ঢাকা ০১:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবশেষে সিজারিয়ান অপারেশন চালু হলো

মনিরুল ইসলাম মনির : মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিনের পর অবশেষে প্রথম সিজারিয়ান অপারেশন চালু হয়েছে। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে প্রথম মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। সিজারিয়ান অপারেশন চালু হওয়ায় মতলব উত্তর উপজেলা বাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

Model Hospital

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল চালু করা হয়। পরবর্তীতে ৫০ শয্যায় উন্নীতের ঘোষনা দেয়া হলেও জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি এখনো। অবকাঠামোগত সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থাকার পর অ্যানেস্থেসিয়া ও গাইনি চিকিৎসকের অভাবে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ ছিল। তবে নরমাল (স্বাভাবিক) প্রসব চালু ছিল।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন ডা. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তিনি যোগদানের পর থেকে চিকিৎসা সেবার মান ব্যাপক হারে উন্নত করেছেন। এমনকি মতলব উত্তর উপজেলাবাসী গরিবের ডাক্তার হিসেবেই খ্যাতি অর্জন করেন ডা. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তিনি দ্বায়িত্ব নেবার পর থেকেই সকাল থেকে বিকাল অবদি রোগীদের উপচে পড়া ভীড় লেগেই থাকে। সাথে বিনা মূল্যের ঔষধ বিতরন চলমান রয়েছে।

জানা গেছে, চাঁদপুর জেলা শহর থেকে উত্তরে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবিস্থত মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে উপজেলা বাসীকে দীর্ঘদিন। সরকারি সেবার জন্য এ সময়ে উপজেলাবাসীকে মতলব উত্তর থেকে জেলা সদর হাসপাতালে অথবা প্রয়োজন অনুযায়ী পার্শ্ববর্তী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ জেলায় যেতে হতো। বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন করতে হতো।

উপজেলায় প্রথম সিজারিয়ান লিপি আক্তার জানান, নরমালে প্রসব করানোর জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। নরমালে না হওয়ায় ডাক্তার সিজারের পরামর্শ দেন। সিজার করে প্রথম ছেলে সন্তানের জম্ম হয়। সম্পূর্ণ বিনা খরচে। আল্লাহর রহমতে আমি ও বাচ্চা দু’জনেই ভালো আছি।

অপরদিকে একইদিন ছোট দূর্গাপুর গ্রামের শাহজাদী আক্তার মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। তারাও সুস্থ্য আছেন।
অপারেশনটি সম্পন্ন করেন জুনিয়র কনসাল্ট্যান্ট (গাইনী) ডা. তাসলিমা আফরোজ, (এনেস্থেসিয়া) ডা. ইফতেখার, মেডিকেল অফিসার ডা. মমিনুল, নার্স এবং অন্যান্য মিডওয়াইফবৃন্দ।

উল্লেখ্য যে, ডা. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান গরিবের ডাক্তার হিসেবে এই উপজেলায় তাঁর পরিচিতি। তাঁর নেতৃত্বে এ উপজেলার স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে সাধারন মানুষের পাশে দাড়িঁয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে গেছেন।

মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, আমাদের মতলব উত্তর ও দক্ষিণের সংসদ সদস্য এ্যাড. নুরুল আমিন রুহুল, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন’সহ উপজেলা প্রশাসন, ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাফদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি। একটি হচ্ছে এলাকাবাসীর বহুদিনের আশা মতলব উত্তর উপজেলা হাসপাতালে সিজার অপারেশন শুরু করা এবং অন্যটি হচ্ছে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবের কার্যক্রম শুরু করা। মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আজ একই দিনে দু’’টির কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছি।

ট্যাগস :

চাঁদপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আলোচনা সভা

মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবশেষে সিজারিয়ান অপারেশন চালু হলো

আপডেট সময় : ০৪:৩৬:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

মনিরুল ইসলাম মনির : মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিনের পর অবশেষে প্রথম সিজারিয়ান অপারেশন চালু হয়েছে। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে প্রথম মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। সিজারিয়ান অপারেশন চালু হওয়ায় মতলব উত্তর উপজেলা বাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

Model Hospital

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল চালু করা হয়। পরবর্তীতে ৫০ শয্যায় উন্নীতের ঘোষনা দেয়া হলেও জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি এখনো। অবকাঠামোগত সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থাকার পর অ্যানেস্থেসিয়া ও গাইনি চিকিৎসকের অভাবে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ ছিল। তবে নরমাল (স্বাভাবিক) প্রসব চালু ছিল।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন ডা. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তিনি যোগদানের পর থেকে চিকিৎসা সেবার মান ব্যাপক হারে উন্নত করেছেন। এমনকি মতলব উত্তর উপজেলাবাসী গরিবের ডাক্তার হিসেবেই খ্যাতি অর্জন করেন ডা. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তিনি দ্বায়িত্ব নেবার পর থেকেই সকাল থেকে বিকাল অবদি রোগীদের উপচে পড়া ভীড় লেগেই থাকে। সাথে বিনা মূল্যের ঔষধ বিতরন চলমান রয়েছে।

জানা গেছে, চাঁদপুর জেলা শহর থেকে উত্তরে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবিস্থত মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে উপজেলা বাসীকে দীর্ঘদিন। সরকারি সেবার জন্য এ সময়ে উপজেলাবাসীকে মতলব উত্তর থেকে জেলা সদর হাসপাতালে অথবা প্রয়োজন অনুযায়ী পার্শ্ববর্তী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ জেলায় যেতে হতো। বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন করতে হতো।

উপজেলায় প্রথম সিজারিয়ান লিপি আক্তার জানান, নরমালে প্রসব করানোর জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। নরমালে না হওয়ায় ডাক্তার সিজারের পরামর্শ দেন। সিজার করে প্রথম ছেলে সন্তানের জম্ম হয়। সম্পূর্ণ বিনা খরচে। আল্লাহর রহমতে আমি ও বাচ্চা দু’জনেই ভালো আছি।

অপরদিকে একইদিন ছোট দূর্গাপুর গ্রামের শাহজাদী আক্তার মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। তারাও সুস্থ্য আছেন।
অপারেশনটি সম্পন্ন করেন জুনিয়র কনসাল্ট্যান্ট (গাইনী) ডা. তাসলিমা আফরোজ, (এনেস্থেসিয়া) ডা. ইফতেখার, মেডিকেল অফিসার ডা. মমিনুল, নার্স এবং অন্যান্য মিডওয়াইফবৃন্দ।

উল্লেখ্য যে, ডা. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান গরিবের ডাক্তার হিসেবে এই উপজেলায় তাঁর পরিচিতি। তাঁর নেতৃত্বে এ উপজেলার স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে সাধারন মানুষের পাশে দাড়িঁয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে গেছেন।

মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, আমাদের মতলব উত্তর ও দক্ষিণের সংসদ সদস্য এ্যাড. নুরুল আমিন রুহুল, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন’সহ উপজেলা প্রশাসন, ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাফদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি। একটি হচ্ছে এলাকাবাসীর বহুদিনের আশা মতলব উত্তর উপজেলা হাসপাতালে সিজার অপারেশন শুরু করা এবং অন্যটি হচ্ছে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবের কার্যক্রম শুরু করা। মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আজ একই দিনে দু’’টির কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছি।