ঢাকা ০৩:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লঞ্চে আগুন, থামাতে বলায় যাত্রীদের পেটালেন স্টাফরা

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিনিধি : আবারও দুর্ঘটনা শিকার হলো যাত্রীবাহী লঞ্চ। যদিও এবার কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ঢাকা থেকে বরিশালগামী সুরভী-৯ এর সাইলেন্সারে আগুন লেগে গেলে যাত্রাপথে চাঁদপুরে সব যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে দেওয়া হয়। ট্রিপল নাইনে ফোন করে জানানোয় লঞ্চের স্টাফরা যাত্রীদের পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

Model Hospital

রাজধানী থেকে বরিশালগামী সুরভী-৯ লঞ্চে শনিবার (০৮ জানুয়ারি) দিনগত রাতে সাইলেন্সার পাইপে আগুন লেগে গেলে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় লঞ্চের স্টাফদের লঞ্চ থামাতে বললেও না শোনায় ট্রিপল নাইনে ফোন করেন যাত্রীরা। অনেকেই ভিডিও করেন, ফেসবুকে লাইভও করেন।

বিআইডব্লিউটিএ’র হস্তক্ষেপে রাতেই চাঁদপুরের মোহনপুর লঞ্চঘাটে জরুরি নোঙর করানো হয় লঞ্চটিকে। পরে লঞ্চটি পুনরায় ছেড়ে বরিশাল নদী বন্দরে এসে পৌঁছায়। কিন্তু বরিশাল ঘাটে পৌঁছালে অভিযোগকারী যাত্রীদের বেদম মারধর করে লঞ্চের স্টাফরা। শনিবার রাতে লঞ্চের ভিডিও ও ট্রিপল নাইনে ফোন করায় পেটানো হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

এ লঞ্চের যাত্রী বিএম কলেজ পড়–য়া মিজানুর রহমান জানান, গত রাতে অনেকেই একাধিকবার লঞ্চের ম্যানেজার, সুপার ভাইজারকে লঞ্চটিকে থামানোর অনুরোধ জানায় যাত্রীরা। তারা ভিডিও করেন লঞ্চ স্টাফদের দুর্বব্যহারের। যাত্রীদের মধ্য থেকে কেউ কেউ ট্রিপল নাইনে ফোন করে জানান। কিন্তু (রোববার) সকালে লঞ্চটি বরিশাল বন্দরে আসলে হঠাৎ লঞ্চ স্টাফরা যাত্রীদের পেটাতে শুরু করে।
লঞ্চ যাত্রী ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি সুরঞ্জিত দত্ত লিটু জানান, গতরাতে লঞ্চ স্টাফদের অসদাচরণ ফেসবুকে লাইভ করায় আজ যাত্রীদের বেধড়ক পেটায় লঞ্চের ম্যানেজার মিজানসহ কেবিন বয়রা। এ ঘটনার বিচার চেয়েছেন তারা।

এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে চ্যানেল টুয়েন্টিফোর ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের চিত্র সাংবাদিক রুহুল আমিন ও দেওয়ান মোহনের ওপরও চড়াও হয় লঞ্চের ম্যানেজার কেবিন বয়রা। রুহুল আমিন অভিযোগ করেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলেন তারা। যখন যাত্রীদের পেটায় সেই ফুটেজ ধারণ করার সময় বাধা দেয় লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। চিত্র সাংবাদিক দেওয়ান মোহন অভিযোগ করেন, ফুটেজ নেওয়ার সময় লাঠি দিয়ে তাদেরও পেটায় লঞ্চ স্টাফরা।

যাত্রী নির্যাতন ঘটনাটি দুঃখজনক জানিয়ে অভিযুক্ত একজনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে জানায় লঞ্চের মালিক রেজিন উল কবির। তিনি জানান, এ ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্খিত।

যাত্রী নির্যাতনের সত্যতা স্বীকার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার কথা বলছে প্রশাসন। বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, যাত্রীদের পেটানোর সময় তিনি নিজেও উপস্থিত ছিলেন। নিজে দেখেছেন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দেন তিনি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কোতোয়ালি থানার সহকারী কমিশনার শারমিন সুলতানা রাখি জানান, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে লঞ্চে যাত্রী হয়রানি নিত্যদিনের ঘটনা জানিয়ে সুরভী লঞ্চে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে যাত্রী নির্যাতন করায় অন্য ব্যবসায়ীদেরও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সমবেদনা জানান জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ

লঞ্চে আগুন, থামাতে বলায় যাত্রীদের পেটালেন স্টাফরা

আপডেট সময় : ০২:০৬:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিনিধি : আবারও দুর্ঘটনা শিকার হলো যাত্রীবাহী লঞ্চ। যদিও এবার কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ঢাকা থেকে বরিশালগামী সুরভী-৯ এর সাইলেন্সারে আগুন লেগে গেলে যাত্রাপথে চাঁদপুরে সব যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে দেওয়া হয়। ট্রিপল নাইনে ফোন করে জানানোয় লঞ্চের স্টাফরা যাত্রীদের পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

Model Hospital

রাজধানী থেকে বরিশালগামী সুরভী-৯ লঞ্চে শনিবার (০৮ জানুয়ারি) দিনগত রাতে সাইলেন্সার পাইপে আগুন লেগে গেলে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় লঞ্চের স্টাফদের লঞ্চ থামাতে বললেও না শোনায় ট্রিপল নাইনে ফোন করেন যাত্রীরা। অনেকেই ভিডিও করেন, ফেসবুকে লাইভও করেন।

বিআইডব্লিউটিএ’র হস্তক্ষেপে রাতেই চাঁদপুরের মোহনপুর লঞ্চঘাটে জরুরি নোঙর করানো হয় লঞ্চটিকে। পরে লঞ্চটি পুনরায় ছেড়ে বরিশাল নদী বন্দরে এসে পৌঁছায়। কিন্তু বরিশাল ঘাটে পৌঁছালে অভিযোগকারী যাত্রীদের বেদম মারধর করে লঞ্চের স্টাফরা। শনিবার রাতে লঞ্চের ভিডিও ও ট্রিপল নাইনে ফোন করায় পেটানো হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

এ লঞ্চের যাত্রী বিএম কলেজ পড়–য়া মিজানুর রহমান জানান, গত রাতে অনেকেই একাধিকবার লঞ্চের ম্যানেজার, সুপার ভাইজারকে লঞ্চটিকে থামানোর অনুরোধ জানায় যাত্রীরা। তারা ভিডিও করেন লঞ্চ স্টাফদের দুর্বব্যহারের। যাত্রীদের মধ্য থেকে কেউ কেউ ট্রিপল নাইনে ফোন করে জানান। কিন্তু (রোববার) সকালে লঞ্চটি বরিশাল বন্দরে আসলে হঠাৎ লঞ্চ স্টাফরা যাত্রীদের পেটাতে শুরু করে।
লঞ্চ যাত্রী ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি সুরঞ্জিত দত্ত লিটু জানান, গতরাতে লঞ্চ স্টাফদের অসদাচরণ ফেসবুকে লাইভ করায় আজ যাত্রীদের বেধড়ক পেটায় লঞ্চের ম্যানেজার মিজানসহ কেবিন বয়রা। এ ঘটনার বিচার চেয়েছেন তারা।

এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে চ্যানেল টুয়েন্টিফোর ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের চিত্র সাংবাদিক রুহুল আমিন ও দেওয়ান মোহনের ওপরও চড়াও হয় লঞ্চের ম্যানেজার কেবিন বয়রা। রুহুল আমিন অভিযোগ করেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলেন তারা। যখন যাত্রীদের পেটায় সেই ফুটেজ ধারণ করার সময় বাধা দেয় লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। চিত্র সাংবাদিক দেওয়ান মোহন অভিযোগ করেন, ফুটেজ নেওয়ার সময় লাঠি দিয়ে তাদেরও পেটায় লঞ্চ স্টাফরা।

যাত্রী নির্যাতন ঘটনাটি দুঃখজনক জানিয়ে অভিযুক্ত একজনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে জানায় লঞ্চের মালিক রেজিন উল কবির। তিনি জানান, এ ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্খিত।

যাত্রী নির্যাতনের সত্যতা স্বীকার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার কথা বলছে প্রশাসন। বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, যাত্রীদের পেটানোর সময় তিনি নিজেও উপস্থিত ছিলেন। নিজে দেখেছেন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দেন তিনি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কোতোয়ালি থানার সহকারী কমিশনার শারমিন সুলতানা রাখি জানান, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে লঞ্চে যাত্রী হয়রানি নিত্যদিনের ঘটনা জানিয়ে সুরভী লঞ্চে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে যাত্রী নির্যাতন করায় অন্য ব্যবসায়ীদেরও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।