ঢাকা ০৪:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অযত্নে নষ্ট হচ্ছে অর্ধ কোটি টাকার ইউপি ভবন

মনিরুল ইসলাম মনির : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের অর্ধ কোটি টাকার নির্মিত ইউনিয়ন ভবনটি অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে রয়েছে। ভবনটি নির্মাণের পর কিছুদিন ব্যবহার হলেও প্রায় ১৫ বছর ধরে ব্যবহার না করায় রাতে এখন মাদকসেবীদের আড্ডাস্থল হিসেবে পরিণত হয়েছে। ইউপি পরিষদের কার্যক্রম চলছে মুদাফর বাজারের ভাড়া করা ভবনে।

Model Hospital

স্থানীয় বলছেন, ইউপি ভবন যদি ব্যবহার করা না হয়, তবে সরকারের প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ব্যয়ে ভবন তৈরি করে অর্থ অপচয়ের কোনো যৌক্তিকতা নেই। ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলছেন, দীর্ঘদিন ভবন ব্যবহার না করায় মেরামত করার প্রয়োজন হয়েছে। সংস্কার করে নতুন ভবনে কার্যক্রম চালানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতরের (এলজিইডি) বাস্তবায়নে মোহনপুর ইউপি কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণ কাজ হয়। ওই সময়ের ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মাষ্টার এ ভবনেই কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। পরবর্তীতে ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক চৌধুরী বাবুল নিজ সুবিধার্থে মুদাফর বাজারে অস্থায়ী কার্যক্রম করে কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে। ফলে স্থানীয়রা এখনো বঞ্চিত হচ্ছেন নিজের দারগোড়ায় পাওয়া ইউপি সেবা থেকে। সেই সঙ্গে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকার ফলে নতুন ইউপি ভবনটি এখন স্থানীয় বখাটে, মাদকাসেবী ও মানসিক ভারসাম্যহীনদের আড্ডা খানায় পরিণত হয়েছে। ভবন সংলগ্ন বিশাল মাঠটি পরিণত হয়ে গোচরণ ভূমি হিসেবে।

সরেজমিন মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভবনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের প্রতিটি রুমই তালা দেওয়া। বাহিরে আবর্জনার স্তূপ। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার করা হচ্ছে না এটা সুস্পষ্ট। এক কক্ষে চলছে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কার্যক্রম। বারান্দার এক কোণে বস্তা ভরা গোরবের স্তূপ, লেপ তোসক ও বিছানা। মাঠে শুকানো হচ্ছে ধান। চেয়ারম্যানের রুম, সচিবের রুম, তথ্য সেবা কেন্দ্রসহ প্রতিটি রুমই বন্ধ। অযত্ন অবহেলায় পড়ে রয়েছে ভবনটি।

মাথাভাঙ্গার বাসিন্দা মনজুর আহমদ, ফজলুল হক, মনির হোসেন সর্দার ও সালাউদ্দিন প্রামাণিক বলেন, নতুন এই ইউপি ভবনটি করে স্থানীয় মাদকসেবী ও বখাটেদের আড্ডার একটি নিরাপদ জায়গা তৈরি করা হয়েছে। সারা রাতই এখানে পোলাপানরা নেশা করে। যদি এটি ইউনিয়ন পরিষদ হিসেবে ব্যবহার করা না হয় তবে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করুক তবুও এভাবে ফেলে রাখা ঠিক না।

ইউপি সচিব জসিম উদ্দিন বলেন, ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ভবনের সংস্কারের প্রয়োজন। অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে কাজ করে নতুন ভবনে চলে যাবো।

মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, দীর্ঘদিন ভবনে কার্যক্রম না চলায় ভবনের সংস্কার করা প্রয়োজন। সংস্কারের পর ওই ভবনে ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম শুরু হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সমবেদনা জানান জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ

অযত্নে নষ্ট হচ্ছে অর্ধ কোটি টাকার ইউপি ভবন

আপডেট সময় : ০৩:১৩:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২২

মনিরুল ইসলাম মনির : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের অর্ধ কোটি টাকার নির্মিত ইউনিয়ন ভবনটি অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে রয়েছে। ভবনটি নির্মাণের পর কিছুদিন ব্যবহার হলেও প্রায় ১৫ বছর ধরে ব্যবহার না করায় রাতে এখন মাদকসেবীদের আড্ডাস্থল হিসেবে পরিণত হয়েছে। ইউপি পরিষদের কার্যক্রম চলছে মুদাফর বাজারের ভাড়া করা ভবনে।

Model Hospital

স্থানীয় বলছেন, ইউপি ভবন যদি ব্যবহার করা না হয়, তবে সরকারের প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ব্যয়ে ভবন তৈরি করে অর্থ অপচয়ের কোনো যৌক্তিকতা নেই। ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলছেন, দীর্ঘদিন ভবন ব্যবহার না করায় মেরামত করার প্রয়োজন হয়েছে। সংস্কার করে নতুন ভবনে কার্যক্রম চালানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতরের (এলজিইডি) বাস্তবায়নে মোহনপুর ইউপি কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণ কাজ হয়। ওই সময়ের ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মাষ্টার এ ভবনেই কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। পরবর্তীতে ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক চৌধুরী বাবুল নিজ সুবিধার্থে মুদাফর বাজারে অস্থায়ী কার্যক্রম করে কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে। ফলে স্থানীয়রা এখনো বঞ্চিত হচ্ছেন নিজের দারগোড়ায় পাওয়া ইউপি সেবা থেকে। সেই সঙ্গে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকার ফলে নতুন ইউপি ভবনটি এখন স্থানীয় বখাটে, মাদকাসেবী ও মানসিক ভারসাম্যহীনদের আড্ডা খানায় পরিণত হয়েছে। ভবন সংলগ্ন বিশাল মাঠটি পরিণত হয়ে গোচরণ ভূমি হিসেবে।

সরেজমিন মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভবনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের প্রতিটি রুমই তালা দেওয়া। বাহিরে আবর্জনার স্তূপ। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার করা হচ্ছে না এটা সুস্পষ্ট। এক কক্ষে চলছে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কার্যক্রম। বারান্দার এক কোণে বস্তা ভরা গোরবের স্তূপ, লেপ তোসক ও বিছানা। মাঠে শুকানো হচ্ছে ধান। চেয়ারম্যানের রুম, সচিবের রুম, তথ্য সেবা কেন্দ্রসহ প্রতিটি রুমই বন্ধ। অযত্ন অবহেলায় পড়ে রয়েছে ভবনটি।

মাথাভাঙ্গার বাসিন্দা মনজুর আহমদ, ফজলুল হক, মনির হোসেন সর্দার ও সালাউদ্দিন প্রামাণিক বলেন, নতুন এই ইউপি ভবনটি করে স্থানীয় মাদকসেবী ও বখাটেদের আড্ডার একটি নিরাপদ জায়গা তৈরি করা হয়েছে। সারা রাতই এখানে পোলাপানরা নেশা করে। যদি এটি ইউনিয়ন পরিষদ হিসেবে ব্যবহার করা না হয় তবে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করুক তবুও এভাবে ফেলে রাখা ঠিক না।

ইউপি সচিব জসিম উদ্দিন বলেন, ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ভবনের সংস্কারের প্রয়োজন। অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে কাজ করে নতুন ভবনে চলে যাবো।

মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, দীর্ঘদিন ভবনে কার্যক্রম না চলায় ভবনের সংস্কার করা প্রয়োজন। সংস্কারের পর ওই ভবনে ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম শুরু হবে।