ঢাকা ০৭:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাগানবাড়ি ইউপির সাবেক মেম্বার কামাল মল্লিকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

মতলব উত্তর ব্যুরো : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বাগানবাড়ী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড, মান্দারতলী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য কামাল মল্লিকের অপকর্ম ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। মানুষকে মারধর, অত্যাচার, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, উন্নয়ন কাজে বাঁধা প্রদান ও অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখানোসহ নানান অপকর্মের অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে।

Model Hospital

ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, কামাল মল্লিক আগে উশৃংখল। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা হয়েছিল। সে মেম্বার থাকা অবস্থায় মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে একটা মাইক্রো, একটি প্রাইভেটকার কিনেছে। এমনকি ডুপ্লেক্স বাড়িও করেছে অবৈধ টাকা দিয়ে। গ্রামের ছোট খাটো ঘটনায় মানুষকে অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে।

এলাকার সাধারণ মানুষ জানান, গত ১০ বছর মেম্বার থাকা অবস্থায় কামাল মল্লিক ২০ টিরও বেশি পরিবারের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে। মান্দারতলী গ্রামের মৃত হান্নান সরকার, নুরু মিয়া প্রধান, ডাঃ আবুল খায়ের, লিটন বেপারী, সুলতান মাঝি, পন্ডিত, সুলতান খান, আলমগীর খান, মনির বেপারী, জাহেদ, শরীফ, কাউছার, রাসেল বেপারী, দুলাল বেপারী, সোবহান বেপারী, শাহজালাল প্রধান, মৃত জাহাঙ্গীর প্রধান, নাসির প্রধান, হারুন, কুদ্দুস বেপারী সহ আরো বহু মানুষকে মারধর করেছে। এক ছেলের হাতের রগ কেটে দিয়েছে। হান্নান নামে এক সরকারি চাকুরীজীবিকে অথযাই মেরে হাত পা ভেঙে দিয়েছে। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও উৎকোচ খেয়ে এলাকায় শালিশ করা সহ তার বিরুদ্ধে নানান অপরাধের অভিযোক করে গ্রামবাসী। শুধু তাই যাকে পছন্দ না হবে তাকেই অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখায় কামাল মল্লিক। তার এই অত্যাচার থেকে বাঁচতে ২৬ আগস্ট এলাকার সহস্রাধিক নারী পুরুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।

বাগানবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বলেন, কামালের বাবা বিএনপির একজন প্রবীণ নেতা। কামালও বিএনপি করে। গত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগে নাম মাত্র যোগাযোগ করে এলাকায় ত্রাস করে বেড়াচ্ছে। সে আসলে আওয়ামী লীগের কেউ না। গত ২০০১ সালে বিএনপির অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হিসেবে অস্ত্র মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি মৌটুপী থেকে মান্দারতলী পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা সংস্কার কাজে বাঁধা প্রদান করেছে কামাল। চারু বেপারীর ছেলে কুদ্দুস বলেন, আমি এই কাজটি করার চেয়ারম্যান এবং মেম্বার আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি কাজ করার সময় কামাল মল্লিক এসে অনেক গালমন্দ করেন ও কাজ বন্ধ করে দিতে বলেন। না হলে আমাকে দেখে নিবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়। এর পরদিন রাতেই অস্ত্র নিয়ে কামালের নেতৃত্ব পিন্টু বেপারী, মিজান বেপারী ও আফজাল মল্লিক সহ আরো কয়েকজন আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে হামলা করে। আমার মাথায় রড় দিয়ে আঘাত করে। আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। প্রশাসনের কাছে এই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কামালের বিচার চাই।

মান্দারতলী গ্রামের গন্যমান্য ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা বলেন, কামালের আগে আরো অনেকেই মেম্বার ছিল। কিন্তু তার মত এত খারাপ প্রকৃতির লোক আমরা কখনো দেখি নাই। যাকে তাকে মারধর করে। মানুষকে অত্যাচার নির্যাতন করে। আমরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। তার সাথে অবৈধ অস্ত্র থাকে, যেকোনো সময় যে কারো উপর আক্রমণ করতে পারে। গত ২০০১ সালে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা হয়েছিল। চলতি বছরের ১৮ জুলাই তার বিরুদ্ধে থানা আরেকটি মামলা হয়েছিল। আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত এর বিচার চাই এবং কামাল মল্লিককে আইনের আওতায় আনার প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।

এ ব্যাপারে কামাল মল্লিক বলেন, এলাকার একটি মহল ২০০১ সাল থেকে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এখন আবার একটি রাস্তার কাজ কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতেছে তারা। ভেক্যু মেশিন দিয়ে আমার ও আমার শ্বশুরের অনেক গাছপালা এবং জমি নস্ট করেছে। তাতে বাঁধা দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে তারা উঠে পড়ে লেগেছে। আমি একজন আওয়ামী লীগের কর্মী। আমার কাছে কোন অস্ত্র নেই। তারা আমাকে মিথ্যা অস্ত্র মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল।

ট্যাগস :

বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলে, জীবন ও জীবিকার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে : ডিসি মোহসীন উদ্দিন

বাগানবাড়ি ইউপির সাবেক মেম্বার কামাল মল্লিকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

আপডেট সময় : ১২:৫৪:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২২

মতলব উত্তর ব্যুরো : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বাগানবাড়ী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড, মান্দারতলী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য কামাল মল্লিকের অপকর্ম ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। মানুষকে মারধর, অত্যাচার, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, উন্নয়ন কাজে বাঁধা প্রদান ও অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখানোসহ নানান অপকর্মের অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে।

Model Hospital

ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, কামাল মল্লিক আগে উশৃংখল। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা হয়েছিল। সে মেম্বার থাকা অবস্থায় মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে একটা মাইক্রো, একটি প্রাইভেটকার কিনেছে। এমনকি ডুপ্লেক্স বাড়িও করেছে অবৈধ টাকা দিয়ে। গ্রামের ছোট খাটো ঘটনায় মানুষকে অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে।

এলাকার সাধারণ মানুষ জানান, গত ১০ বছর মেম্বার থাকা অবস্থায় কামাল মল্লিক ২০ টিরও বেশি পরিবারের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে। মান্দারতলী গ্রামের মৃত হান্নান সরকার, নুরু মিয়া প্রধান, ডাঃ আবুল খায়ের, লিটন বেপারী, সুলতান মাঝি, পন্ডিত, সুলতান খান, আলমগীর খান, মনির বেপারী, জাহেদ, শরীফ, কাউছার, রাসেল বেপারী, দুলাল বেপারী, সোবহান বেপারী, শাহজালাল প্রধান, মৃত জাহাঙ্গীর প্রধান, নাসির প্রধান, হারুন, কুদ্দুস বেপারী সহ আরো বহু মানুষকে মারধর করেছে। এক ছেলের হাতের রগ কেটে দিয়েছে। হান্নান নামে এক সরকারি চাকুরীজীবিকে অথযাই মেরে হাত পা ভেঙে দিয়েছে। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও উৎকোচ খেয়ে এলাকায় শালিশ করা সহ তার বিরুদ্ধে নানান অপরাধের অভিযোক করে গ্রামবাসী। শুধু তাই যাকে পছন্দ না হবে তাকেই অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখায় কামাল মল্লিক। তার এই অত্যাচার থেকে বাঁচতে ২৬ আগস্ট এলাকার সহস্রাধিক নারী পুরুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।

বাগানবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বলেন, কামালের বাবা বিএনপির একজন প্রবীণ নেতা। কামালও বিএনপি করে। গত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগে নাম মাত্র যোগাযোগ করে এলাকায় ত্রাস করে বেড়াচ্ছে। সে আসলে আওয়ামী লীগের কেউ না। গত ২০০১ সালে বিএনপির অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হিসেবে অস্ত্র মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি মৌটুপী থেকে মান্দারতলী পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা সংস্কার কাজে বাঁধা প্রদান করেছে কামাল। চারু বেপারীর ছেলে কুদ্দুস বলেন, আমি এই কাজটি করার চেয়ারম্যান এবং মেম্বার আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি কাজ করার সময় কামাল মল্লিক এসে অনেক গালমন্দ করেন ও কাজ বন্ধ করে দিতে বলেন। না হলে আমাকে দেখে নিবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়। এর পরদিন রাতেই অস্ত্র নিয়ে কামালের নেতৃত্ব পিন্টু বেপারী, মিজান বেপারী ও আফজাল মল্লিক সহ আরো কয়েকজন আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে হামলা করে। আমার মাথায় রড় দিয়ে আঘাত করে। আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। প্রশাসনের কাছে এই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কামালের বিচার চাই।

মান্দারতলী গ্রামের গন্যমান্য ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা বলেন, কামালের আগে আরো অনেকেই মেম্বার ছিল। কিন্তু তার মত এত খারাপ প্রকৃতির লোক আমরা কখনো দেখি নাই। যাকে তাকে মারধর করে। মানুষকে অত্যাচার নির্যাতন করে। আমরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। তার সাথে অবৈধ অস্ত্র থাকে, যেকোনো সময় যে কারো উপর আক্রমণ করতে পারে। গত ২০০১ সালে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা হয়েছিল। চলতি বছরের ১৮ জুলাই তার বিরুদ্ধে থানা আরেকটি মামলা হয়েছিল। আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত এর বিচার চাই এবং কামাল মল্লিককে আইনের আওতায় আনার প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।

এ ব্যাপারে কামাল মল্লিক বলেন, এলাকার একটি মহল ২০০১ সাল থেকে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এখন আবার একটি রাস্তার কাজ কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতেছে তারা। ভেক্যু মেশিন দিয়ে আমার ও আমার শ্বশুরের অনেক গাছপালা এবং জমি নস্ট করেছে। তাতে বাঁধা দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে তারা উঠে পড়ে লেগেছে। আমি একজন আওয়ামী লীগের কর্মী। আমার কাছে কোন অস্ত্র নেই। তারা আমাকে মিথ্যা অস্ত্র মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল।