়ি আমরা গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়ে ও তার স্বামীকে আনি। পরবর্তীতে গত সোমবার আছমা আক্তারের স্বামী ছোবহান চলে যায় তার কর্মস্থলে। জানা যায়, ঢাকায় একটি কাপড়ের দোকানের কর্মচারীর চাকরি করতেন ছোবহান। কিন্তু কোন কিছু না জানার আগেই বিয়ের পাঁচ দিনের মাথায় সে বাবার বাড়িতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
তিনি আরো বলেন, আমি ও তার মা ঘটনার দিন দুপুর ২টার দিকে চাঁদপুরের মুন হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যাই। যাওয়ার সময় আছমার স্বামী ছোবহান বৃহস্পতিবার আমাদের বাড়িতে আসার কথা থাকায় তাকে চালের গুড়া করতে দেখতে পাই। নিহত আছমার আক্তারের মেঝো বোন মরিয়ম আক্তার জানায়, আমি আমার অসুস্থ দাদুকে ডাকতে যাই আমার ছোট কাকার ঘরে। পরে আসার সময় আপু যে ঘরে থাকতো সে ঘরে আপুকে ডাকতে গিয়ে কোন সাড়া শব্দ পাই না এবং ঘরের দরজা বন্ধ থাকায় একটি জানালা দিয়ে দেখি আপু ঘরের আড়ার সাথে ঝুলে আছে। আমার ডাক চিৎকারে ছোট চাচা হাবিব গাজীসহ প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে আপুকে নিচে নামায়। এবং বাবা মাকে জানান।
পরিবারের দেয়া তথ্য মতে, নিহত আছমা আক্তার এম এম নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। তার সম্মতি নিয়েই আমরা এ বিয়ের আয়োজন করি। এ কয়দিনে স্বামীর সাথেও ছিল ভালো সম্পর্ক। তবে সে কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। এদিকে এম এম নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি। তবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার স্কুল এসে জানতে পারবো আছমা আক্তার কত সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থল আসেন আশিকাটি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মহসিন মৃধা, ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বিল্লাল বেপারী, ডিএসবির সদস্যরা। সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মহসিন মৃধা জানান, আমি খবর শুনে ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু কোন সমস্যা আছে কিনা তা এখনো জানা যায়নি। খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ বলেন, আমি নববধূ আছমা আক্তারের আত্মহত্যার ঘটনাটি শুনেছি। ওখানে মডেল থানা পুলিশের এসআই শাহাজান গিয়েছে। লাশ উদ্ধার করে মডেল থানায় আনার পর সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে বৃহস্পতিবার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।