ঢাকা ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মতলব উত্তরের জাতীয় তথ্য বাতায়নে ভুল,তথ্যের ছড়াছড়ি

জাতীয় তথ্য বাতায়নের মতলব উত্তর উপজেলার ওয়েব পোর্টালগুলো বর্তমানে বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে। অধিকাংশ পোর্টাল হালনাগাদ না হওয়া বা ভুল তথ্য থাকার কারণে সাধারণ মানুষ ডিজিটাল সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছন। সরকারের উদ্যোগে চালু হওয়া এই পোর্টালগুলোর উদ্দেশ্য ছিল জনগণের হাতের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া, কিংবা এসব পোর্টালের অব্যবস্থনা সেই লক্ষ্যকে ব্যাহত করছে।

মতলব উত্তর উপজেলার ওয়েব পোর্টালগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, বেশিরভাগ পোর্টালে পুরোনো তথ্য দিয়ে ভরা। কিছু পোর্টালে এমনকি মৃত ব্যক্তিদের নাম ও ফোন নম্বরও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পোর্টালে উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেনের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ তিনি আট মাস আগে মৃত্যুবরণ করেছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের পোর্টালও চার বছর আগে শেষবার হালনাগাদ হয়েছে। সেখানে এখনও ডা. নুসরাত জাহান মিথেনের নাম রয়েছে, যিনি বহু আগে বদলি হয়েছেন। থানা পোর্টালেও বর্তমান অফিসার ইনচার্জ মো. রবিউল হকের নাম নেই। এর পরিবর্তে পুরোনো অফিসার ইনচার্জ শহিদ হোসেনের নাম রয়েছে।

মতলব উত্তর উপজেলায় প্রায় ২০০টির বেশি প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উ”চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তুপোর্টালে এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো তথ্য নেই। পোর্টালের প্রতিটি ঘর ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ফলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না। জনগণ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের তথ্য পেতে জাতীয় তথ্য বাতায়নের পোর্টাল ব্যবহার করেন।

Model Hospital

কিন্তু পোর্টালের ভুল তথ্যের কারণে তারা বিভ্রান্ত হয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন স্থানীয় বাসিন্দা যখন উপজেলাস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারের নম্বর সংগ্রহ করেন, তখন সেটি বদলি হয়ে যাওয়া ডাক্তারের নম্বর হিসেবে পাওয়া যায়। একজন অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, পোর্টালগুলোতে যে সামান্য তথ্য আপলোড করা আছে তার অধিকাংশই ভুল।

এতে আমাদের তথ্য নেওয়ার আগ্রহই কমে গেছে। উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার মো. শাহজাহান জানিয়েছেন, দপ্তরগুলোর উদাসীনতার কারণে পোর্টালগুলো হালনাগাদ হচ্ছে না। বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও সংশ্লিষ্টরা সাড়া দেন না। এছাড়া পোর্টালের ধরন পরিবর্তন হওয়ায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হারিয়ে গেছে বলেও তিনি জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একি মিত্র চাকমা বলেন, পোর্টালগুলোর তথ্য হালনাগাদ করতে দপ্তর প্রধানদের একাধিকবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিছু পোর্টাল হালনাগাদ হয়েছে, বাকিগুলোও দ্রুত হালনাগাদ করতে মনিটরিং চলছে। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, জাতীয় তথ্য বাতায়ন নিয়মিত হালনাগাদ হলে জনগণ সহজেই প্রয়োজনীয় তথ্য পাবে এবং সরকারের ডিজিটাল সেবা বাস্তবায়নের লক্ষ্য পূরণ হবে।

তবে এটি সম্ভব করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর আরও আন্তরিকতা এবং প্রশাসনের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের অন্যতম মাধ্যম এই জাতীয় তথ্য বাতায়ন। তাই এটি সচল রাখার মাধ্যমে জনগণের তথ্য সেবা নিশ্চিত করা সরকারের প্রতি জনগণের চাওয়া।

ট্যাগস :

রামপুর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু জাফর মাঈনুদ্দিন আর নেই

মতলব উত্তরের জাতীয় তথ্য বাতায়নে ভুল,তথ্যের ছড়াছড়ি

আপডেট সময় : ০৬:৫১:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

জাতীয় তথ্য বাতায়নের মতলব উত্তর উপজেলার ওয়েব পোর্টালগুলো বর্তমানে বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে। অধিকাংশ পোর্টাল হালনাগাদ না হওয়া বা ভুল তথ্য থাকার কারণে সাধারণ মানুষ ডিজিটাল সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছন। সরকারের উদ্যোগে চালু হওয়া এই পোর্টালগুলোর উদ্দেশ্য ছিল জনগণের হাতের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া, কিংবা এসব পোর্টালের অব্যবস্থনা সেই লক্ষ্যকে ব্যাহত করছে।

মতলব উত্তর উপজেলার ওয়েব পোর্টালগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, বেশিরভাগ পোর্টালে পুরোনো তথ্য দিয়ে ভরা। কিছু পোর্টালে এমনকি মৃত ব্যক্তিদের নাম ও ফোন নম্বরও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পোর্টালে উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেনের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ তিনি আট মাস আগে মৃত্যুবরণ করেছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের পোর্টালও চার বছর আগে শেষবার হালনাগাদ হয়েছে। সেখানে এখনও ডা. নুসরাত জাহান মিথেনের নাম রয়েছে, যিনি বহু আগে বদলি হয়েছেন। থানা পোর্টালেও বর্তমান অফিসার ইনচার্জ মো. রবিউল হকের নাম নেই। এর পরিবর্তে পুরোনো অফিসার ইনচার্জ শহিদ হোসেনের নাম রয়েছে।

মতলব উত্তর উপজেলায় প্রায় ২০০টির বেশি প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উ”চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তুপোর্টালে এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো তথ্য নেই। পোর্টালের প্রতিটি ঘর ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ফলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না। জনগণ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের তথ্য পেতে জাতীয় তথ্য বাতায়নের পোর্টাল ব্যবহার করেন।

Model Hospital

কিন্তু পোর্টালের ভুল তথ্যের কারণে তারা বিভ্রান্ত হয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন স্থানীয় বাসিন্দা যখন উপজেলাস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারের নম্বর সংগ্রহ করেন, তখন সেটি বদলি হয়ে যাওয়া ডাক্তারের নম্বর হিসেবে পাওয়া যায়। একজন অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, পোর্টালগুলোতে যে সামান্য তথ্য আপলোড করা আছে তার অধিকাংশই ভুল।

এতে আমাদের তথ্য নেওয়ার আগ্রহই কমে গেছে। উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার মো. শাহজাহান জানিয়েছেন, দপ্তরগুলোর উদাসীনতার কারণে পোর্টালগুলো হালনাগাদ হচ্ছে না। বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও সংশ্লিষ্টরা সাড়া দেন না। এছাড়া পোর্টালের ধরন পরিবর্তন হওয়ায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হারিয়ে গেছে বলেও তিনি জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একি মিত্র চাকমা বলেন, পোর্টালগুলোর তথ্য হালনাগাদ করতে দপ্তর প্রধানদের একাধিকবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিছু পোর্টাল হালনাগাদ হয়েছে, বাকিগুলোও দ্রুত হালনাগাদ করতে মনিটরিং চলছে। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, জাতীয় তথ্য বাতায়ন নিয়মিত হালনাগাদ হলে জনগণ সহজেই প্রয়োজনীয় তথ্য পাবে এবং সরকারের ডিজিটাল সেবা বাস্তবায়নের লক্ষ্য পূরণ হবে।

তবে এটি সম্ভব করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর আরও আন্তরিকতা এবং প্রশাসনের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের অন্যতম মাধ্যম এই জাতীয় তথ্য বাতায়ন। তাই এটি সচল রাখার মাধ্যমে জনগণের তথ্য সেবা নিশ্চিত করা সরকারের প্রতি জনগণের চাওয়া।