মাসুদ হোসেন : চাঁদপুর সদর উপজেলার ৬নং মৈশাদী ইউনিয়নের মৈশাদীর অর্ধশত বর্ষি তালতলা বাজারের শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বোবা কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে মৈশাদী এলাকা।
বৃহষ্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের মৈশাদীতে দিনব্যাপী এ উচ্ছেদ অভিযানের আওতায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিলো। রেলওয়ে কর্তপক্ষ জানান, দোকান মালিকদেরকে নোটিশ দেয়া সত্ত্বেও তারা নিজ দায়িত্বে এসব অবৈধ স্থাপনা সড়িয়ে নেয়নি। তাই এ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিাস্ট্রেট সুচিত্র নন্দন দাস, চট্টগ্রাম ডিভিশনাল রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহবুবুল করিম।
এদিকে শতাধিক দোকান উচ্ছেদের বিষয়ে মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মানিক পাটওয়ারী তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে বলেন, আমি হতবাক, আমার প্রিয় মৈশাদী গ্রামের তালতলা বাজারটি রেলওয়ের যৌথ উচ্ছেদ অভিযানের কবলে পড়ে বিধ্বস্ত। আমার জন্মের পর থেকে দেখে আসছি এই বাজারটি প্রতি বুধবার হাট বসতো। এই গ্রামের মানুষ গুলো শহরের সকল সুযোগ সুবিধা এ বাজার থেকে পেতো।প্রধানমন্ত্রীর গ্রাম হবে শহর তারই বহিঃপ্রকাশ ছিল এই বাজারটি। কি এতো জরুরী প্রয়োজন হলো ৫০ বছরের বাজারটিতে ২শ’ পরিবার কর্ম করে পরিবার পরিজন নিয়ে চলতেন। দায়িত্বশীল মহল কি এই ২শ’ পরিবারের মানবিক বিষয়টি একবারের জন্যও ভেবেছেন? আজ যে সকল পথচারী এই বাজারের উপর দিয়ে গেছেন তাদের সবার চোখের পানি পড়েছে। আর যে ২শ’ পরিবার ক্ষতিগ্রস্হ হলেন তাদের বোবা কান্না কি দায়িত্বশীল মহলের হৃদয়ে পৌছাবে?
তিনি আরো বলেন, সবচেয়ে বেদনাদায়ক বিষয় ছিল একটি ছাত্র চাঁদপুর জেলা প্রশাসক এর দরিদ্র ফান্ডের শিক্ষা বৃত্তি নিয়ে এমবিবিএস ডাক্তার হওয়ার শেষ পর্যায়ে আছেন। তাঁর বাবা ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে করোনার সময় মারা যান। এই বাজারে তার বাবার রেখে যাওয়া একটি দোকান ছিল, সে দোকানের আয় দিয়ে কোন মতে তার মা সংসারটি চালিয়ে যেতেন। ছেলেটি সকালে ভোরে ছুটি নিয়ে ঘটনাস্হলে তার বাবার রেখে যাওয়া কাগজ পত্র দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের দেখানো ও বলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কে শুনে কার কথা। এই পরিবারটি কি করবে, কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? ছেলেটি ডাক্তারি পড়বে নাকি তার মা’র দেখা শুনা করবে?
এসময় চাঁদপুর লাকসাম রেলরুটের কানুনগো কাউছার আহমেদ, চাঁদপুর রেলওয়ে থানার ওসি মুরাদুল্লা বাহার, মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পাটওয়ারীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।