ক্যাম্পাস রিপোর্ট : ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ চাঁদপুর সরকারি কলেজে বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস-২০২১ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপন করা হয়।

সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে তাৎপর্যপর্ণ দিবসটির ঐ দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৭টায় কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশের নেতৃত্বে সকল বিভাগের বিভাগীয় প্রধানসহ শিক্ষকবৃন্দ, বিএনসিসি ক্যাডেটগণ এবং রোভার স্কাউটস্ সদস্যরা অঙ্গিকার পাদদেশে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
সকাল ৮ টায় কলেজ স্মৃতিসৌধ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। সকাল ৯ টায় কলেজ কনফারেন্স কক্ষে শুরু হয় ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতানা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার’ শীর্ষক সেমিনার। ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শেখ মোঃ খলিলুর রহমানের সভাপ্রধানে প্রধান অতিথি এবং প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ। প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল হাছান এবং কলেজ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আবুল খায়ের সরকার।

পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন ইসলাম শিক্ষা ও আরবি বিভাগের প্রভাষক মোঃ আল-আমিন। পবিত্র গীতা পাঠ করেন ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক সুমন মজুমদার। বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ সাইদুজ্জামান এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুলতানা তৌফিকা আক্তারের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক মেহেদী আরিফ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মোঃ শামসুল হক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক মোঃ রফিক উল্যাহ। সকল বক্তাই দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী সকল বীর সেনানীকে।
গভীর শ্রদ্ধা আর ভালবাসার সাথে স্বরণ করা হয়, সেই সময়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী চাঁদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী বীরসেনানীদের।
প্রফেসর অসিত বরণ দাশ বলেন, ‘‘আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর প্রজ্ঞা এবং অসাধারণ রাজনৈতিক নেতৃত্বের দক্ষতার কারণেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে এবং তাঁর সুযোগ্য কন্যার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে। ’৭৫ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেয়া হয়েছে। এই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখে ছিলেন। তিনি সোনার বাংলা বলতে ব্যাপক অর্থে উন্নয়ন বুঝিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু এটা জানতেন এবং বিশ্বাস করতেন, এই দেশের মানুষদের মধ্যে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা, দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের মধ্যদিয়ে একটি উন্নত জাতি গঠনের কনসেপ্ট হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা।’’
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার অনেক স্বপ্নকে আজ বাস্তবে রূপ দিয়েছে। আজ পদ্মা সেতু হচ্ছে, মেট্টো রেল হচ্ছে, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী ট্যানেল হচ্ছে। বাংলাদেশ ডিজিটালী অনেক এগিয়েছে এবং আরো অনেক এগিয়ে যাবে। আমরা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে অর্পিত দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আর বেশি দূরে নয়। সেমিনার শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
কলেজ কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ যোহর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
বিজয় দিবস উপলক্ষে সম্পূর্ণ কলেজ ক্যাম্পাস বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হয়। সারা দিনব্যাপী ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিকাল সাড়ে চারটায় কলেজ শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কলেজ স্মৃতিসৌধ এর সামনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে শপথ গ্রহণ করেন।