ঢাকা ০৭:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাঁদপুরে সিএনজি-অটোরিকশা চালকদের অতিরিক্ত ভাড়ায় জিম্মি যাত্রীরা !

মাসুদ হোসেন : দেশে চলমান নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে জনজীবন যেখানে অতিষ্ঠ সেখানে চাঁদপুর জেলাজুড়ে চলছে গণপরিবহন সহ সিএনজি অটোরিকশা ও টমটমের ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য। বিভিন্ন অজুহাতে ভাড়া বৃদ্ধির ফলে বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের যাত্রীসাধারণ।
তেল গ্যাসের দাম বৃদ্ধি দেখিয়ে চালকদের মনগড়া অতিরিক্ত ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে দেড় থেকে দুইগুণ। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকেই চালকদের কাছে জিম্মি হচ্ছেন চাঁদপুরের বিভিন্ন সড়কের যাত্রীসাধারণ।
সরেজমিনে কিছু সিএনজি ও অটো চালকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে নিয়মিত ভাড়ার অধিক ভাড়া আদায় করে আসছে চালকরা। তারা বিদ্যুৎ, তেল গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সাথে জেলার বিভিন্ন গ্যাস পাম্পে দীর্ঘ লাইন, সেই সাথে নানাবিধ কারণ দেখিয়ে দেড়গুণ ভাড়া বৃদ্ধিসহ যাত্রীদের কাছ থেকে তা আদায় করে নিচ্ছে তারা’। এমনকি শহরের অভ্যন্তরেও বৃদ্ধি পেয়েছে সিএনজি টমটমের ভাড়া। সকল কিছুর দাম বৃদ্ধির কারনে পূর্বের নির্ধারিত ৫ টাকার স্থলে ১০টাকা এবং ১০ টাকার জায়গায় ১৫ টাকা করে নেওয়ার কথা থাকলেও চালকদের মনগড়া অতিরিক্ত ভাড়া রাখা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
ভাড়া বেশি নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে চালকরা জানায়, যেহারে সকল কিছুর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে আমরা ভাড়া না বাড়িয়ে কি করবো। এছাড়াও তেল গ্যাসের দাম বৃদ্ধি ও সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে সকল খরচ এখন বেশি দিতে হচ্ছে। অনেক সময় গ্যাস সংকটে গ্যাস নিতে গিয়ে পাম্পে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে আমাদের। তাতে আমাদের সময় যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি আমাদের আয় রোজগারও কমে যাচ্ছে। অনেক সময় রাত জেগে  রাত ২ টার পরেও গ্যাস সংগ্রহ করতে হয়।
এদিকে সিএনজি অটোরিকশা চালকদের নিজেদের মনগড়া ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে নানান প্রশ্ন। যাত্রীরা বলছেন, হঠাৎ করে চালকরা ভাড়া বৃদ্ধি করে যাত্রীদের জিম্মি করে ভাড়া আদায় করছেন। ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সাথে ব্যাপক খারাপ আচরণও করছেন চালকরা, কিন্তু সেখানে দেখার কেউ নেই। সময়ের সাথে ভাড়া বৃদ্ধি হলেও এত বেশি ভাড়া বাড়াবে তা মেনে নেওয়া যায় না।
জানা যায়, চাঁদপুর কালিবাড়ি থেকে হাজীগঞ্জে প্রায় ‘২৫ কিলোমিটার’ রাস্তার পূর্বের নির্ধারিত ভাড়া ছিল ৫০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে চাঁদপুর কালিবাড়ি থেকে হাজীগঞ্জ পর্যন্ত সিএনজি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৭০-৮০টাকা করে। অন্যদিকে চাঁদপুর কালিবাড়ি থেকে মহামায়া বাজার পর্যন্ত পূর্বের ভাড়া ছিল ২৫-৩০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে নিচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা।
গতকাল শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাঁদপুর শহর থেকে হাজীগঞ্জ পর্যন্ত জনপ্রতি ১০০ টাকা করে রাখতে দেখা গিয়েছে সিএনজি চালকরা।
এছাড়াও মহাসড়কের বাহিরেও জেলার বিভিন্ন এলাকার শাখা প্রশাখা সড়কগুলোতেও স্থানীয় স্ট্যান্ড কর্তৃপক্ষ ঐসব সড়কের ভাড়াও তাদের মনগড়া সিদ্ধান্তে বৃদ্ধি করা হয়েছে। শুধু চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়ক নয়, সারা জেলাজুড়ে তাদের এই নৈরাজ্য চলছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
ভাড়া বৃদ্ধি ও যাত্রী হয়রানি নিয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর জেলা সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ট্যাক্সি ও ট্যাক্সিকারসড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী ওমর ফারুক বলেন, যানবাহনের সকল যন্ত্রাংশের দাম ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সুবাদে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি তাদের মালিক সমিতি অঘোষিতভাবে বাড়ানো হয়েছে।
তবে চালকরা ১০ টাকার ভাড়া ১৫ টাকা, ৩০ টাকার ভাড়া ৩৫-৪০ টাকা রাখতে পারে। এর বেশি রাখলে এটা অমানবিক। কোন চালক যদি অমানবিক ভাড়া রেখে থাকেন তাহলে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো।
জনপ্রিয় সংবাদ

উন্নত জীবন ও পুষ্টি নিরাপত্তায় প্রাণিজ আমিষের গুরুত্ব অপরিসীম : মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি

চাঁদপুরে সিএনজি-অটোরিকশা চালকদের অতিরিক্ত ভাড়ায় জিম্মি যাত্রীরা !

আপডেট সময় : ১২:২৯:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
মাসুদ হোসেন : দেশে চলমান নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে জনজীবন যেখানে অতিষ্ঠ সেখানে চাঁদপুর জেলাজুড়ে চলছে গণপরিবহন সহ সিএনজি অটোরিকশা ও টমটমের ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য। বিভিন্ন অজুহাতে ভাড়া বৃদ্ধির ফলে বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের যাত্রীসাধারণ।
তেল গ্যাসের দাম বৃদ্ধি দেখিয়ে চালকদের মনগড়া অতিরিক্ত ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে দেড় থেকে দুইগুণ। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকেই চালকদের কাছে জিম্মি হচ্ছেন চাঁদপুরের বিভিন্ন সড়কের যাত্রীসাধারণ।
সরেজমিনে কিছু সিএনজি ও অটো চালকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে নিয়মিত ভাড়ার অধিক ভাড়া আদায় করে আসছে চালকরা। তারা বিদ্যুৎ, তেল গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সাথে জেলার বিভিন্ন গ্যাস পাম্পে দীর্ঘ লাইন, সেই সাথে নানাবিধ কারণ দেখিয়ে দেড়গুণ ভাড়া বৃদ্ধিসহ যাত্রীদের কাছ থেকে তা আদায় করে নিচ্ছে তারা’। এমনকি শহরের অভ্যন্তরেও বৃদ্ধি পেয়েছে সিএনজি টমটমের ভাড়া। সকল কিছুর দাম বৃদ্ধির কারনে পূর্বের নির্ধারিত ৫ টাকার স্থলে ১০টাকা এবং ১০ টাকার জায়গায় ১৫ টাকা করে নেওয়ার কথা থাকলেও চালকদের মনগড়া অতিরিক্ত ভাড়া রাখা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
ভাড়া বেশি নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে চালকরা জানায়, যেহারে সকল কিছুর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে আমরা ভাড়া না বাড়িয়ে কি করবো। এছাড়াও তেল গ্যাসের দাম বৃদ্ধি ও সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে সকল খরচ এখন বেশি দিতে হচ্ছে। অনেক সময় গ্যাস সংকটে গ্যাস নিতে গিয়ে পাম্পে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে আমাদের। তাতে আমাদের সময় যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি আমাদের আয় রোজগারও কমে যাচ্ছে। অনেক সময় রাত জেগে  রাত ২ টার পরেও গ্যাস সংগ্রহ করতে হয়।
এদিকে সিএনজি অটোরিকশা চালকদের নিজেদের মনগড়া ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে নানান প্রশ্ন। যাত্রীরা বলছেন, হঠাৎ করে চালকরা ভাড়া বৃদ্ধি করে যাত্রীদের জিম্মি করে ভাড়া আদায় করছেন। ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সাথে ব্যাপক খারাপ আচরণও করছেন চালকরা, কিন্তু সেখানে দেখার কেউ নেই। সময়ের সাথে ভাড়া বৃদ্ধি হলেও এত বেশি ভাড়া বাড়াবে তা মেনে নেওয়া যায় না।
জানা যায়, চাঁদপুর কালিবাড়ি থেকে হাজীগঞ্জে প্রায় ‘২৫ কিলোমিটার’ রাস্তার পূর্বের নির্ধারিত ভাড়া ছিল ৫০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে চাঁদপুর কালিবাড়ি থেকে হাজীগঞ্জ পর্যন্ত সিএনজি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৭০-৮০টাকা করে। অন্যদিকে চাঁদপুর কালিবাড়ি থেকে মহামায়া বাজার পর্যন্ত পূর্বের ভাড়া ছিল ২৫-৩০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে নিচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা।
গতকাল শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাঁদপুর শহর থেকে হাজীগঞ্জ পর্যন্ত জনপ্রতি ১০০ টাকা করে রাখতে দেখা গিয়েছে সিএনজি চালকরা।
এছাড়াও মহাসড়কের বাহিরেও জেলার বিভিন্ন এলাকার শাখা প্রশাখা সড়কগুলোতেও স্থানীয় স্ট্যান্ড কর্তৃপক্ষ ঐসব সড়কের ভাড়াও তাদের মনগড়া সিদ্ধান্তে বৃদ্ধি করা হয়েছে। শুধু চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়ক নয়, সারা জেলাজুড়ে তাদের এই নৈরাজ্য চলছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
ভাড়া বৃদ্ধি ও যাত্রী হয়রানি নিয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর জেলা সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ট্যাক্সি ও ট্যাক্সিকারসড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী ওমর ফারুক বলেন, যানবাহনের সকল যন্ত্রাংশের দাম ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সুবাদে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি তাদের মালিক সমিতি অঘোষিতভাবে বাড়ানো হয়েছে।
তবে চালকরা ১০ টাকার ভাড়া ১৫ টাকা, ৩০ টাকার ভাড়া ৩৫-৪০ টাকা রাখতে পারে। এর বেশি রাখলে এটা অমানবিক। কোন চালক যদি অমানবিক ভাড়া রেখে থাকেন তাহলে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো।