ঢাকা ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শখ যখন পেশা

নার্সারি করে বেকার থেকে স্বাবলম্বী সোহাগ মজুমদার

গোলাপ, ড্রাগন ফুল, নাইট কুইন, ক্যাকটাস, গাঁদাফুল, রজনীগন্ধা, সূর্যমুখীসহ প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ রকমের ফুল। বাহারী এই ফুল-ফলের সমারোহের পাশাপাশি থাই পেয়ারা, বারি ফোর মাল্টা, নাসপাতি, আপেল কুল, বাউ কুল, পেয়ারা, আমের কলমি, লিচুর কলমি, আমলকি, বহরা, হরতকি, জাম সহ ৫০-৬০ রকমের কলমি চারা সোহাগের নার্সারীতে। সোহাগের নার্সারিতে ২ জন লোক কাজ করে জীবীকাও নির্বাহ করেন। প্রথমে যৌথ ভাবে, পরে জমি বর্গা নিয়ে দেন নার্সারী। তার এ সফলতার গল্প তুলে ধরেছেন প্রিয় চাঁদপুর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. রাছেল…

কচুয়া-গুলবাহার বাইপাস সড়কের ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম পাশে মনপুরা গ্রামে গড়ে তুলেছেন মজুমদার নার্সারি।

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার কাদলা ইউনিয়নের মনপুরা গ্রামের বাসিন্দা সোহাগ মজুমদার একজন সফল নার্সারী উদ্যোক্তা। সোহাগের রয়েছে স্ত্রী ও এক মেয়ে। তার এ নার্সারীতে দুইজন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করেন। নিজের জমি না থাকায় জমি বর্গা নিয়ে বড় ভাইয়ের সাথে প্রথমে যৌথ ভাবে নার্সারী দেন তিনি। পরবর্তীতে আলাদা ভাবে পাঁচ লক্ষ টাকা পূজিঁ নিয়ে গড়ে তুলেছেন এক বৃহৎ নার্সারি।

জানা যায়, উপজেলায় তার নার্সারীটি বৃহৎ। নার্সারিতে রয়েছে ফলের মধ্যে থাই পেয়ারা, বারি ফোর মাল্টা, নাসপাতি, আপেল কুল, বাউ কুল, পেয়ারা, আমের কলমি, লিচুর কলমি, আমলকি, বহরা, হরতকি, জামের কলমিসহ প্রায় ৫০-৬০ রকমের কলমি চারা।

এছাড়া ফুলের মাঝে বিশেষ করে রয়েছে, গোলাপ, ড্রাগন ফুল, নাইট কুইন, ক্যাকটাস, গাঁদাফুল, রজনীগন্ধা, সূর্যমুখীসহ প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ রকমের ফুল। বাহারী এই ফুল-ফলের সমারোহে গড়ে উঠা নার্সারিতে সোহাগ মজুমদার খুঁজে নিয়েছেন নিজের ভবিষ্যৎ। বর্তমানে তার নার্সারীতে রয়েছেন ৯লক্ষ টাকার পূজিঁ। প্রাকৃতিক দূর্যোগ বন্যার কারনে তার নার্সারীতে তেমন একটা বিক্রি নেই। তবে প্রতিকূলতা কাটিয়ে পূনরায় বিক্রির ধুম পড়বে বলে জানান তিনি।

Model Hospital

তাছাড়া এ নার্সারী থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কুরিয়ারের মাধ্যমে বিভিন্ন ফলজ,বনজ ও ফুলের চারা সরবরাহ করা হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার দক্ষ হাতের ছোঁয়ায়, আমগাছে লিচু, লিচু গাছে জাম এর কলমি ডাল গজিয়েছে। গুলবাহার-মনপুরা সড়কের পাশেই গড়ে ওঠায় সারাদেশের আনাচে-কানাচে মানুষ পাইকারি ও খুচরা দামে ওইখান থেকে গাছ কিনে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি ওই নার্সারীতে ৪০ শতাংশ চারা উৎপাদন করছেন। আশা করছেন ভবিষ্যতে তিনি ৬০ শতাংশ চারা এ নার্সারীতে উৎপাদন করবেন বলে জানান তিনি।

নার্সারী উদ্যোক্তা সোহাগ মজুমদার জানান, তাদের কাছ অনেকে কলমি চারা কিনে নিয়ে তারাও আজ অনেক লাভবান। অনেকেই তাদের চারা কিনে নিয়ে আজ প্রতিষ্ঠিত ফলের ব্যবসায়ী হয়েছেন। প্রায় ২৫ বছর ধরে হাতে কলমে আর কঠোর পরিশ্রমে গড়ে উঠা মজুমদার নার্সারিটি। তার নার্সারিতে ২ জন লোক সবসময় কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করে থাকেন।

সোহাগ মজুমদারের স্বপ্ন নিজে জমি কিনে আরো বড় পরিসরে গড়ে তুলবেন নার্সারি। সারাদেশসহ তার কলমি গাছ রপ্তানি হবে, সেজন্য দরকার সরকারি পৃষ্টপোষকতার। দীর্ঘদিনের নার্সারীর কাজের অভিজ্ঞতায় সোহাগ মজুমদার আজ অনেকের কাছেই একটি অনুপ্রেরণার নাম।

নার্সারী শ্রমিক মহিন উদ্দিন মিয়াজী বলেন, আমি এ নার্সারীতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। নার্সরিী দিয়ে আমার পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হয়। এ নার্সারীতে বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের চারা রয়েছে। স্বল্পমূল্যে গাছের চারা বিক্রি করা হয়।

কচুয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, মজুমদার নার্সারির নাম শুনেছি, নার্সারী একটি তরুন যুবক শ্রেনী রয়েছে তাদের জন্য একটি আয়বর্ধক কার্যক্রম। যার নার্সারী পেশায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবে।

প্রাকৃতিক ভাবে অকৃত্রিম যে আনন্দ পাবে, পাশাপাশি আয় উপার্জনের ব্যবস্থা হবে। সোহাগ মজুমদারের মতো কেউ যদি নার্সারী ও আয়বর্ধক উপার্জন করতে চায় তাহলে কৃষি বিভাগ তাদের সার্বিক সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।

ট্যাগস :

রামপুর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু জাফর মাঈনুদ্দিন আর নেই

শখ যখন পেশা

নার্সারি করে বেকার থেকে স্বাবলম্বী সোহাগ মজুমদার

আপডেট সময় : ০৫:৫৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪
গোলাপ, ড্রাগন ফুল, নাইট কুইন, ক্যাকটাস, গাঁদাফুল, রজনীগন্ধা, সূর্যমুখীসহ প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ রকমের ফুল। বাহারী এই ফুল-ফলের সমারোহের পাশাপাশি থাই পেয়ারা, বারি ফোর মাল্টা, নাসপাতি, আপেল কুল, বাউ কুল, পেয়ারা, আমের কলমি, লিচুর কলমি, আমলকি, বহরা, হরতকি, জাম সহ ৫০-৬০ রকমের কলমি চারা সোহাগের নার্সারীতে। সোহাগের নার্সারিতে ২ জন লোক কাজ করে জীবীকাও নির্বাহ করেন। প্রথমে যৌথ ভাবে, পরে জমি বর্গা নিয়ে দেন নার্সারী। তার এ সফলতার গল্প তুলে ধরেছেন প্রিয় চাঁদপুর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. রাছেল…

কচুয়া-গুলবাহার বাইপাস সড়কের ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম পাশে মনপুরা গ্রামে গড়ে তুলেছেন মজুমদার নার্সারি।

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার কাদলা ইউনিয়নের মনপুরা গ্রামের বাসিন্দা সোহাগ মজুমদার একজন সফল নার্সারী উদ্যোক্তা। সোহাগের রয়েছে স্ত্রী ও এক মেয়ে। তার এ নার্সারীতে দুইজন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করেন। নিজের জমি না থাকায় জমি বর্গা নিয়ে বড় ভাইয়ের সাথে প্রথমে যৌথ ভাবে নার্সারী দেন তিনি। পরবর্তীতে আলাদা ভাবে পাঁচ লক্ষ টাকা পূজিঁ নিয়ে গড়ে তুলেছেন এক বৃহৎ নার্সারি।

জানা যায়, উপজেলায় তার নার্সারীটি বৃহৎ। নার্সারিতে রয়েছে ফলের মধ্যে থাই পেয়ারা, বারি ফোর মাল্টা, নাসপাতি, আপেল কুল, বাউ কুল, পেয়ারা, আমের কলমি, লিচুর কলমি, আমলকি, বহরা, হরতকি, জামের কলমিসহ প্রায় ৫০-৬০ রকমের কলমি চারা।

এছাড়া ফুলের মাঝে বিশেষ করে রয়েছে, গোলাপ, ড্রাগন ফুল, নাইট কুইন, ক্যাকটাস, গাঁদাফুল, রজনীগন্ধা, সূর্যমুখীসহ প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ রকমের ফুল। বাহারী এই ফুল-ফলের সমারোহে গড়ে উঠা নার্সারিতে সোহাগ মজুমদার খুঁজে নিয়েছেন নিজের ভবিষ্যৎ। বর্তমানে তার নার্সারীতে রয়েছেন ৯লক্ষ টাকার পূজিঁ। প্রাকৃতিক দূর্যোগ বন্যার কারনে তার নার্সারীতে তেমন একটা বিক্রি নেই। তবে প্রতিকূলতা কাটিয়ে পূনরায় বিক্রির ধুম পড়বে বলে জানান তিনি।

Model Hospital

তাছাড়া এ নার্সারী থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কুরিয়ারের মাধ্যমে বিভিন্ন ফলজ,বনজ ও ফুলের চারা সরবরাহ করা হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার দক্ষ হাতের ছোঁয়ায়, আমগাছে লিচু, লিচু গাছে জাম এর কলমি ডাল গজিয়েছে। গুলবাহার-মনপুরা সড়কের পাশেই গড়ে ওঠায় সারাদেশের আনাচে-কানাচে মানুষ পাইকারি ও খুচরা দামে ওইখান থেকে গাছ কিনে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি ওই নার্সারীতে ৪০ শতাংশ চারা উৎপাদন করছেন। আশা করছেন ভবিষ্যতে তিনি ৬০ শতাংশ চারা এ নার্সারীতে উৎপাদন করবেন বলে জানান তিনি।

নার্সারী উদ্যোক্তা সোহাগ মজুমদার জানান, তাদের কাছ অনেকে কলমি চারা কিনে নিয়ে তারাও আজ অনেক লাভবান। অনেকেই তাদের চারা কিনে নিয়ে আজ প্রতিষ্ঠিত ফলের ব্যবসায়ী হয়েছেন। প্রায় ২৫ বছর ধরে হাতে কলমে আর কঠোর পরিশ্রমে গড়ে উঠা মজুমদার নার্সারিটি। তার নার্সারিতে ২ জন লোক সবসময় কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করে থাকেন।

সোহাগ মজুমদারের স্বপ্ন নিজে জমি কিনে আরো বড় পরিসরে গড়ে তুলবেন নার্সারি। সারাদেশসহ তার কলমি গাছ রপ্তানি হবে, সেজন্য দরকার সরকারি পৃষ্টপোষকতার। দীর্ঘদিনের নার্সারীর কাজের অভিজ্ঞতায় সোহাগ মজুমদার আজ অনেকের কাছেই একটি অনুপ্রেরণার নাম।

নার্সারী শ্রমিক মহিন উদ্দিন মিয়াজী বলেন, আমি এ নার্সারীতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। নার্সরিী দিয়ে আমার পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হয়। এ নার্সারীতে বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের চারা রয়েছে। স্বল্পমূল্যে গাছের চারা বিক্রি করা হয়।

কচুয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, মজুমদার নার্সারির নাম শুনেছি, নার্সারী একটি তরুন যুবক শ্রেনী রয়েছে তাদের জন্য একটি আয়বর্ধক কার্যক্রম। যার নার্সারী পেশায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবে।

প্রাকৃতিক ভাবে অকৃত্রিম যে আনন্দ পাবে, পাশাপাশি আয় উপার্জনের ব্যবস্থা হবে। সোহাগ মজুমদারের মতো কেউ যদি নার্সারী ও আয়বর্ধক উপার্জন করতে চায় তাহলে কৃষি বিভাগ তাদের সার্বিক সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।