ঢাকা ১১:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মতলব উত্তরে ১০ বছরের সংসার রেখে সর্বস্ব; নিয়ে প্রবাসী নওমুসলিমের স্ত্রী উধাও

মনিরুল ইসলাম মনির : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা গ্রামের এক প্রবাসী নওমুসলিমের স্ত্রী ১০ বছরের চলমান সংসার রেখে টাকা, স্বর্ণালংকার ও সকল জিনিসপত্র নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। গত ২০ জুলাই থেকে তার সন্ধান করেও কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। তার স্বামী সৌদি প্রবাসী আব্দুর রহমান সকল আত্মীয় স্বজনের বাড়ি খোঁজ করেও পাননি। তবে ওই গ্রামের সোহেল সরকার নামে এক ব্যক্তির যোগসাজসে এ অঘটন ঘটেছে বলে আব্দুর রহমানের ধারণা।

Model Hospital

ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে আব্দুর রহমান জানান, তার বাড়ি মতলব দক্ষিণ উপজেলার নাগদা গ্রামে, তিনি হিন্দু ছিলেন। তিনি ২০০৩ সালে সৌদি আরব যান। সৌদিতে গিয়ে ২০০৪ সালে তিনি মুসলমান ধর্ম গ্রহন করেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা গ্রামের জয়নাল আবেদীন মল্লিকের মেয়ে শান্তা আক্তারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সেই থেকে তাদের দাম্পত্য জীবনে মো. আব্দুল্লাহ নামে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ইতোমধ্যে সে পবিত্র কোরআনে হাফেজ হয়েছে। বিয়ের পর থেকে তার শ্বশুর শ্বাশুরি ও পরিবারের সকল খরচ আব্দুর রহমান বহন করতেন।

মুসলমান হয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি পূর্বের পরিবারে কোন টাকা পয়সা দেননি। বিদেশে থেকে যত টাকা পয়সা রোজগার করেছেন সব টাকা তার স্ত্রী শাস্তার একাউন্টেই পাঠাতেন। সর্বশেষ গত ২৪ মে আব্দুর রহমান সৌদি থেকে একেবারে চলে দেশে চলে আসেন। দেশে ফেরার পর তাদের সংসার বেশ ভালোই চলছিল। গত ১৯ জুলাই আব্দুর রহমান চিকিৎসা নিতে ঢাকা যান, পরদিন ২০ জুলাই বাড়িতে এসে দেখেন তাদের ঘর তালা। স্ত্রী, সন্তান ও শ্বশুড় শ্বাশুড়ি কেউই নেই। ঘর তালাবন্ধ করে সব উধাও হয়ে গেছে। সব জায়গায় খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি।

আব্দুর রহমান বলেন, আমি বিদেশ থেকে যত টাকা রোজগার করেছি বিশ্বাস করে সব টাকা শাস্তার কাছেই পাঠিয়েছি। কারণ আমি হিন্দু থেকে মুসলমান হওয়ার কারণে আমার স্ত্রী সন্তানই আমার সবচেয়ে মূল্যবান। সর্বশেষ তার একাউন্ডে ৮ লাখ টাকা ছিল। আর স্বণাংলকার যা যা ছিল সবকিছু নিয়ে চলে গেছে। পরে তাদের নিকটাত্মীয় সোহেল সরকারের কাছে গিয়ে জানতে পারি সে ১৩ জুলাই আমাকে তালাক দিয়েছে। কিন্তু কেন তালাক দিয়েছে তা জানতে পারি নাই। তাছাড়া ১৯ তারিখ পর্যন্ত আমরা একই সংসারে ছিলাম।

সোহেল সরকারের কাছে আমি এক লাখ টাকা পাই। ওই টাকা চাইতে গেলে তিনি আমাকে অনেক মারধর করেছেন। এই সোহেল সরকারের কথা মত আমার শ্বাশুরি চলে। সে বিভিন্ন পায়তারা করে আমার সংসারটা ধ্বংস করে দিল।

কলাকান্দা গ্রামের আবুল বাশার দেওয়ান, রিপন, আলমগীর হোসেন, মনির ও শাহজালাল সহ অনেক নারী পুরুষ বলেন, আব্দুর রহমান অনেক ভাল লোক। তিনি হিন্দু থেকে মুসলমান হয়েছেন। তার যত টাকা পয়সা আছে শাস্তার পরিবারের কাছে পাঠাতো। তাদের পরিবারের যত খরচ সব আব্দুর রহমান বহন করতো। কিন্তু তার উপর এমন অবিচার করে সবকিছু নিয়ে পালিয়ে গেছে তারা। পাশের বাড়ির সোহেল সরকার কুপরামর্শ দিয়ে তাদের সংসারটা নস্ট করে দিয়েছে।

শাস্তার ভাই মোঃ আসলাম বলেন, আমাকে অনেক আগেই আমার পিতা মাতা সংসার থেকে আলাদা করে দিয়েছে। আমার সংসার নিয়ে আমি আলাদা থাকি। তবে আমার জানামতে আমার দুলাভাই আব্দুর রহমান তাদের কাছে সব টাকা পাঠিয়ে এবং তাদের পরিবারের সব খরচ বহন করতো। আমার ধারণা সোহেল সরকারের বুদ্ধিতে সংসারটা নস্ট করে পালিয়ে গেছে।

এদিকে সোহেল সরকারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এসব ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। সোহেল আমার কাছে টাকা চাইতে আসলে তাকে বলেছি তোর বউয়ের কাছে টাকা দিয়ে দিছি। তারপর সে বিশ্বাস না করায় তাকে একটা থাপ্পর দিয়েছি।

ট্যাগস :

নার্সিং পেশা ও নার্স কর্মকর্তাদের নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে মতলব উত্তরে মানববন্ধন

মতলব উত্তরে ১০ বছরের সংসার রেখে সর্বস্ব; নিয়ে প্রবাসী নওমুসলিমের স্ত্রী উধাও

আপডেট সময় : ০৬:২৮:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২

মনিরুল ইসলাম মনির : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা গ্রামের এক প্রবাসী নওমুসলিমের স্ত্রী ১০ বছরের চলমান সংসার রেখে টাকা, স্বর্ণালংকার ও সকল জিনিসপত্র নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। গত ২০ জুলাই থেকে তার সন্ধান করেও কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। তার স্বামী সৌদি প্রবাসী আব্দুর রহমান সকল আত্মীয় স্বজনের বাড়ি খোঁজ করেও পাননি। তবে ওই গ্রামের সোহেল সরকার নামে এক ব্যক্তির যোগসাজসে এ অঘটন ঘটেছে বলে আব্দুর রহমানের ধারণা।

Model Hospital

ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে আব্দুর রহমান জানান, তার বাড়ি মতলব দক্ষিণ উপজেলার নাগদা গ্রামে, তিনি হিন্দু ছিলেন। তিনি ২০০৩ সালে সৌদি আরব যান। সৌদিতে গিয়ে ২০০৪ সালে তিনি মুসলমান ধর্ম গ্রহন করেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা গ্রামের জয়নাল আবেদীন মল্লিকের মেয়ে শান্তা আক্তারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সেই থেকে তাদের দাম্পত্য জীবনে মো. আব্দুল্লাহ নামে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ইতোমধ্যে সে পবিত্র কোরআনে হাফেজ হয়েছে। বিয়ের পর থেকে তার শ্বশুর শ্বাশুরি ও পরিবারের সকল খরচ আব্দুর রহমান বহন করতেন।

মুসলমান হয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি পূর্বের পরিবারে কোন টাকা পয়সা দেননি। বিদেশে থেকে যত টাকা পয়সা রোজগার করেছেন সব টাকা তার স্ত্রী শাস্তার একাউন্টেই পাঠাতেন। সর্বশেষ গত ২৪ মে আব্দুর রহমান সৌদি থেকে একেবারে চলে দেশে চলে আসেন। দেশে ফেরার পর তাদের সংসার বেশ ভালোই চলছিল। গত ১৯ জুলাই আব্দুর রহমান চিকিৎসা নিতে ঢাকা যান, পরদিন ২০ জুলাই বাড়িতে এসে দেখেন তাদের ঘর তালা। স্ত্রী, সন্তান ও শ্বশুড় শ্বাশুড়ি কেউই নেই। ঘর তালাবন্ধ করে সব উধাও হয়ে গেছে। সব জায়গায় খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি।

আব্দুর রহমান বলেন, আমি বিদেশ থেকে যত টাকা রোজগার করেছি বিশ্বাস করে সব টাকা শাস্তার কাছেই পাঠিয়েছি। কারণ আমি হিন্দু থেকে মুসলমান হওয়ার কারণে আমার স্ত্রী সন্তানই আমার সবচেয়ে মূল্যবান। সর্বশেষ তার একাউন্ডে ৮ লাখ টাকা ছিল। আর স্বণাংলকার যা যা ছিল সবকিছু নিয়ে চলে গেছে। পরে তাদের নিকটাত্মীয় সোহেল সরকারের কাছে গিয়ে জানতে পারি সে ১৩ জুলাই আমাকে তালাক দিয়েছে। কিন্তু কেন তালাক দিয়েছে তা জানতে পারি নাই। তাছাড়া ১৯ তারিখ পর্যন্ত আমরা একই সংসারে ছিলাম।

সোহেল সরকারের কাছে আমি এক লাখ টাকা পাই। ওই টাকা চাইতে গেলে তিনি আমাকে অনেক মারধর করেছেন। এই সোহেল সরকারের কথা মত আমার শ্বাশুরি চলে। সে বিভিন্ন পায়তারা করে আমার সংসারটা ধ্বংস করে দিল।

কলাকান্দা গ্রামের আবুল বাশার দেওয়ান, রিপন, আলমগীর হোসেন, মনির ও শাহজালাল সহ অনেক নারী পুরুষ বলেন, আব্দুর রহমান অনেক ভাল লোক। তিনি হিন্দু থেকে মুসলমান হয়েছেন। তার যত টাকা পয়সা আছে শাস্তার পরিবারের কাছে পাঠাতো। তাদের পরিবারের যত খরচ সব আব্দুর রহমান বহন করতো। কিন্তু তার উপর এমন অবিচার করে সবকিছু নিয়ে পালিয়ে গেছে তারা। পাশের বাড়ির সোহেল সরকার কুপরামর্শ দিয়ে তাদের সংসারটা নস্ট করে দিয়েছে।

শাস্তার ভাই মোঃ আসলাম বলেন, আমাকে অনেক আগেই আমার পিতা মাতা সংসার থেকে আলাদা করে দিয়েছে। আমার সংসার নিয়ে আমি আলাদা থাকি। তবে আমার জানামতে আমার দুলাভাই আব্দুর রহমান তাদের কাছে সব টাকা পাঠিয়ে এবং তাদের পরিবারের সব খরচ বহন করতো। আমার ধারণা সোহেল সরকারের বুদ্ধিতে সংসারটা নস্ট করে পালিয়ে গেছে।

এদিকে সোহেল সরকারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এসব ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। সোহেল আমার কাছে টাকা চাইতে আসলে তাকে বলেছি তোর বউয়ের কাছে টাকা দিয়ে দিছি। তারপর সে বিশ্বাস না করায় তাকে একটা থাপ্পর দিয়েছি।