শহুরে জীবনের ক্লান্তি থেকে একটু হাঁপ ছেড়ে বাঁচতে সবাই প্রকৃতির কাছে ছুটতে চায়। মানুষকে প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার জন্য আয়োজনেরও কমতি নেই। এমনই এক আয়োজন হলো রিসোর্ট। রিসোর্ট মানেই একের ভেতর সব। এর মধ্যে সম্পূর্ণ আলাদা ভালুকায় অবস্থিত মেঘমাটি রিসোর্টটি। প্রকৃতি ও আধুনিকতার এক অপরূপ মেলবন্ধন রয়েছে সেখানে। সম্প্রতি মেঘমাটির কর্ণধার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফী জানিয়েছেন রিসোর্টের অজানা অনেক কথা—
মেঘমাটিতে যা আছে…
২০১০ সালে আমরা প্রথমে ১৬ বিঘা জমির ওপর রির্সোটটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা করি। একদম গ্রাম্য পরিবেশে রিসোর্টটির অবস্থান। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে মানুষকে গ্রাম বাংলার অনুভূতি দিতে প্রায় আধা কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পাড়ি দিয়ে মেঘমাটিতে যেতে হয়। দেশ-বিদেশের অতিথিরা এখানে এই মাটির রাস্তাটি উপভোগ করেন।
মেঘমাটির বিশেষত্ব কী?
এখানে অতিথিদের বেশিরভাগ অর্গানিক খাবার পরিবেশন করা হয়। অধিকাংশ খাবার রিসোর্টের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগৃহীত। যেমন: পুকুর থেকে মাছ, পাশের ক্ষেত থেকে ধান, গোয়াল থেকে দুধ, গাছ থেকে ফলমূল ইত্যাদি সংগ্রহ করে অতিথিদের সামনে পরিবেশন করা হয়। এর একপাশে যেমন খেলার মাঠ, মাছ ধরার পুকুর, কাদামাটির ঘর রয়েছে অন্যপাশে সুইমিংপুল, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ রয়েছে। পুরো রিসোর্টটি ছায়া সুনিবিড় পরিবেশ বেষ্টিত। সারাক্ষণ পাখির কিচিরমিচির শব্দ মনকে ভুলিয়ে রাখবে যে কাউকে।
রিসোর্টটির আইডিয়া এল যেভাবে
পৃথিবীর বহু দেশে ভ্রমণ করেছি। সব দেশেই পরিবেশ-প্রকৃতি রক্ষা করে ভ্রমণকে উৎসাহিত করে। দেশে এখন ইকো-ফ্রেন্ডলি রিসোর্ট জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। দেশের অর্থনীতিও বড় হচ্ছে। অবকাঠামোগত উন্নতিও হচ্ছে। ভবিষ্যতে মানুষ হারানো গ্রামের কাছে ছুটতে চাইবে। সে ধারণা থেকেই মেঘমাটি ভিলেজ রিসোর্ট করার পরিকল্পনা হাতে নিই। তবে আজকে এ পর্যায়ে এসে মনে হচ্ছে, আমার ধারণা মোটেও ভুল ছিল না।
মেঘমাটির অতিথি কারা?
এককথায় যারা গ্রাম, গ্রামের মানুষ, প্রকৃতি ও খাবার পছন্দ করেন তারাই আমাদের অতিথি। মেঘমাটিতে যারা একবার ঘুরতে আসেন, তারা আবারও সেখানে যেতে চান। ভালো সেবা দিয়ে মানুষের মন জয়ের মাধ্যমেই এটা সম্ভব হয়েছে। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের গেস্ট রিভিউ ৫ এর মধ্যে ৫ যা হাতে গোনা খুব কম রিসোর্টের রয়েছে। আরো নিত্যনতুন কিছু সেবা অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে মেঘমাটিতে।
খরচাপাতি কেমন?
শুরু থেকেই আমরা ব্যবসার চেয়ে অতিথি সন্তুষ্টির দিকে বেশি নজর দিচ্ছি। সবসময় সীমিত পরিসরে অতিথি গ্রহণ করা হয়ে থাকে। আমাদের এখানে সব মিলিয়ে মাত্র ২৫-৩০ জনের একসঙ্গে থাকার ব্যবস্থা আছে। পারিবারিক, বাণিজ্যিক বা করপোরেট প্রতিষ্ঠান মেঘমাটিতে সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করে থাকে। প্যাকেজ খরচের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ঢাকা থেকে মেঘমাটির গাড়ি দিয়ে যাওয়া-আসা, অবস্থান, পছন্দমতো খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি। ভ্রমণের টিম যতো বড় হবে খরচ ততো কম পড়বে। এখানে মাটির চুলার সুস্বাদু রান্নার সঙ্গে লোকাল বাউল লোকজ সঙ্গীত সবার মন ভরাবে।
ঢাকা থেকে মেঘমাটিতে যেভাবে বুকিং দেওয়া যাবে
ঢাকার এয়ারপোর্ট থেকে ৭২ কি.মি আমাদের রিসোর্টের দূরত্ব। সাধারণত আগে থেকে বুকিং করে আসতে হয়। বুকিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট (০১৬১৩৫৫৫৯৫৩) নাম্বারে কল দিলে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে দিই। সেই সঙ্গে বাসা থেকে গাড়ি করে রিসোর্ট ঘুরিয়ে আবার বাসায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও আছে।