নিজস্ব প্রতিনিধি : চাঁদপুর মতলব উত্তর উপজেলায় মোবাইলে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে সালিশি বৈঠকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করলে দিতে না পারায় অপহরণ ও ধর্ষণের মিথ্যা মামলা দিয়ে রিক্সা চালকের পরিবারকে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া মিথ্যা মামলায় কারিমন বেগম (২৫) নামে এক অসহায় মহিলাকে আসামি দিয়ে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করে। নিরপরাধ হয়েও দুই মাস আট দিন জেল হাজতে থেকে অবশেষে জামিনে মুক্তি পেয়েছে।
মতলব উত্তর উপজেলার ১০ নং পূর্ব ফতেপুর ইউনিয়ন ৯ নং ওয়ার্ড ঠেটালিয়া গ্রামে মেম্বার প্রার্থী আব্দুল মান্নানের রোষানলে পড়ে মিথ্যা মামলায় আসামি হয়ে দুটি পরিবার নিঃস্ব হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন,মতলব দক্ষিণ বাইশপুর গ্রামের আকতার হোসেনের মেয়ে বিথী আক্তার তার নানার বাড়ি মতলব উত্তর উপজেলার ১০ নং পূর্ব ফতেপুর ইউনিয়নে ঠেটালিয়া গ্রামে মৃত ছেলামত খানের বাড়িতে প্রায় সময় বেড়াতে আসত।
এ সময় বিথী আক্তারের নানার পাশের বাড়ির রিক্সা চালক শাহ আলম প্রধানীয়ার ছেলে শরীফ হোসেনের সাথে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিথী আক্তার ছেলেকে ফোন করে দেখা করলে এই ঘটনাটি মেয়ের বাবা জানতে পেরে ১০ নং পূর্ব ফতেপুর ইউনিয়ন ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল মান্নানকে জানায়। কিন্তু ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল মান্নান ছেলের পক্ষকে ও প্রেমের সহযোগিতা করেছে এই অপবাদ দিয়ে ওই এলাকার ভাড়াটিয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ট্রাক্টর চালক মোহাম্মদ কিসমত আলীর স্ত্রী কারিমন বেগমকে সালিশি বৈঠকে ডেকে এনে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল মান্নান ছেংগারচর থানা পুলিশকে ভুল বুঝিয়ে ঘটনার ৪ দিন পর অপহরণ ও ধর্ষণের একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নাম্বার, ৬, তারিখ-৭/৯/২০২১। সেই ঘটনায় ট্রাক্টর চালকের স্ত্রী কারিমন বেগমকে আটকে রেখে পুলিশের কাছে সোপর্দ করলে অবশেষে তাকে আদালতে মিথ্যা মামলায় দুই নাম্বার আসামি করে চালান দেয়। সেই মামলায় দুই মাস আট দিন পর জামিনে মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার পর পুনরায় তাদের কাছ থেকে মেয়ের পরিবার ও মেম্বার আব্দুল মান্নান তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।
এই মিথ্যা মামলায় শরীফ হোসেন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে প্রেরণ করে। দীর্ঘদিন যাবত সে নিরপরাধ হয়ে জেলা কারাগারে রয়েছে। ছেলের জামিন ও সালিশি বৈঠকে জরিমানা টাকা জোগাতে শেষ আশ্রয়স্থল বসতঘর বিক্রি করে দিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, মেয়ের বাবা আকতার হোসেন ও মা নয়নমণি এর পূর্বে তার মেয়েকে দিয়ে এক ছেলেকে ফাঁসিয়ে এক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের মেয়ে নানীর বাড়িতে বেড়াতে এসে ইতিপূর্বে অনেক ছেলের সাথে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। মোবাইলে প্রেমের সম্পর্কের জের নিয়ে ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল মান্নান নিজে আর্থিকভাবে সুবিধা নিতে না পারায় পুলিশের মাধ্যমে ভুয়া মামলা সাজিয়ে তাদেরকে হয়রানি করছে।এই ঘটনায় মিথ্যা মামলাটি পিবিআই কাছে হস্তান্তর করে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করলে এর সততা বেরিয়ে আসবে। এই দুটি পরিবার মেয়ের বাবা ও মেম্বারের চাঁদাবাজির হাত থেকে মুক্তি পাবে।