ঢাকা ০৭:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মতলব উত্তরে এখনো জমে উঠেনি ঈদের বাজার

ঈদ ও পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে জমকালো পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। তবে এখনো জমে উঠেনি ঈদের বাজার।

Model Hospital

মতলব উত্তরে ঈদ ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বাজারে দেখা যায়নি ক্রেতাদের তেমন ভিড়। ভিড়ের কথা মাথায় রেখে কেউ কেউ অবশ্য আগেভাগেই ঈদের শপিং সেরে ফেলেছেন। আবার কেউ কেউ এসেছেন ঈদ উপলক্ষে নতুন ডিজাইন আর দাম পরখ করে দেখতে। তবে আত্মীয়-স্বজনদের উপহার দেওয়ার জন্য রোজার প্রথমভাগেই কেনাকাটা করছেন অনেকে। দামও রয়েছে নাগালের বাইরে।

এখন ক্রেতা কম হলেও বিক্রেতারা আশা করছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোপুরি জমজমাট হবে ঈদের বাজার। করোনার লোকসান কাটাতে এ বছর বড় বাজেট নিয়ে ঈদ বাজারে ব্যবসা শুরু করলেও ক্রেতা না থাকায় চিন্তার ভাঁজ পড়ছে বিক্রেতাদের কপালে। শুধু রোজার ঈদ নয়, চৈত্র ও পহেলা বৈশাখের এই সময়টাতে মতলব উত্তরের মার্কেটগুলোতে উপচেপড়া ভিড় থাকে। কিন্তু এ বছর এর ব্যতিক্রম। তবুও ব্যবসায়ীদের আশা, চাকরিজীবীরা বেতন পেলে কেনাকাটা করতে আসলে বেচাকেনা বাড়বে।

গত মঙ্গলবার মতলব উত্তরের ব্যস্ততম ভূঁইয়া মার্কেট, মদিনা মার্কেট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে ছেংগারচর বাজার, নতুনবাজার ইসলামিয়া মার্কেট, সুজাতপুর বাজার, কালিপুর, কালিরবাজার’সহ বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে দেখা যায়, এসব মার্কেটের কসমেটিকস, জুয়েলারি, ইমিটেশন গোল্ড, জুতা-স্যান্ডেলসহ অন্যান্য পণ্যের তেমন বিক্রি নেই। চোখে পড়ার মতো ক্রেতারও দেখা মেলেনি সেখানে। তবে শিশুদের পোশাকের দোকানগুলোতে কিছু ক্রেতা থাকলেও তা ছিল স্বাভাবিক দিনের মতোই।

বিক্রেতারা বলছেন, এখনো বিক্রি জমে উঠেনি। অনেক আশা নিয়ে দোকানে মালামাল উঠালেও তারা ক্রেতা পাচ্ছেন না। তবে এখনো তারা আশা করছেন যে, বিক্রি জমে উঠবে।

দেখা গেছে, মার্কেটে পোশাকে নতুনত্বের সঙ্গে দামের তারতম্য আকাশ পাতাল রয়েছে। প্রতিটি পোশাকেরই দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক। যা ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। কারণ মহামারি করোনার পরে অর্থনৈতিক সংকট রয়েছে অনেকেরই। তার উপর ইউক্রেন যুদ্ধে নিত্যপণ্যের দামে দিশেহারা সাধারণ ক্রেতা। সবমিলিয়ে সাধারণ মানুষের হাতে টাকা নেই বললেই চলে। তারপরও কি করা ঈদ বলে কথা। সাধ্যমত পছন্দের পোশাক কিনতেই হবে। এবারের ঈদ আয়োজন থেকে বঞ্চিত নয় শিশুরাও। রয়েছে পছন্দের শিশুদের শার্ট, ফতুয়া, লং প্যান্ট, কোয়ার্টার প্যান্ট ও বিভিন্ন রংয়ের পাঞ্জাবি। মেয়ে শিশুদের জন্য রয়েছে ফ্রক, পার্টি ফ্রক, ফ্যাশন টপস, থ্রি পিস, জাম্প স্যুট, নিমা সেট, টপ বটম সেট, লং ও শর্ট শার্টসহ বাহারি ডিজাইনের পোশাক। পুরুষের জন্য রয়েছে হালকা ও টেকসই ফেব্রিকের তৈরি বিভিন্ন রংয়ের পাঞ্জাবির কালেকশন, শার্ট, টি-শার্ট, ইজি কেয়ার শার্ট, পায়জামা, ডেনিম প্যান্টস, কাইতেকি প্যান্টস, জিন্স ও গ্যাবাডিং। আর মেয়েদের জন্য রয়েছে থ্রি পিস, টু পিস, কাজ করা জর্জেট কামিজ, ভিসকস কামিজ, ফ্রক, শাড়ি, লেহেঙ্গা, বিভিন্ন রংয়ের প্রিন্ট লং শার্ট, টপস, টিউনিকস, কামিজের জন্য রয়েছে এমব্রয়ডারি স্ক্যান্টস ও লেগিংস। এসব পোশাক পাওয়া যাচ্ছে ৪৫০ থেকে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া মেয়েদের নানা কালেকশনের বোরকা পাওয়া যাচ্ছে ৬৫০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে।

ইসলামিয়া মার্কেটে শিশুদের পোশাক কিনতে আসা শাহনাজ বেগম বলেন, করোনার ভয় কেটে যাওয়ায় সন্তানদের নিয়েই মার্কেটে এসেছেন তিনি। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পোশাকের দাম অনেক বেশি বলে জানান তিনি। কসমেটিকের দোকানে কথা হয় সুমি আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখনই কসমেটিক না কিনলেও নতুন কি কালেকশন এসেছে তা দেখছেন।

এশিয়ান ফ্যাশনের বিক্রেতা মিন্টু জানান, বেচাকেনা পুরোপুরি জমেনি। আশা করি, বিক্রি ভালো হবে। কিন্তু এখনো বিক্রি জমে উঠেনি তার কারণ মানুষের হাতে কেনাকাটা করার যে অর্থের প্রয়োজন তা হয়তো সীমিত। বেতন পেলে শুরু হতে পারে বেচাকেনা।

মমিন কসমেটিকস ও ইমিটেশন ব্যবসায়ী বিমল বলেন, এখনো ক্রেতা আসেনি। যা বিক্রি হচ্ছে তা সপ্তাহের অন্যান্য দিনের মতোই। মনে হচ্ছে এবারো লোকসান গুনতে হবে ব্যবসায়ীদের। তবে ১৫ রোজার পর থেকে ক্রেতার দেখা পাওয়া যাবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতি বছর রোজার মাঝামাঝিতে কেনাকাটা জমে উঠে। তাই এবারো জমবে বলে আশা করি। তবে এবার সব জিনিসের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। যে শ্যাম্পু ছিলো ৩৭০ টাকা তা হয়েছে ৫শ টাকা।

আল মদিনা বস্ত্র বিতানের বিক্রেতা শেখ সাদী বলেন, নতুন মালের দাম বেশি। ক্রেতাদের সাড়া তেমন পাচ্ছি না। তিনি আরো জানান, গরমের কথা মাথায় রেখেই পোশাক কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। গরমে আরামের কথা মাথায় রেখে তারা বেছে নিচ্ছেন নানা বুটিকস, সুতি ও লিলেনের জামা।

এদিকে বুটিকস হাউজগুলোতে গরমের কথা চিন্তা করেই সাজানো হয়েছে বুটিকসের জামা কাপড়। হালকা বাহারি রঙের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে এই হাউজগুলোতে।

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, ঈদ বাজারকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে শপিংমলগুলোতে। পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। রোজার শেষের দিকে এ নিরাপত্তা আরো বাড়ানো হবে বলে জানালেন থানা পুলিশ। তিনি বলেন, মার্কেটে ক্রেতাদের কথা বিশেষভাবে মাথায় রেখে পুলিশ কাজ করছে।

ট্যাগস :

শাহরাস্তিতে পিকআপ ভ্যান ও সিএনজি স্কুটারের সংঘর্ষে ২জন নিহত

মতলব উত্তরে এখনো জমে উঠেনি ঈদের বাজার

আপডেট সময় : ০৪:০৬:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল ২০২৩

ঈদ ও পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে জমকালো পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। তবে এখনো জমে উঠেনি ঈদের বাজার।

Model Hospital

মতলব উত্তরে ঈদ ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বাজারে দেখা যায়নি ক্রেতাদের তেমন ভিড়। ভিড়ের কথা মাথায় রেখে কেউ কেউ অবশ্য আগেভাগেই ঈদের শপিং সেরে ফেলেছেন। আবার কেউ কেউ এসেছেন ঈদ উপলক্ষে নতুন ডিজাইন আর দাম পরখ করে দেখতে। তবে আত্মীয়-স্বজনদের উপহার দেওয়ার জন্য রোজার প্রথমভাগেই কেনাকাটা করছেন অনেকে। দামও রয়েছে নাগালের বাইরে।

এখন ক্রেতা কম হলেও বিক্রেতারা আশা করছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোপুরি জমজমাট হবে ঈদের বাজার। করোনার লোকসান কাটাতে এ বছর বড় বাজেট নিয়ে ঈদ বাজারে ব্যবসা শুরু করলেও ক্রেতা না থাকায় চিন্তার ভাঁজ পড়ছে বিক্রেতাদের কপালে। শুধু রোজার ঈদ নয়, চৈত্র ও পহেলা বৈশাখের এই সময়টাতে মতলব উত্তরের মার্কেটগুলোতে উপচেপড়া ভিড় থাকে। কিন্তু এ বছর এর ব্যতিক্রম। তবুও ব্যবসায়ীদের আশা, চাকরিজীবীরা বেতন পেলে কেনাকাটা করতে আসলে বেচাকেনা বাড়বে।

গত মঙ্গলবার মতলব উত্তরের ব্যস্ততম ভূঁইয়া মার্কেট, মদিনা মার্কেট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে ছেংগারচর বাজার, নতুনবাজার ইসলামিয়া মার্কেট, সুজাতপুর বাজার, কালিপুর, কালিরবাজার’সহ বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে দেখা যায়, এসব মার্কেটের কসমেটিকস, জুয়েলারি, ইমিটেশন গোল্ড, জুতা-স্যান্ডেলসহ অন্যান্য পণ্যের তেমন বিক্রি নেই। চোখে পড়ার মতো ক্রেতারও দেখা মেলেনি সেখানে। তবে শিশুদের পোশাকের দোকানগুলোতে কিছু ক্রেতা থাকলেও তা ছিল স্বাভাবিক দিনের মতোই।

বিক্রেতারা বলছেন, এখনো বিক্রি জমে উঠেনি। অনেক আশা নিয়ে দোকানে মালামাল উঠালেও তারা ক্রেতা পাচ্ছেন না। তবে এখনো তারা আশা করছেন যে, বিক্রি জমে উঠবে।

দেখা গেছে, মার্কেটে পোশাকে নতুনত্বের সঙ্গে দামের তারতম্য আকাশ পাতাল রয়েছে। প্রতিটি পোশাকেরই দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক। যা ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। কারণ মহামারি করোনার পরে অর্থনৈতিক সংকট রয়েছে অনেকেরই। তার উপর ইউক্রেন যুদ্ধে নিত্যপণ্যের দামে দিশেহারা সাধারণ ক্রেতা। সবমিলিয়ে সাধারণ মানুষের হাতে টাকা নেই বললেই চলে। তারপরও কি করা ঈদ বলে কথা। সাধ্যমত পছন্দের পোশাক কিনতেই হবে। এবারের ঈদ আয়োজন থেকে বঞ্চিত নয় শিশুরাও। রয়েছে পছন্দের শিশুদের শার্ট, ফতুয়া, লং প্যান্ট, কোয়ার্টার প্যান্ট ও বিভিন্ন রংয়ের পাঞ্জাবি। মেয়ে শিশুদের জন্য রয়েছে ফ্রক, পার্টি ফ্রক, ফ্যাশন টপস, থ্রি পিস, জাম্প স্যুট, নিমা সেট, টপ বটম সেট, লং ও শর্ট শার্টসহ বাহারি ডিজাইনের পোশাক। পুরুষের জন্য রয়েছে হালকা ও টেকসই ফেব্রিকের তৈরি বিভিন্ন রংয়ের পাঞ্জাবির কালেকশন, শার্ট, টি-শার্ট, ইজি কেয়ার শার্ট, পায়জামা, ডেনিম প্যান্টস, কাইতেকি প্যান্টস, জিন্স ও গ্যাবাডিং। আর মেয়েদের জন্য রয়েছে থ্রি পিস, টু পিস, কাজ করা জর্জেট কামিজ, ভিসকস কামিজ, ফ্রক, শাড়ি, লেহেঙ্গা, বিভিন্ন রংয়ের প্রিন্ট লং শার্ট, টপস, টিউনিকস, কামিজের জন্য রয়েছে এমব্রয়ডারি স্ক্যান্টস ও লেগিংস। এসব পোশাক পাওয়া যাচ্ছে ৪৫০ থেকে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া মেয়েদের নানা কালেকশনের বোরকা পাওয়া যাচ্ছে ৬৫০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে।

ইসলামিয়া মার্কেটে শিশুদের পোশাক কিনতে আসা শাহনাজ বেগম বলেন, করোনার ভয় কেটে যাওয়ায় সন্তানদের নিয়েই মার্কেটে এসেছেন তিনি। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পোশাকের দাম অনেক বেশি বলে জানান তিনি। কসমেটিকের দোকানে কথা হয় সুমি আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখনই কসমেটিক না কিনলেও নতুন কি কালেকশন এসেছে তা দেখছেন।

এশিয়ান ফ্যাশনের বিক্রেতা মিন্টু জানান, বেচাকেনা পুরোপুরি জমেনি। আশা করি, বিক্রি ভালো হবে। কিন্তু এখনো বিক্রি জমে উঠেনি তার কারণ মানুষের হাতে কেনাকাটা করার যে অর্থের প্রয়োজন তা হয়তো সীমিত। বেতন পেলে শুরু হতে পারে বেচাকেনা।

মমিন কসমেটিকস ও ইমিটেশন ব্যবসায়ী বিমল বলেন, এখনো ক্রেতা আসেনি। যা বিক্রি হচ্ছে তা সপ্তাহের অন্যান্য দিনের মতোই। মনে হচ্ছে এবারো লোকসান গুনতে হবে ব্যবসায়ীদের। তবে ১৫ রোজার পর থেকে ক্রেতার দেখা পাওয়া যাবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতি বছর রোজার মাঝামাঝিতে কেনাকাটা জমে উঠে। তাই এবারো জমবে বলে আশা করি। তবে এবার সব জিনিসের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। যে শ্যাম্পু ছিলো ৩৭০ টাকা তা হয়েছে ৫শ টাকা।

আল মদিনা বস্ত্র বিতানের বিক্রেতা শেখ সাদী বলেন, নতুন মালের দাম বেশি। ক্রেতাদের সাড়া তেমন পাচ্ছি না। তিনি আরো জানান, গরমের কথা মাথায় রেখেই পোশাক কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। গরমে আরামের কথা মাথায় রেখে তারা বেছে নিচ্ছেন নানা বুটিকস, সুতি ও লিলেনের জামা।

এদিকে বুটিকস হাউজগুলোতে গরমের কথা চিন্তা করেই সাজানো হয়েছে বুটিকসের জামা কাপড়। হালকা বাহারি রঙের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে এই হাউজগুলোতে।

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, ঈদ বাজারকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে শপিংমলগুলোতে। পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। রোজার শেষের দিকে এ নিরাপত্তা আরো বাড়ানো হবে বলে জানালেন থানা পুলিশ। তিনি বলেন, মার্কেটে ক্রেতাদের কথা বিশেষভাবে মাথায় রেখে পুলিশ কাজ করছে।